• ঢাকা
  • শুক্রবার, ২২ নভেম্বর, ২০২৪, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২০ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

বাংলাদেশ-ভারত ওয়ানডে সিরিজ ড্র


সংবাদ প্রকাশ ডেস্ক
প্রকাশিত: জুলাই ২২, ২০২৩, ০৬:১২ পিএম
বাংলাদেশ-ভারত ওয়ানডে সিরিজ ড্র
ছবি: বিসিবি

ক্ষণে ক্ষণে বদলেছে বাংলাদেশ-ভারতের তৃতীয় ওয়ানডের ভাগ্য। ম্যাচের ভাগ্য কখনও ভারতের দিকে ছিলো, কখনও বা বাংলাদেশের দিকে। পেন্ডুলামের মতো ঝুলতে থাকা ম্যাচের পরিণতি শেষ পর্যন্ত ড্র হয়েছে। সিরিজ নির্ধারনী ম্যাচে জয় না পাওয়াই দুই দলই ভাগ করে নিলো ওয়ানডে সিরিজের ট্রফি। বাংলাদেশের দেয়া ২২৬ রানের লক্ষ্য টপকাতে ব্যর্থ ভারতের ইনিংসও থামে বাংলাদেশের মতো ২২৫ রানে।

মিরপুরে টস জিতে ব্যাটিংয়ের সিদ্ধান্ত নেয় বাংলাদেশ দলের অধিনায়ক নিগার সুলতানা। তার সিদ্ধান্তের যাথাযথ প্রতিদান দেন বাংলার দুই ওপেনার। উদ্বোধনী জুটিতে এই দুই ব্যাটার তোলেন ৯৩ রান। তাদের এই জুটি ভাঙ্গেন স্পিনার স্নেহা রানা। ৫ চারে ৫২ রান করা শামীমা সুলতানাকে ফেরান এই স্পিনার।

তিন নম্বরে খেলতে আসেন অধিনায়ক নিগার সুলতানা জ্যোতি। ১ চারে ৩৬ বলে ২৪ রান করেন তিনি। অধিনায়ক স্নেহা রানার বলে ক্যাচ দেন আমানজাত কৌরের হাতে। এরপর দ্রুতই ফিরে গেছেন রিতু মনি। ৪ বলে ২ রান করেন তিনি।

বাংলাদেশের বাকি ইনিংস টানেন সোবহানা মোস্তারি ও ফারজানা। ফারজানা গড়েন ইতিহাসও। নারীদের ওয়ানডেতে দেশের প্রথম সেঞ্চুরিয়ান এখন তিনি। 

ওয়ানডেতে এতদিন বাংলাদেশের পক্ষে সর্বোচ্চ অপরাজিত ৭৫ রান ছিল সালমা খাতুনের। ২০১৩ সালে ভারতের মেয়েদের বিপক্ষেই এই রান করেছিলেন তিনি। ফারজানা সেটিকে ছাড়িয়ে ব্যক্তিগত সংগ্রহ নেন তিন অঙ্কে। ৭ চারে ১৫৬ বলে একশ রান করেন তিনি। হাঁকান সাতটি চার। 

ইনিংসের একদম শেষ বলে গিয়ে আউট হয়ে যান ফারজানা, সেটিও রান আউট। এর আগে ৭ চারে ১৬০ বলে ১০৭ রান করেন তিনি। ২ চারে ২২ বলে ২৩ রান আসে সোবহানা মোস্তারির ব্যাট থেকে। শেষ পর্যন্ত ৪ উইকেটে বাংলাদেশ করে ২২৫ রান। ভারতের পক্ষে ১০ ওভারে ৪৫ রান দিয়ে দুই উইকেট নেন স্নেহা রানা। 

২২৬ রানের টার্গেটে ব্যাট করতে নেমে দ্রুতই দুই উইকেট হারিয়ে ফেলে ভারত। ৩২ রানের ভিতর সেফালি র্বামা ও ইয়াশতিকা ভাটিয়ার উইকেট হারায় ভারত। ৪ রান করা শেফালি বার্মাকে ফেরান মারুফা আক্তার আর ৫ রান করা ইয়াশতিকার উইকেট শিকারি সুলতানা খাতুন।

ব্যাটিং বিপর্যয়ে পরা ভারতীয়দের ব্যাটিং মেরামতের দায়িত্ব কাঁধে তুলে নেন স্মৃতি মান্দানা ও হারলিন দেওল। টাইগ্রেস বোলারদের হতাশায় ডুবিয়ে দায়িত্ব ভালোভাবেই পার করে গড়ে ফেলে ১০০ রানের জুটি। এর মাঝে ভারতীয় এই দুই ব্যাটারও তুলে নেন অর্ধশতক।

বাংলার মেয়েদের মাথাব্যাথা হয়ে উঠা এই জুটি ভাঙ্গেন ফাহিমা খাতুন। ৫ চারে ৫৯ রান করে স্মৃতি মান্দানা আউট হলে ভাঙ্গে ১০৭ রানের জুটি। কিছুটা স্বস্তি ফিরে বাংলাদেশ শিবিরে।

এরপর ইয়াশতিকার সাথে জুটি বাঁধেন ভারতীয় অধিনায়ক হারমানপ্রিত কৌর। দলীয় ১৬০ রানের সময় ভারতীয় অধিনায়ক হারমান প্রিতকে ফেরান নাহিদা আক্তার। ১৪ রান করে আউট হয়ে ফিরলে ভাঙ্গে ২১ রানের জুটি। তবে আম্পায়ারের দেয়া এলবিডাব্লিইউর সেই সিদ্ধান্তে কিছুটা ক্ষুদ্ধ হতে দেখা যায় ভারতীয় অধিনায়ককে।

মাঝে বৃষ্টিতে খেলা বন্ধ থাকে কিছুক্ষণ। দেওলের সঙ্গে জেমাইমা রদ্রিগেজ সঙ্গী হয়ে ম্যাচ ধীরে ধীরে নিয়ে যাচ্ছিলেন ভারতের দিকে। কিন্তু দুই রান আউটে ঘুরে যায় ম্যাচের মোড়। ব্যাকওয়ার্ড পয়েন্ট অঞ্চল থেকে ফাহিম খাতুনের করা থ্রো দারুণভাবে ধরে স্টাম্প ভাঙেন জ্যোতি। ডাইভ দিয়েও পৌঁছাতে পারেননি ৯ চারে ১০৮ বলে ৭৭ রান করা দেওল। ভাঙ্গে তাদের ৪১ রানের জুটি।  

ওই ওভারেই কাভার থেকে সরাসরি থ্রোয়ে সোবহানা আউট করেন ১ রান করা দীপ্তি শর্মাকে। 

তবুও ভারতের সম্ভাবনা টিকে ছিল বেশ ভালোভাবেই। কিন্তু সেটি আরও কমিয়ে দেন নাহিদা আক্তার। স্নেহা রানা ও দেবিকা ভাইদেয়াকে একই ওভারে ফেরান তিনি। স্নেহার দুর্দান্ত এক ক্যাচও নেন তিনি।  

ম্যাচের এমন রঙ বদলের পর বাংলাদেশের দিকেই হেলে গিয়েছিল বেশি। কিন্তু শেষ ব্যাটার হিসেবে আসা মেঘনা সিং সুলতানা খাতুনের ওভারে বাউন্ডারি হাঁকিয়ে কাজটা সহজ করে দেন। পরে শেষ ওভার করতে আসেন মারুফা। তার প্রথম দুই বলে রান নিলে ম্যাচে চলে আসে সমতা।  

তৃতীয় বলে কাট করতে গেলে নিগার সুলতানা জ্যোতির হাতে বল যায়। বাংলাদেশের জোরালো আবেদনে সাড়া দেন আম্পায়ার তানভীর আহমেদ। টাই হয় ম্যাচ। কিন্তু নির্ধারিত সময় পেরিয়ে যাওয়ায় সুপার ওভার হয়নি।জেমিমা একপাশ আগলে রেখে অপরাজিত থাকেন ৩৩ রানে। বাংলাদেশের হয়ে ৩৭ রানে ৩ উইকেট নেন নাদিয়া সুলতানা।

ম্যাচসেরা হারিলিন দেওল ও সিরিজ সেরা হয়েছেন ফারাজানা হক।

Link copied!