২০০৯ সালে ফেডারেশন কাপের ফাইনালে আবাহনীকে হারিয়ে শিরোপা জিতেছিল মোহামেডান। চৌদ্দ বছর পর ফেডারেশন কাপে সেই একই চিত্রনাট্যের পুনরাবৃত্তি ঘটলো। আবারও টাইব্রেকারে আবাহনীকে হারিয়ে ফেডারেশন কাপের শিরোপা জিতে নিয়েছে মোহামেডান।
মঙ্গলবার (৩০ মে) কুমিল্লার ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত স্টেডিয়ামে ফেডারেশন কাপের শিরোপার লড়াইয়ে মুখোমুখি হয়েছিলো ঢাকার দুই ঐতিহ্যবাহী ক্লাব ঢাকা আবাহনী ও মোহামেডান। নির্ধারিত ৯০ মিনিটে আবাহনী দুইবার এগিয়ে গেলেও সোলেমান দিয়াবাতের হ্যাটট্রিকে ৩-৩ গোলে সমতায় ফেরে সাদা কালো শিবির। অতিরিক্ত সময়ে গড়ালে সেখানে এগিয়ে যায় মতিঝিল পাড়ার মোহামেডান। এবার দিয়াবাতের চতুর্থ গোলে মোহামেডান এগিয়ে গেলে সেখান থেকে সমতায় ফেরে আবাহনী। শেষমেশ ৪-৪ গোলে সমতায় থাকা ম্যাচ টাইব্রেকে গড়ালে বদলি গোলরক্ষক বিপুর দক্ষতায় ৪-২ গোলে আবাহনীকে হারিয়ে শিরোপা জয়ের উল্লাসে মাতে মোহামেডান।
এদিন বল দখলে শুরু থেকেই এগিয়ে ছিল আবাহনী। অন্যদিকে শুরুর দিকে গোল করার মতো খুব বেশি সুযোগ তৈরি করতে পারেনি মোহামেডান। ম্যাচের প্রথমার্ধে ২-০ গোলে এগিয়ে যায় আবাহনী।
তবে গোলের জন্য খুব বেশি সময় অপেক্ষা করতে হয়নি আবাহনীকে। আট মিনিট পরেই এমেকার ক্রস থেকে গোল করেন ফয়সাল আহমেদ ফাহিম। ফাহিমের নেওয়া নিচু শট গোলরক্ষক সুজনের পায়ে লেগে জালে জড়ায়। এতেই উল্লাসে ফেটে পড়েন গ্যালারির আবাহনীর সমর্থকরা।
ম্যাচের ৪৩তম মিনিটে ব্যবধান দ্বিগুণ করেন কলিনদ্রেস। মাঝ মাঠ থেকে হৃদয়ের নেওয়া লম্বা পাস বক্সের ভেতরেই পেয়ে যান কোস্টারিকান এ ফরোয়ার্ড। এরপর দ্রুতগতির শটে লক্ষ্যভেদ করে দলকে ২-০ গোলের লিড এনে দেন তিনি। ম্যাচের ৫৯তম মিনিটে প্রথম গোলটি করেন দিয়াবাতে। তার প্লেসিং শটে পরাজিত হন আবাহনীর গোলরক্ষক। এর মিনিট চারেক পরেই জোড়া পূরণ করেন দিয়াবাতে।
মোহামেডানের সমতায় ফেরার মিনিট পাঁচেক পর আবারও লিড নেয় আবাহনী। ম্যাচের ৬৫তম মিনিটে নাইজেরিয়ান এমেকার গোলে ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ নেয় আবাহনী।
শেষ দিকে ম্যাচের ৮৩তম মিনিটে দিয়াবাতের হ্যাটট্রিকে আবাহনীর আশা ভেঙে আবারও সমতা আনে মোহামেডান। এরপর অতিরিক্ত সময়ে গড়ায় ম্যাচ।
প্রায় ৮ বছর পর অতিরিক্ত সময়ে গড়ানো ফেডারেশন কাপের ফাইনালের লড়াইটা আরও বেশি জমজমাট হয়ে ওঠে। ম্যাচের ১০৭তম মিনিটে পেনাল্টি থেকে নিজের চতুর্থ গোল করেন মোহামেডানের দিয়াবাতে। তার গোলে আবারও লিডে ফিরে সাদা-কালো শিবির।
ভাগ্য প্রসন্ন টাইব্রেকারে শেষ রোমাঞ্চে মাতেন মোহামেডানের সমর্থকরা। পেন্ডুলামের মতো দুলতে থাকা ম্যাচ টাইব্রেকারে ৪-২ ব্যবধানের জয় নিয়েই মাঠ ছাড়ে মোহামেডান।
এর আগে ২০১১ সালে সুপার কাপের ফাইনালে আবাহনীর মুখোমুখি হয়েছিল মোহামেডান। ১২ বছর পর আবার ফাইনালে আকাশি-নীল জার্সিধারীদের মুখোমুখি হয়ে দারুণ এক জয় তুলে নিলো সাদা-কালো শিবির।