চলতি বিশ্বকাপে নিজেদের শেষ ম্যাচ জয় দিয়ে রাঙাতে পারল না বাংলাদেশে। এই ম্যাচে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ৮ উইকেটের বড় ব্যবধানের হার নিয়ে দেশে ফিরতে হচ্ছে টাইগারদের। বিশ্বকাপ ইতিহাসে বাংলাদেশের সবচেয়ে বাজে আসর কেটেছে ২০২৩ বিশ্বকাপ। এই আসরে টাইগাররা ৯ ম্যাচের মধ্যে জয় পেয়েছে মাত্র দুইটিতে। যদিও বিশ্বমঞ্চে বাংলাদেশের জয় সর্বোচ্চ তিন ম্যাচে। তবে আগের আসরগুলোতে লড়াই করে হেরেছে টাইগাররা। কিন্তু এবারের আসরে বাংলাদেশ ন্যূনতম লড়াই করতে পারেনি বাকি দলগুলোর বিপক্ষে।
পুনেতে আগে ব্যাট করতে নেমে নির্ধারিত ওভার শেষে ৮ উইকেট হারিয়ে ৩০৬ রানের সংগ্রহ পায় নাজমুল হোসেন শান্তর দল। জবাবে অস্ট্রেয়ার দাপুটে ব্যাটিংয়ে ৪৪ ওভার ৪ বলে ২ উইকেট হারিয়ে ৩০৭ রানের লক্ষ্যে পৌঁছে যায় তারা। এই জয়ে রাউন্ড রবিন লিগে তিনে থেকে সেমিফাইনাল নিশ্চিত করে অস্ট্রেলিয়া।
শনিবার (১১ নভেম্বর) দিনের প্রথম ম্যাচে টস হেরে ব্যাট করতে নেমে ভালো শুরু পায় বাংলাদেশ। উদ্বোধনী জুটিতে লিটন দাস ও তানজিদ হাসান তামিম ৬৯ বলে ৭৬ রানের জুটি গড়েন। দুই ওপেনার ভালো শুরু করলেও অবশ্য সাজঘরে ফিরেছেন হতাশাকে সঙ্গী করে। শুরুটা হয় তানজিদকে দিয়ে। শন অ্যাবটের বাউন্সার বুঝতে না পেরে তানজিদ, বোলার অ্যাবটের হাতে ক্যাচ দিয়ে ৩৪ বলে ৩৬ রান করে সাজঘরে ফেরত যান তিনি। আরাক ওপেনার জাম্পার বলে আউট হন ৪৫ বলে ৫ চারে ৩৬ রান করে।
এরপর তাওহীদ হৃদয়ের সঙ্গে দারুণ এক জুটি গড়েন অধিনায়ক শান্ত। তাদের জুটিতে ভর করে বড় রানের স্বপ্ন দেখতে শুরু করে বাংলাদেশ। কিন্তু তার শেষটাও হয় হতাশায়। ২৮তম ওভারের পঞ্চম বলে রান আউট হন শান্ত। অধিনায়কের ব্যাট থেকে আসে ৫৭ বলে ৬ চারে ৪৫ রান। শান্তর পর রান আউটে কাটা পড়েন মাহমুদউল্লাহ রিয়াদও। সাইল্টেকিলার আউট হওয়ার আগে ২৮ বলে ১ চারের সঙ্গে ৩ ছক্কায় ৩২ রানের এক মারকাটারি ইনিংস খেলেন।
অন্যপ্রান্তে বিশ্বকাপে নিজেকে মেলে ধরতে না পারা হৃদয় এদিন এসে নিজের প্রতিভার প্রতি সুবিচার করে দেখালেন। আক্রমণাত্মক ব্যাটিংয়ে ৬১ বলে স্পর্শ করলেন হাফ সেঞ্চুরি। শেষ পর্যন্ত ৭৯ বলে ৭৪ রান করে আউট হয়েছেন তিনি। টপ অর্ডার ব্যাটারদের সবাই রান পেলেও অজিদের বিপক্ষে সুবিধা করতে পারেননি মুশফিক। জাম্পার বলে এগিয়ে এসে মিড উইকেটের উপর দিয়ে মারতে গিয়ে মুশফিক ধরা পড়েন প্যাট কামিন্সের হাতে। সাজঘরে ফেরার আগে তার ব্যাট থেকে এসেছে ২৪ বলে ২১ রান।
টাইগার উইকেটরক্ষক ফেরার পর দারুণ ব্যাটিং করেছেন মিরাজ। তিনি ফেরার আগে ২০ বলে করেছেন ২৯ রান। এই অলরাউন্ডারের বিদায়ের পর কেউই তেমন কিছু করতে পারেননি। মাহেদি-নাসুমরা চেষ্টা করেও রানের গতি বাড়াতে পারেননি। তাইতো বাংলাদেশ শেষপর্যন্ত থেমেছে ৮ উইকেটে ৩০৬ রানে।
তিনশর বেশি রান তাড়ায় নামা অস্ট্রেলিয়াকে কখনোই তেমন একটা চ্যালেঞ্জের মুখে ফেলতে পারেননি বাংলাদেশের বোলাররা। যদিও পেসার তাসকিন আহমেদ শুরুতেই ব্রেক থ্রু এনে দিয়েছিল দলকে। তাসকিনের অফ স্টাম্পের সামান্য বাইরের ব্যাক অব দ্য লেন্থের বল খেলতে গেলে ট্রাভিস হেডের ব্যাটের কানায় লেগে স্টাম্পে আঘাত হানে। ১১ বলে ১০ রান করে সাজঘরে ফিরতে হয় হেডকে। দলীয় ১২ রানে প্রথম উইকেট হারায় অজিরা।
এরপর ডেভিড ওয়ার্নার মিচেল মার্শের সঙ্গে ১২০ রানের জুটি গড়েন। হাফ সেঞ্চুরি করার পর ওয়ার্নারকে ফেরান মুস্তাফিজুর রহমান। শান্তর হাতে ক্যাচ দিয়ে ওয়ার্নার ফেরেন ৬১ বলে ৫৩ রান করে। এই ম্যাচে বাংলাদেশের প্রাপ্তি বলতে গেলে ওটুকু অবধি। তৃতীয় ওভারে খেলতে নামা মার্শকে আর আউটই করতে পারেনি টাইগার বোলাররা। ক্যারিয়ার সেরা ১৩২ বলে ১৭ চার ও ৯ ছক্কায় ১৭৭ রানে অপরাজিত থেকে দলকে জিতিয়ে মাঠ ছাড়েন এই ব্যাটার। অন্যদিকে ৬৪ বলে ৬৩ রান করে তার সঙ্গে অপরাজিত থাকেন স্টিভেন স্মিথ।