এবারের বিশ্বকাপে ভারতের ব্যাটিং ছিল দুর্দান্ত, প্রতিপক্ষকে দুমড়ে মুচড়ে দেওয়ার মতো ছিল। কিন্তু ফাইনালে সেই ভারতীয় ব্যাটসম্যানদের দাঁড়াতেই দেয়নি অস্ট্রেলিয়ার বোলাররা। তাদের নিয়ন্ত্রিত বোলিংয়ে ভারত নির্ধারিত ওভারে সবকয়টি উইকেট হারিয়ে ২৪০ রান তোলে। এবারের বিশ্বকাপে প্রথমবারের মতো অলআউট হয়েছে ভারত। ভারতের রান এতটুকু হওয়ার পিছনে অবদান বিরাট কোহলি ও লোকেশ রাহুলের ফিফটি। বিরাট ৫৪ ও রাহুল করেন ৬৬ রান।
আহমেদাবাদে ফাইনালে টস জিতে আগে বোলিং করার সিদ্ধান্ত নেন অজি অধিনায়ক প্যাট কামিন্সের। তবে, তার বোলাররা ভারতের ওপর চাপ প্রয়োগ করতে ব্যর্থ হয়েছিল শুরুতে। ব্যাটিং পাওয়ার প্লেতে তারা তোলেন ৮০ রান। হারান ২ উইকেট। তবে এরপরেই ম্যাচে ভারতের ব্যাটারদের লাগাম টেনে ধরে অজি বোলাররা।
ভারত তাদের প্রথম উইকেট হারান ম্যাচের ৪.২ ওভার। মাত্র ৪ রান করে আউট হন শুভমান গিল। মিচেল স্টার্কের বলে অ্যাডাম জাম্পাকে ক্যাচ দেন এই ওপেনার। গিল ফিরলেও বাউন্ডারি হাঁকিয়ে পাওয়ার-প্লেতে ভারতের রানসংখ্যা বাড়িয়ে নিচ্ছিলেন রোহিত। কিন্তু ১০ ওভার শেষ হওয়ার আগেই ভুল শট সিলেকশনে আউট হন তিনি। ৩১ বলে ৪৭ রান করেছেন তিনি।
এরপর দ্রুত ফিরেন শ্রেয়াস আইয়ারও। ৩ বলে ৪ রান করে উইকেটের পেছনে ক্যাচ দেন তিনি, তার উইকেট নেন অজি অধিনায়ক কামিন্স।
এরপর লোকেশ রাহুলকে নিয়ে ধীরে ধীরে দলকে টেনে তোলেন বিরাট কোহলি। এরই মধ্যে তিনি তুলে নেন হাফ সেঞ্চুরি। এই বিশ্বকাপে কোনো ব্যাটার ছয়শও রান করতে পারেনি, তিনি ছুটছিলেন আটশ রানের দিকে। কিন্তু এবারও অস্ট্রেলিয়ার হয়ে এই জুটি ভাঙেন অধিনায়ক কামিন্স। আগের দিন তিনি বলেছিলেন, আহমেদাবাদের লাখের বেশি সমর্থককে চুপ করিয়ে দিতে চান। সেটি কোহলিকে ফিরিয়ে করে দেখান কামিন্স।
তার শর্ট বল কাট করতে গিয়ে কোহলির ব্যাটে লেগে স্টাম্পে যায়। অবিশ্বাসের চোখ নিয়ে ক্রিজে কিছুক্ষণ ঠাঁয় দাঁড়িয়েছিলেন তিনি। এই বিশ্বকাপের ১১ ম্যাচে ৯৫.৬২ গড় ও ৯০.৩১ স্ট্রাইক রেটে ৭৬৫ রান করেছেন। রোহিত শর্মা ৫৯৫ রান করে আছেন দুইয়ে।
কোহলির সঙ্গে ৬৭ রানের জুটি ভাঙার পরও রাহুল দলের হাল ধরেন। তাকে সঙ্গ দিতে আসেন রবীন্দ্র জাদেজা। ৩৬তম ওভারের পঞ্চম বলে হ্যাজলউডের খাটো লেন্থের ডেলিভারিতে উইকেটের পেছনে ক্যাচ দিয়েছেন তিনি। সাজঘরে ফেরার আগে তার ব্যাট থেকে এসেছে ২২ বলে ৯ রান।
এরপর ভরসার নাম ছিল রাহুল ও সূর্যকুমার যাদব। কিন্তু স্টার্কের দুর্দান্ত এক বলে আর টিকতে পারেননি লোকেশ রাহুল। ১০৭ বল খেলে স্রেফ একটি বাউন্ডারি হাঁকানো রাহুল করেন ৬৬ রান। তার বিদায়ের পর সব আশাই ছিল সূর্যকুমার যাদবকে ঘিরে।
কিন্তু তাকে স্লো বল করে বিপাকে ফেলে দেয় অস্ট্রেলিয়া। আলো না ছড়িয়েই সাজঘরে ফেরত যান সূর্য। ২৮ বলে ১৮ রান করে হ্যাজেলউডের শিকার হন তিনি। এরপর শেষ উইকেট জুটিতে যোগ হয় আরও ১৪ রান। ১৮ বলে ১০ রান করে ইনিংসের শেষ বলে রান আউট হন কুলদিপ যাদব। ৯ রানে অপরাজিত থাকেন মোহাম্মদ সিরাজ। বল হাতে অস্ট্রেলিয়ার স্টার্ক ৩টি এবং হ্যাজেলউড ও কামিন্স ২টি করে উইকেট তুলে নিয়েছেন।