সিলেটে দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাট করটা কিছুটা দূরূহ। দ্বিতীয় সেশনে ব্যাটিংয়ে নেমে টাইগারদের ব্যাটিংয়ে সেই চিত্রটা যেন ভালোবাবে ফুটে ওঠে। ২৬ রান তুলতেই বাংলাদেশ হারিয়ে বসে দুই উইকেট। এরপর অবশ্য দলের হাল ধরেন অধিনায়ক নাজমুল শান্ত ও অভিজ্ঞ মুমিনুল হক। তাদের ৮৫ রানের জুটিতে ৩৮ ওভারে ২ উইকেট হারিয়ে ১১১ রান তোলে দ্বিতীয় সেশন শেষ করেছে টাইগাররা। লিড পেয়েছে ১০৪ রানের। শান্ত ৪৮ ও মুমিনুল ৩৮ রানে অপরাজিত আছেন।
তৃতীয় দিনে এসে উইকেট এখন পর্যন্ত সেভাবে ভাঙেনি। তবে আগের দুই দিনের তুলনায় বোলাররা টার্ন পাচ্ছে একটু বেশি। সেই টার্নেই পরাস্ত হলেন জাকির হাসান। ১৩তম ওভারে অ্যাজাজ প্যাটেলের করা অফ স্টাম্পের বাইরের বল টার্ন করে পায়ে আঘাত হানে। আম্পায়ার আউট দিতে খুব বেশি সময় নেয়নি। ৩০ বলে ১৭ রান করে ফিরেছেন এই ওপেনার।
তার বিদায়ের পর মাহমুদুল হাসান জয়ের সঙ্গী হন নাজমুল হোসেন শান্ত। তারা দুজনও ঠিকপথেই এগোচ্ছিলেন। কিন্তু হুট করে হারাতে হয় জয়কেও। ৪৬ বলে ৮ রান করে নন স্ট্রাইক প্রান্তে রান আউট হন তিনি। ক্রিজ ছেড়ে একটু সামনে এগিয়ে এসেছিলেন শান্তর মারা বলে হাত ছুয়ে দেন সাউদি। বল স্টাম্প ভাঙলে আউট হয়ে ফিরতে হয় জয়কে।
এরপর থেকে দারুণভাবে খেলছেন শান্ত ও মুমিনুল। তাদের খুব একটা চ্যালেঞ্জের মুখেও ফেলতে পারেননি কিউই বোলাররা। হাফ সেঞ্চুরি থেকে দুই রান দূরে থেকে চা বিরতিতে গেছেন জাকির। ৬০ বলে ৩৮ রান করে অপরাজিত মুমিনুল।
এরআগে, সাউদি ও জেমিসনের ব্যাটে তৃতীয় দিনের শুরুতে লিড পেয়েছিল নিউজিল্যান্ড। তবে সে লিডটা বেশি বড় করতে দেননি বাংলাদেশের পার্ট টাইম বোলার মুমিনুল হক। এক ওভারেই তিনি ফিরিয়েছেন জেমিসন ও সাউদিকে। এতে ৩১৭ রানে শেষ হয় নিউজিল্যান্ডের প্রথম ইনিংস।
তৃতীয় দিনে ব্যাটিং করতে নামার আগে কিউইরা বাংলাদেশের চেয়ে পিছিয়ে ছিল ৪৪ রানে। তাদের হাতে ছিল মাত্র ২ উইকেট। তাও ছিল কোনো স্বীকৃত ব্যাটসম্যান। তাই বাংলাদেশে লক্ষ্য ছিল দিনের শুরুতে তাড়াতাড়ি শেষ দুই উইকেট তুলে নেওয়ার। কারণ টাইগাররা ভালোই জানে স্বল্প লিডও সিলেটের এই পিচে হতে পারতো সাইকোলজিক্যাল অ্যাডভান্টেজ।
কিন্তু ৩য় দিন দেখেশুনে ব্যাট চালিয়েছেন দুই টেলএন্ডার ব্যাটার কাইল জেমিসন এবং টিম সাউদি। নিউজিল্যান্ডকে এনে দিয়েছেন লিড। ২৬৪ রানে ৮ম উইকেট পতনের পর নবম উইকেটে এই দুজন গড়েছেন ৫২ রানের জুটি। তাতেই কপালে চিন্তার ভাঁজ বাড়ছিল বাংলাদেশের।
এই জুটি ভাঙার জন্য বাংলাদেশ অধিনায়ক তৃতীয় দিন সকাল থেকেই একে একে আক্রমণে আনেন তিন স্পিনার আর এক পেসারের সবাইকে। তবে উইকেট তো দূরে থাক ন্যূনতম চাপটাও সৃষ্টি করতে পারে নি টাইগার বোলাররা। বরং ধৈর্য নিয়ে ব্যাটিং করে বাংলাদেশের হতাশাই বাড়িয়েছেন জেমিসন-সাউদি।
তবে, শেষ পর্যন্ত পার্ট টাইমার মুমিনুল হকের দারস্ত হন টাইগার অধিনায়ক আর তাতেই সফলতা পেয়েছে বাংলাদেশ। তার প্রথম শিকার ২৩ রান করা কাইল জেমিসন। ম্যাচের ১০১.১ ওভারে মুমিনুলের হালকা সুইংয়ে ব্যাটে-বলে করতে পারেননি এই পেসার। আউট হয়েছেন এলবিডব্লিউতে। ভাঙে ৫২ রানের জুটি। একই ওভারের পঞ্চম বলে প্রায় একই ডেলিভারিতে বোল্ড করেছেন কিউই অধিনায়ক টিম সাউদিকে। আউট হওয়ার আগে সাউদি করেন ৩৫ রান। অবশ্য ৭ রানের লিড নিয়েই থামল কিউইরা।
সংক্ষিপ্ত স্কোর
বাংলাদেশ ২য় ইনিংস: ১১১/২ (৩৮ ওভার)
নিউ জিল্যান্ড ১ম ইনিংস: ৩১৭/১০ (১০১.৫ ওভার)
বাংলাদেশ ১ম ইনিংস: ৩১০/১০ (৮৫.১ ওভার)
বাংলাদেশ এগিয়ে ১০৪ রানে