সেমিফাইনালে যেতে হলে জয়ের বিকল্প ছিল না বাংলাদেশের। বাঁচা-মরার লড়াইয়ে শেষ হাসিটা বাংলাদেশই হাসল। গ্রুপ পর্বের শেষ ম্যাচে আফগানিস্তানকে ২১ রানে হারিয়ে সেমিফাইনালের টিকিট নিশ্চিত করেছেন সাইফরা। টাইগারদের দেওয়া ৩০৯ রান তাড়া করতে নেমে নির্ধারিত ওভার শেষে ৮ উইকেট হারিয়ে প্রতিপক্ষের ইনিংস থেমেছে ২৮৭ রানে।
বড় টার্গেটে ব্যাট করতে নেমে দলীয় ২৬ রানে ওপেনার জুবাইদ আকবরিকে হারায় আফগানরা। ১০ রান করা আকবরিকে ফেরান রাকিবুল হাসান। তবে, দ্বিতীয় উইকেটে ক্রিজে আধিপত্য বিস্তার করে আফগানরা। ওপেনার রিয়াজ হাসানের সঙ্গে ওয়ান ডাউনে নামা নুর আলি জাদরান ৯০ রানের জুটি গড়েন। ইনিংসের ২৬তম ওভারে নুর আলিকে ফিরিয়ে টাইগার শিবিরে স্বস্তি ফেরান পেসার তানজিম হাসান সাকিব। প্যাভিলিয়নের পথে হাঁটার আগে ৫৭ বলে ৫ চারের সুবাদে ৪৪ রান করেন তিনি।
সাজঘরে ফেরার আগে রিয়াজ তুলে নেন ফিফটি। ১০৫ বলে ৭ চার ও ২ ছক্কায় ৭৮ রান করেন তিনি। এরপর চতুর্থ উইকেটে শহিদুল্লাহ ও বাহির শাহ মিলে ভীতি ছড়িয়েছিল টাইগার শিবিরে।
অবশেষে ৪২তম ওভারে আক্রমণে এসে শহিদুল্লাহকে ফিরিয়ে লাল সবুজের প্রতিনিধিদের লড়াইয়ে ফেরান রাকিবুল। তার বলে বোল্ড হওয়ার আগে ৪৭ বলে ৩ চার ও ১ ছক্কায় ৪৪ রান করেন আফগান অধিনায়ক।
অপরাজিত ছিলেন বাহির শাহ। ৫০ বলে ৩ চারের মারে তার ব্যাট থেকে এসেছে ৫৩ রান। শেষ দিকে টাইগার বোলারদের বুদ্ধিদীপ্ত বোলিংয়ে আফগান ব্যাটাররা প্রয়োজনীয় রান তুলে নিতে ব্যর্থ হয়। ফলে হার নিয়ে মাঠ ছাড়তে হয় তাদের। টাইগার বোলারদের মধ্যে ৬৭ রান খরচায় সর্বোচ্চ ৩ উইকেট তুলে নেন সাকিব।
এর আগে মঙ্গলবার (১৮ জুলাই) কলম্বোয় টস জিতে আগে ব্যাট করার সিদ্ধান্ত নেয়া টাইগাররা। শুরু থেকেই অবশ্য ব্যাটিং বিপর্যয়ে পরে বাংলাদেশ। ছয় ওভার শেষ হবার আগেই তারা হারিয়ে ফেলে তিন উইকেট। দলীয় ২৫ রানে তানজিদ হাসানের উইকেট দিয়ে শুরু প্যাভিলিয়নে ফেরার পালা। মোহাম্মদ সেলিমের বলে মাত্র ৯ রান করেই বিদায় নেন তিনি। এখানেও ব্যর্থ ব্যাট হাতে মোহাম্মদ নাঈম। ব্যাক্তিগত ১৮ রানে যখন তিনি মোহাম্মদ সেলিমের দ্বিতীয় শিকার হন তখন স্কোর বোর্ডে রান মাত্র ৩০। তার একই ওভারের পঞ্চম বলে ৩৪ রানের মাথায় অধিনায়ক সাইফ হাসানও ৪ রান করে বিদায় নিলে বিপদে পড়ে বাংলাদেশ।
সেখান থেকে জাকির হাসানকে নিয়ে লড়াইটা শুরু করেন মাহমুদুল হাসান জয়। ডানহাতি-বাঁহাতির চতুর্থ উইকেট জুটিতে আসে ১১৭ রান। শুরুর ধাক্কা সামলে দল পেয়ে যায় বড় সংগ্রহের ভিত। ইজহারুলহক নাভিদের বলে জুবাইদ আকবরির হাতে ক্যাচ দিয়ে জাকির হাসান প্যাভিলিয়নে ফিরে গেলে ভেঙে যায় এই জুটি। ৭২ বলে ৬ চার ও ২ ছয়ে ৬২ রান করেন জাকির।
এরপর সৌম্য সরকারের সঙ্গে মিলে আরও ৭৯ রান যোগ করেন জয়। সৌম্য হাঁটছিলেন অর্ধশতক পূর্ণ করার দিকে। কিন্তু মোহাম্মদ ইব্রাহিমের বলে তিনি ফেরেন ৪২ বলে ৩ চার ও ৩ ছয়ে ৪৮ রান করে। এরপর জয়কে সঙ্গ দিতে ব্যর্থ উইকেটকিপার আকবর আলি। করেন ৪ রান।
মাটি কামড়ে একপাশে আগলে রাখা মাহমুদুল হাসান জয় শতক পূর্ণ করেন ম্যাচের ৪৬তম ওভারে। কিন্তু শতক পূর্ণ করেই আর উইকেটে থাকতে পারেন নি তিনি। ঠিক ১০০ রানেই থেমেছেন মোহাম্মদ সেলিমের চতুর্থ শিকার হিসেবে। ১১৪ বলে ১২ চার ও ২ ছয়ে তিনি সাজিয়েছেন দারুণ ইনিংসটি।
জয় যখন আউট হন দলের স্কোর তখন ২৬৭। শেষদিকে, ব্যাট হাতে ঝড় তোলেন মেহেদী হাসান। মাত্র ১৯ বলে ৬ চার ও ১ ছয়ে ৩৬ রান করে অপরাজিত থাকেন তিনি। সঙ্গী রাকিবুল হাসান ১২ বলে করেন ১৫ রান। শেষদিকে, ২২ বলে তাদের ৪১ রানের জুটির উপরভর করেই বাংলাদেশের স্কোর ৩০০ ছাড়াই।
আফগানিস্তানের পক্ষে মোহাম্মদ সেলিম নেন ৪ উইকেট।