শক্তিমত্তায় বাংলাদেশের তুলনায় অস্ট্রেলিয়ার পার্থক্য প্রায় আকাশ আর পাতাল৷ জয় ছাপিয়ে লড়াই তাই মূল লক্ষ্য ছিল। তবে সেটাও বা হলো কই। ব্যাটিংয়ে অধিনায়ক নিগার সুলতানা জ্যোতি আর বোলিংয়ে মারুফা আক্তার ছাড়া বাকিরা ঢাহা ফেইল।
মঙ্গলবার (১৪ ফেব্রুয়ারি) অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে জ্যোতির ফিফটিতে ১০৭ রানের পুঁজি পেয়েছিল টাইগ্রেসরা। মারুফার বোলিংয়ে শুরু ভালো হলেও বাকিদের ব্যর্থতায় ১০ বল বাকি থাকতেই হার নিশ্চিত হয় জ্যোতির দলের। এ ম্যাচে অজিদের বিপক্ষে বাংলাদেশ হেরেছে আট উইকেটের ব্যবধানে। চলতি নারীদের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে এটা বাংলাদেশের টানা দ্বিতীয় হার।
টস জিতে ব্যাটিং করতে নেমে শুরুতেই জোড়া উইকেট হারায় বাংলাদেশ। দ্বিতীয় ওভারে শামিমা সুলতানা ফেরার পর চতুর্থ ওভারে ফিরে যান মুর্শিদা। অজি বোলারদের তোপের মুখে পাওয়ার প্লেতে স্কোরবোর্ডে জমা হয় মাত্র ৩৪ রান।
শুরু থেকেই অস্বস্তিতে থাকা সোবহানা মোস্তারি বিদায় নেন দলীয় ৪২ রানে। অষ্টম ওভারে ফেরার আগে ১৭ বল খেলে করেন মাত্র সাত রান।
অন্যপ্রান্তে অবশ্য রানের চাকা সচল রাখার চেষ্টা করেছেন অধিনায়ক নিগার সুলতানা জ্যোতি। অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপে আগ্রাসী ব্যাটিং করা স্বর্ণা আক্তার শুরু থেকেই অজি বোলারদের সামলাতে হিমশিম খাচ্ছিলেন।
স্বর্ণা তো এতটাই বাজে অবস্থায় ছিলেন যে সিঙ্গেলও নিতে পারছিলেন না। এক পর্যায়ে তার রান ছিল ১৯ বলে চার। অন্যদিকে অধিনায়ক জ্যোতি যখনই স্ট্রাইক পেয়েছেন চেষ্টা করেছেন রানের গতি বাড়াতে।
৪১ বলে ফিফটি পূরণ করেন জ্যোতি। নারী টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে প্রথম বাংলাদেশি হিসেবে ফিফটি করলেন তিনি। অন্যপ্রান্তে এক চার মেরে খোলস ছেড়ে বের হওয়ার ইঙ্গিত দিলেও ২৭ বলে ১২ রানের অস্বস্তিকর ইনিংস খেলে বিদায় নেন স্বর্ণা।
অজিদের বিপক্ষে একাদশে ফেরা রুমানা আক্তার উইকেটে এসেই প্রথম বলে বাউন্ডারি হাঁকান। তবে মাত্র চার বল খেলেই ফিরে যান তিনি।
অন্য ব্যাটারদের ব্যর্থতার দিনে একপাশ আগলে রেখেছিলেন জ্যোতি। ১৯তম ওভারে আউট হওয়ার আগে তার ব্যাট থেকে আসে ৫০ বলে ৫৭ রানের ইনিংস। শেষ পর্যন্ত নির্ধারিত ২০ ওভার শেষে ১০৭ রানের সংগ্রহ পেয়েছে বাংলাদেশ।
লক্ষ্য ডিফেন্ড করতে নেমে বাংলাদেশকে এ ম্যাচেও দুর্দান্ত শুরু এনে দেন মারুফা আক্তার। প্রথম ওভারে চার রান দেওয়ার পর তৃতীয় ওভারে তুলে নেন বিথ মুনির উইকেট।
তবে এরপর আরেক ওপেনার এলিসা হিলি অন্য বোলারদের উপর তাণ্ডব শুরু করেন। মেগ ল্যানিংকে সাথে নিয়ে নাহিদার করা চতুর্থ ওভারেই তুলে নেন ১৭ রান।
সালমা খাতুনের পরের ওভারে আসে আরও ১০ রান। ল্যানিং আর হিলির আগ্রাসী ব্যাটিংয়ে পাওয়ার প্লেতে অজিদের স্কোরবোর্ডে জমা হয় ৪৫ রান।
মাঝের ওভারগুলোতে বাংলাদেশের নিয়ন্ত্রিত বোলিংয়ে রানের গতি কিছুটা কমে আসে। তবে স্বল্প লক্ষ্য তাড়া করায় অজিদের জয় পেতে সেটা কোনো প্রভাব ফেলেনি।
ইনিংসের ১৩তম ওভারে দ্বিতীয় উইকেট হারায় অস্ট্রেলিয়া। দলীয় ৭৮ রানে ফেরার সময় হিলির নামের পাশে যোগ হয়েছিল ৩৬ বলে চারটি চার ও এক ছক্কায় ৩৭ রানের ইনিংস।
তবে সঙ্গী হারালেও ১০ বল বাকি থাকতেই দলের জয় নিশ্চিত করেই মাঠ ছাড়েন অজি কাপ্তান মেগ ল্যানিং। শেষদিকে তাকে যোগ্য সঙ্গ দেন গার্ডনার। শেষ পর্যন্ত ৪৯ বলে চারটি চারে ৪৮ রানে অপরাজিত থাকেন ল্যানিং আর গার্ডনারের সংগ্রহ ২০ বলে দুই চারে ১৯ রান।