• ঢাকা
  • শনিবার, ২৩ নভেম্বর, ২০২৪, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২০ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

অস্ট্রেলিয়ার প্রথম আদিবাসী খেলোয়াড়ের প্রয়াণ


ফারজানা ববি
প্রকাশিত: এপ্রিল ১৮, ২০২৩, ০৭:০৩ পিএম
অস্ট্রেলিয়ার প্রথম আদিবাসী খেলোয়াড়ের প্রয়াণ

মাত্র এক ম্যাচ খেলেছিলেন ফেইথ থমাস। তাতেই হয়ে গেলেন ইতিহাসের অংশ। ১৯৫৮ সালে ইংল্যান্ড নারী দলের বিপক্ষে অস্ট্রেলিয়ার হয়ে স্বীকৃত টেস্ট ম্যাচ খেলা প্রথম আদিবাসী তো বটেই, যে কোনো খেলাতে ডাক পাওয়া প্রথম আদিবাসী নারী থমাস। অস্ট্রেলিয়ান এই খেলোয়াড় ৯০ বছর বয়সে মারা গেছেন।

ফেইথ থমাসের গল্প যেমন অনুপ্রেরণাদায়ক তেমনি অবিশ্বাস্য। তার গুরুত্বপূর্ণ দিক হচ্ছে, তিনি মাত্র চার আদিবাসী অস্ট্রেলিয়ানদের একজন যারা টেস্ট ক্রিকেট খেলেছেন। এছাড়াও তিনি প্রথম আদিবাসী বিশ্ববিদ্যালয়ের স্নাতকদের একজন এবং নার্স ছিলেন। ২০১৯ সালে তিনি ক্রিকেট, আদিবাসী এবং টরেস স্ট্রেট আইল্যান্ডার সম্প্রদায়ের সেবার জন্য অর্ডার অব অস্ট্রেলিয়া খেতাব পেয়েছিলেন।

নারীদের খেলায় অন্যতম দ্রুততম বোলার হিসেবে খ্যাত থমাস ১৯৫৮ সালে মেলবোর্নের জংশন ওভালে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে অস্ট্রেলিয়ার হয়ে তার প্রথম এবং একমাত্র টেস্ট খেলেন। জ্যাসন গিলেস্পি, অ্যাশ গার্ডনার এবং স্কট বোল্যান্ডের পাশাপাশি অস্ট্রেলিয়ার হয়ে টেস্ট খেলেছেন এমন চার আদিবাসী অস্ট্রেলিয়ানদের মধ্যে থমাস একজন।

রাজ্যদলের হয়ে তিন ম্যাচ খেলার পর জাতীয় দলে ডাক পান থমাস। সে বছর অস্ট্রেলিয়ান একাদশে ডাক পেয়ে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ম্যাচে সবাইকে মুগ্ধ করেন থমাস। ইংল্যান্ড অধিনায়ক ম্যারি ডুগান বোল্ড হন তার বলে। স্টাম্প নাকি উইকেটকিপারের মাথার ওপর দিয়ে গিয়েছিল। বোল্ড হওয়ার পর ডুগান হাসতে হাসতে বলেছিলেন, জীবনে এমন আগে দেখেননি। ইংল্যান্ড ও নিউজিল্যান্ড সফরের দলেও ডাক পেয়েছিলেন থমাস। তবে যেতে হতো সমুদ্র পথে। লম্বা সময়ের জন্য সমুদ্রযাত্রা করে যেতে চাননি বলে সে যাত্রা বাতিল করেন। ১৯৬০-এর দশকের শুরুর দিকে নিজের শেষ ম্যাচটি খেলেন থমাস। তখন তিনি গর্ভবতী ছিলেন।

ফেইথ থমাস ক্রিকেট এবং সম্প্রদায়ের জন্য বিস্ময়কর এবং যুগান্তকারী অবদান রেখেছেন। টেস্ট ক্রিকেটে অস্ট্রেলিয়ার প্রতিনিধিত্বকারী প্রথম আদিবাসী নারী হিসেবে যারা তাকে অনুসরণ করেছে তাদের জন্য তিনি অনুপ্রেরণার ছিলেন।

থমাস ১৯৩৩ সালে নেপাবুন্নাতে জন্মগ্রহণ করেছিলেন। তিনি ‘স্টোলেন জেনারেশন’ বা চুরি যাওয়া প্রজন্মের একজন ছিলেন। তখনকার সরকারের নীতি অনুযায়ী, আদিবাসী পরিবারের কাছ থেকে সন্তান ছিনিয়ে নিয়ে শ্বেতাঙ্গ পরিবারে একটা প্রজন্মকে বড় করা হয়েছিল। তিনি দক্ষিণ অস্ট্রেলিয়ার ফ্লিন্ডার রেঞ্জের কোলব্রুক হোমে বেড়ে ওঠেন।

ক্রিকেটের বাইরে তিনি ছিলেন দেশের প্রথম আদিবাসী কলেজ স্নাতকদের একজন এবং দক্ষিণ অস্ট্রেলিয়ার প্রথম আদিবাসী নার্সদের একজন। তৃণমূল থেকে অভিজাত স্তর পর্যন্ত - খেলাধুলার জগতে এবং মাঠের বাইরে বড় প্রভাব ফেলছে এমন নারীদের মধ্যে থমাস ছিলেন অন্যতম।  

 

Link copied!