বিশ্বকাপ বাছাই পর্বে ফিফা র্যাঙ্কিংয়ে এগিয়ে থাকা লেবাননের বিপক্ষে পিছিয়ে পড়েও ড্র নিয়ে মাঠ ছেড়েছে বাংলাদেশ। বসুন্ধরা কিংস অ্যারেনায় জামাল ভূঁইয়ার দল ৬৭ মিনিটে প্রথম গোল হজম করে পিছিয়ে পড়ে। এর ৫ মিনিট পরেই মোরসালিনের গোলে সমতায় ফেরে বাংলাদেশ। শেষ পর্যন্ত ১-১ স্কোরলাইনে থেকে খেলা শেষ হয়।
মঙ্গলবার (২১ নভেম্বর) বসুন্ধরার কিংস অ্যারেনায় ম্যাচটিতে চার পরিবর্তন নিয়ে দল সাজান কোচ হ্যাভিয়ের কাবরেররা। এদিন দুই দলই ৪-৩-৩ ফরমেশনে মাঠে নামে। ম্যাচের শুরুতে আক্রমণাত্মক ফুটবল খেলতে থাকে সফরকারীরা। এতে বাংলাদেশ রক্ষণ ভাগের ফুটবলারদের বার বার পরিক্ষায় নিতে থাকেন লেবাননের ফুটবলাররা। এদিন ম্যাচের ১৫ মিনিটে বাংলাদেশ প্রথম কর্ণার কিক আদায় করে নেয়। তবে সেই কর্নার থেকে ভালো কিছু হয়নি। ম্যাচের বয়স যত বাড়তে থাকে ততো বাংলাদেশ মাথাচাড়া দিয়ে উঠতে থাকে।
জামাল, মোরসালিনরা ম্যাচের ২০ মিনিট পর থেকে নিয়ন্ত্রণ নিতে থাকে। ২৪ মিনিটে বাংলাদেশ দ্বিতীয় কর্নার কিক পায়। এবার স্বাগতিকরা এগিয়ে যেতে পারত যদি জামালের কর্নার কিকে বিশ্বনাথের হেড লেবানন গোলকিপারকে ফাঁকি দিতে পারেনি। এরপর পরের মিনিটেই ডি বক্সের ভিতরে মোরসালিনের দারুণ এক পাসে গোল মুখে শট নিতে পারেনি তার এক সতীর্থ ফুটবলার।
কিংস অ্যারেনায় কখনো না হারা দলটা গুছিয়ে উঠে আক্রমণাত্মক হয়ে ওঠে বাংলাদেশ। হোম অ্যাডভান্টেজ কাজে লাগিয়ে বাংলাদেশ প্রথমার্ধে ম্যাচের স্কোরলাইন পরিবর্তন করতে পারেনি। তবে লেবাননকেও কোনো সুযোগ দেননি তারিক কাজী, বিশ্বনাথরা। ম্যাচের প্রথমার্ধের যোগ করা সময়ের তৃতীয় মিনিটে লেবাননের ওয়ালিদ শৌর ইনজুরি নিয়ে মাঠ ছাড়লে তার পরিবর্তে মাঠে নামেন ফেলিক্স মিশেল মেলকি। এরপর দুই দলই গোল শূন্য স্কোরলাইন রেখে বিরতিতে যায়।
বাংলাদেশ প্রথমার্ধের পর কাবরেরা এক পরিবর্তন নিয়ে আসেন দ্বিতীয়ার্ধে। গোলরক্ষক মিতুল মারর্মাকে বসিয়ে মাঠে নামান মেহেদি হাসান শ্রাবণকে। এই ম্যাচ দিয়ে শ্রাবণের লাল সবুজের জার্সিতে অভিষেক হয়। প্রথমার্ধের মতো দ্বিতীয়ার্ধের শুরুর ১০ মিনিট বাংলাদেশ গুছিয়ে উঠতে পারেনি। ৬১ মিনিটে বাংলাদেশ অধিনায়ক জামালে পরিবর্তে মাঠে নামেন রবিউল হাসান। এরপর যখনি খেলা আবার গুছিয়ে নিয়ে আসে লাল সবুজের প্রতিনিধিরা। ঠিক তখনই বদলি গোলরক্ষক রবিউল হাসানের ভুলে বাংলাদেশ গোল হজম করে বসে।
ম্যাচের ৬৭ মিনিটে বাংলাদেশের ডি-বক্সের জটলার মধ্যে থেকে গোলকিপার শ্রাবণ সহজ বল ধরতে না পারার কারণে লেবাননের বদলি খেলোয়াড় মাজেদ ওসমান গোল করে দলকে লিড এনে দেন। ঘরের মাঠে ১-০ গোলে পিছিয়ে পড়ে ম্যাচে ফিরতে মরিয়া কাবরেরার শিষ্যরা। ৭২ মিনিটে বাংলাদেশের ত্রাতা হয়ে আসেন নিষেধাজ্ঞা কাটিয়ে লেবাননের বিপক্ষে দলে ফেরা মোরসালিন। কাদিরিদের ডি-বক্সের বাইরে থেকে লম্বা শটে গোল করেন বাংলাদেশের ওয়ান্ডার বয় মোরসালিন।
তার গোলে কিংস অ্যারেনার নিস্তব্ধ গ্যালারি উচ্ছ্বাসে ফেটে পড়ে। ১-১ গোলে সমতায় ফিরে বাংলাদেশ হাফ ছেড়ে বাঁচেন। এরপর ৮৯ মিনিটে দারুণ এক গোলের সুযোগ মিস করেন মোরসালিন। রফিকের ক্রস পেয়ে যান ফাঁকায় থাকা মোরসালিন। গোলরক্ষককে একা পেয়েও গোল করতে পারেননি তিনি। তার শট সাইড নেট ঘেঁষে বেরিয়ে যায়। শেষ পর্যন্ত আর কোনো বিপদ না হলে পয়েন্ট ভাগাভাগি করে নিয়ে দুই দল মাঠ ছাড়ে।
এই ড্রতে ২ ম্যাচে ১ পয়েন্ট নিয়ে পয়েন্ট তালিকার তলানিতে রয়েছে বাংলাদেশ। ১ ম্যাচে ৩ পয়েন্ট নিয়ে শীর্ষে রয়েছে অস্ট্রেলিয়া। ২ ম্যাচে ২ ড্র নিয়ে লেবানন দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে। আর ১ ম্যাচে ১ ড্র নিয়ে তৃতীয় স্থানে রয়েছে ফিলিস্তিন।
