আগে ব্যাট করে সুজি বেটসের ঝড়ো ব্যাটিংয়ে রানের পাহাড় গড়েছিল নিউজিল্যান্ড। সেই পাহাড় টপকাতে নেমে শুরু ভালো হলেও নিয়মিত বিরতিতে উইকেট হারিয়ে ২০ ওভারে সর্বসাকুল্যে ১১৮ রান করতে পেরেছে বাংলাদেশ।
শুক্রবার (১৭ ফেব্রুয়ারি) নারী টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে নিজের তৃতীয় ম্যাচে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ৭১ রানে বড় ব্যবধানে হেরেছে নিগার সুলতানা জ্যোতির দল। আসরে এটা বাংলাদেশের টানা তৃতীয় হার।
টস হেরে ফিল্ডিং করতে নেমে শুরুতেই নিউজিল্যান্ডের দুই ওপেনার সুজি বেটস ও বার্নাডাইনের তোপের মুখে পড়ে বাংলাদেশ। দুজনের ঝড়ো ব্যাটিংয়ে এলোমেলো হয়ে যায় বাংলাদেশের সব পরিকল্পনা। বেটসের চেয়ে বার্নাডাইন একটু বেশিই আগ্রাসি ছিলেন।
দুজনের তোপে পাওয়ার প্লেতে নিউজিল্যান্ডের স্কোরবোর্ডে জমা হয় ৪৯ রান। পাওয়ার প্লে শেষেও রানের গতি সচল রেখেছেন তারা। ইনিংসের ৯ম ওভারে প্রথম উইকেটের দেখা পায় বাংলাদেশ। ২৬ বলে পাঁচ ৪৪ রান করা বার্নাডাইনকে স্টাম্পিংয়ের ফাঁদে ফেলে দলকে প্রথম ব্রেক থ্রু এনে দেন স্বর্ণ আক্তার।
তবে তিনি ফিরলেও ততক্ষণে খোলস ছেড়ে বের হওয়া শুরু করেছেন বেটস। তিন নম্বরে নামা অ্যামেলিয়া কেরও শুরু থেকেই আগ্রাসী ব্যাটিং করেন। আগ্রাসী ব্যাটিংয়ে ১২.১ ওভারে দলীয় রান ১০০ পার হয় নিউজিল্যান্ডের।
এরপর ওই ওভারেই জোড়া ধাক্কা দেন ফাহিমা। ওভারের পঞ্চম বলে অ্যামেলিয়াকে ফেরানোর পর শেষ বলে শোপি ডিভাইনকেও দারুণ ডেলিভারিতে বোল্ড করেন তিনি। ১৩ বলে এক চারে ১৬ রান করেন অ্যামেলিয়া আর শোপি ফেরেন খালি হাতে।
টানা দুই বলে দুই উইকেট হারালেও সেটার চাপ পড়েনি নিউজিল্যান্ডের উপর। অন্যপ্রান্তে রানের গতি ঠিক সচল রেখেছেন বেটস। পাঁচ নম্বরে নামা গ্রিন শুরু থেকে তাণ্ডব চালানো শুরু করেন।
শেষ পাঁচ ওভারে বেটস আর গ্রিন মিলে বাংলাদেশের বোলারদের নিয়ে রীতিমতো ছেলেখেলা করেছেন। ১৯তম ওভারে বেটসকে ফেরানোর সুযোগ পেয়েছিল বাংলাদেশ, কিন্তু উইকেটরক্ষক শামিমা সুলতানা স্টাম্পিং মিস করে সুযোগ হাতছাড়া করেন।
১৫ ওভারে ১৩০ থেকে শেষ পাঁচ ওভারে নিউজিল্যান্ডের স্কোরবোর্ডে যোগ হয় ৫৯ রান। বেটস অপরাজিত ৬১ বলে সাত চার ও এক ছক্কায় ৮১ রান করেন এবং ২০ বলে সাত চারে ৪৪ রান করেন গ্রিন। শেষ পর্যন্ত নির্ধারিত ২০ ওভার শেষে ১৮৯ রানের সংগ্রহ পেয়েছিল নিউজিল্যান্ড।
লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে প্রথম দুই ওভারেই বাংলাদেশের স্কোরবোর্ডে জমা হয় ১৮ রান। ইনিংসের তৃতীয় ওভারে সোহানা ফেরার পর সোবহানা আর অধিনায়ক জ্যোতিও ফিরে যান দ্রুত। ৫৪ রানে তিন উইকেট হারিয়ে শুরুতেই চাপে পড়ে বাংলাদেশ। ৩৮ বলে ৩০ রান করে আউট তিনি।
এরপর দলের দলের হাল ধরেন মুর্শিদা খাতুন ও স্বর্ণা আক্তার। আগ্রাসী ব্যাটিংয়ে এদিন দারুণ ছন্দে ছিলেন স্বর্ণা। দলীয় ১০০ রানে মুর্শিদা ফিরলে ভাঙে তাদের ৪৬ রানের জুটি। ৩৮ বলে ৩০ রান করে আউট হন তিনি।
মুর্শিদা ফেরার পর মাত্র তিন রানের ব্যবধানে ফিরে যান স্বর্ণা। তার ব্যাট থেকে আসে ৪ চারে ২২ বলে ৩১ রান। এরপর ১০ রানের ব্যবধানে আরও তিন উইকেট হারায় বাংলাদেশ। শেষ পর্যন্ত আট উইকেট হারিয়ে নির্ধারিত ২০ ওভারে ১১৮ রানে শেষ হয় জ্যোতির দলের ইনিংস।