শুধু অস্ট্রেলিয়ার রাজত্বই নয়, বছরজুড়ে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে আরও অনেক চমকজাগানিয়া পারফরম্যান্স ছিল। কিছু দলের উত্থান সঙ্গে পতনের সাক্ষী হয়েছেন ক্রিকেটপ্রেমীরা।
হার না মানার মানসিকতার সঙ্গে নিখুঁত পেশাদারিত্ব অস্ট্রেলিয়াকে করেছে বিশ্ব ক্রিকেটের পরাশক্তি। দুর্দান্ত পারফরম্যান্সে বছরটা নিজেদের করে নেয় অজিরা। ওয়ানডে বিশ্বকাপ জয়ের আগে টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপও জিতেছে তারা। ইংল্যান্ডের মাটিতে ধরে রেখেছে অ্যাশেজ।
এ বছর অক্টোবর-নভেম্বরে ভারতে বসে ওয়ানডে বিশ্বকাপের ১৩তম আসর। প্রথম দুই ম্যাচে হেরে আসর শুরু করে রেকর্ড বিশ্বজয়ীরা অজিরা। কিন্তু নামটি যখন অস্ট্রেলিয়া, তখন তারা ঘুরে দাঁড়াবে না, তা কি হয়? টানা ৯ ম্যাচ জিতে বিশ্ব জয়ের মুকুটে যোগ করেছে আরও একটি পালক। ফাইনালের হারায় স্বাগতিক ভারতেকে। টেস্টেও চ্যাম্পিয়ন এর আগে জুনে অজিরা জেতে আইসিসি টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ। দুই ফাইনালেই তাদের প্রতিপক্ষ ছিল ভারত। আইসিসির দুই শিরোপা জয়ের খুব কাছে গিয়েও রোহিত-কোহিলদের ফিরতে হয়েছে খালি হাতে।
দুই ফাইনালে অস্ট্রেলিয়ার জয়ের নায়ক ট্রাভিস হেড। ওভালে টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালে ১৬৩ রান করেন বাঁহাতি এই ব্যাটার। এরপর আহমেদাবাদে ওয়ানডে বিশ্বকাপের ফাইনালে রান তাড়ায় খেলেন অপরাজিত ১৩৭ রানের চোখ ধাঁধানো ইনিংস।
জুন-জুলাইয়ে ইংল্যান্ডের আলোচিত ‘বাজবল’ কৌশল গুঁড়িয়ে অ্যাশেজ সিরিজ নিজেদের কাছে রেখে দেয় অস্ট্রেলিয়াই।
এ বছর নারী ক্রিকেটেও দাপট ছিল অস্ট্রেলিয়ার। দক্ষিণ আফ্রিকাকে হারিয়ে তৃতীয়বারের মতো টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের ট্রফি জেতে অজি মেয়েরা।
হতাশার বছরে ভারতের একটাই সাফল্য এশিয়ার শ্রেষ্ঠত্ব অর্জন। হাইব্রিড মডেলের এশিয়া কাপের ফাইনালে শ্রীলঙ্কাকে উড়িয়ে অষ্টমবার মতো শিরোপা জেতে ভারত।
এ বছর রেকর্ড গড়ে ইতিহাসে নাম লেখান বিরাট কোহলি। গড়েন ওয়ানডেতে সবচেয়ে বেশি পঞ্চাশ সেঞ্চুরির রেকর্ড। ছাড়িয়ে যান স্বদেশী কিংবদন্তি শচীন টেন্ডুলকারের ৪৯ সেঞ্চুরির কীর্তি। বিশ্বকাপেও ছিলেন দুর্দান্ত। প্রথম ব্যাটার হিসেবে এক আসরে করেন সাতশ রানের কীর্তি। এ ছাড়া এক আসরে প্রথমবারের মতো দেখা যায় ৯টি পঞ্চাশ ছোঁয়া ইনিংস, যান তিনটি সেঞ্চুরি।
এ বছর দারুণ কেটেছে নেদারল্যান্ডসের। ওয়েস্ট ইন্ডিজ, জিম্বাবুয়ের মতো টেস্ট প্লেয়িং নেশনকে পেছনে ফেলে বিশ্বকাপে খেলে ডাচরা। এরপর দক্ষিণ আফ্রিকার পর বাংলাদেশের বিপক্ষে জয় পায় তারা। ক্রিকেটে যে আফগানরা দ্রুত উন্নত হচ্ছে তার প্রমাণ পাওয়া যায় এই বিশ্বকাপে। ইংল্যান্ডকে হারানোর পর পাকিস্তান, শ্রীলঙ্কা ও নেদারল্যান্ডসের বিপক্ষে জিতে সেমিতে খেলার সম্ভাবনা জাগিয়ে তুলেছিল।
২০২৪ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের বাছাইপর্ব হয়েছে এ বছর। সেখানে চমক দেখায় উগান্ডা ও কানাডা। আফ্রিকা অঞ্চল থেকে প্রথমবারের মতো টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে জায়গা করে নিয়েছে উগান্ডা। আর আমেরিকা অঞ্চলের বাছাই থেকে প্রথমবার টি-টোয়েন্টির বৈশ্বিক আসরের টিকিট নিশ্চিত করেছে কানাডা।
২০২৩ সালকে ওয়ানডের বছরও বলা যায়। এক বর্ষপঞ্জিকায় সর্বাধিক ২১৮টি ওয়ানডে ম্যাচ হয়েছে এ বছর। এর আগে এক বছরে সবচেয়ে বেশি ওয়ানডে হয়েছিল ২০০৭ সালে, ১৯১টি।