ব্যাটারদের ব্যর্থতায় ১২১ রানের সংগ্রহ পেয়েছিল ফরচুন বরিশাল। বোলারদের নিয়ন্ত্রিত বোলিংয়ে সেটাও এক পর্যায়ে যথেষ্ট বলেই মনে হচ্ছিল। তবে চলতি আসরে প্রথমবারের মতো ম্যাচ খেলতে নেমেই ব্যাট হাতে ঝড় তুলে কুমিল্লা ভিক্টোয়ান্সকে জয় এনে দিয়েছেন আন্দ্রে রাসেল।
মঙ্গলবার (৭ ফেব্রুয়ারি) দিনের দ্বিতীয় খেলায় ফরচুন বরিশালের বিপক্ষে কুমিল্লার জয় এসেছে পাঁচ উইকেটের ব্যবধানে। ব্যাট হাতে তিন ছক্কা ও দুই চারে মাত্র ১৬ বলে ৩০ রানের ক্যামিও খেলেছেন রাসেল। অন্যদিকে বল হাতে বরিশালের পাঁচ ব্যাটারকে ফিরিয়ে চলতি আসরের সেরা বোলিং করেছেন কুমিল্লার পেসার মুকিদুল ইসলাম মুগ্ধ।
প্রথম তিন ম্যাচ হারার পর এই নিয়ে টানা আট ম্যাচ জিতলো কুমিল্লা। এর আগে আর কোনো দল টানা ৮টি ম্যাচ জিততে পারেনি। এই জয়ে ১৬ পয়েন্ট নিয়ে টেবিলের দুই নম্বরে উঠে এসেছে কুমিল্লা।
বরিশালের দেওয়া সল্প টার্গেটের লক্ষ্যে ব্যাটিং করতে নেমে ঝড়ো শুরুর আভাস দিলেও ইনিংস বড় করতে পারেনি রিজওয়ান। একটি করে চার-ছয়ে ৬ বলে ১১ রান করে ফিরে যান তিনি।
তিনে নামা জাকি আলিও ব্যর্থ সুযোগ কাজে লাগাতে। দলীয় ৪১ রানে ফেরার আগে ১ ছয়ে ১৬ বলে ১০ রান করেন তিনি। চোট কাটিয়ে একাদশে ফেরা লিটন এদিন নিজের ছন্দে ফিরতে পারেননি।
তার অস্বস্তির ইনিংস শেষ হয় ৩৯ বল খেলে ৫ চারে ৩৬ রানে। এর আগে ইমরুল কায়েস ও মোসাদ্দেক ফেরায় স্বল্প টার্গেটেও চাপে পড়ে কুমিল্লা।
তবে এই চাপকে যেন পাত্তাই দিলেন না খুশদিল শাহ ও আন্দ্রে রাসেল। শেষ পাঁচ ওভারে জয়ের জন্য ৪৭ রানের প্রয়োজন ছিল কুমিল্লার। মোহাম্মদ ওয়াসিমের করা ১৬তম ওভারে তিন চারে ১৩ রান ও তার পরের ওভার করতে আসা খালেদ আহমেদের বলে ১১ রান নিয়ে সমীকরণ সহজ করে ফেলেন তারা।
তিন ওভারে ২৩ রানের সমীকরণ মেলাতে সাকিব আল হাসানের করা ১৭তম ওভারে দুই ছক্কাসহ ১৭ রান নিয়ে ম্যাচের ফলাফল নিশ্চিত করে ফেলেন রাসেল। এরপরের ওভারে ওয়াসিমের ওভারে লং অফ দিয়ে ছক্কা মেরে ম্যাচ শেষ করেন রাসেল।
এর আগে টস হেরে ব্যাটিংয়ে নেমে ইনিংসের দ্বিতীয় ওভারে তানভির ইসলামের বলে কট বিহাইন্ড হন এনামুল হক বিজয়। এক ওভার পরেই ফিরে যান ফজলে মাহমুদ রাব্বি।
তিন নম্বরে নেমে উইকেটে থিতু হলেও ইনিংস বড় করতে পারেননি মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। ইনিংসের সপ্তম ওভারে বল হাতে নিয়েই ফরচুন বরিশাল অধিনায়ক সাকিব আল হাসানকে ফিরিয়ে দেন মুকিদুল ইসলাম মুগ্ধ। এক ম্যাচের জন্য পাকিস্তান থেকে ফিরে আসা ইফতিখারও এদিন ব্যাট হাতে ব্যর্থ।
দশম ওভারে ফেরার আগে রিয়াদের ব্যাট থেকে আসে ৩ চার ও ১ ছয়ে ২৬ বলে করেন ৩৬ রান। ষষ্ট উইকেট জুটিতে ৪৭ রান যোগ করেন করিম জানাত ও মেহেদী হাসান মিরাজ।
শেষ পর্যন্ত মিরাজের ১৭ ও জান্নাতের ৩২ রানের ইনিংসের উপর ভর করে ১২১ রানে থামে বরিশালের ইনিংস। মুগ্ধর বোলিং তোপে শেষে ১০ রানে শেষ পাঁচ উইকেট হারায় সাকিবের দল।
ষষ্ঠ উইকেট জুটিতে চাপ সামাল দেন করিম জানাত ও মেহেদী হাসান মিরাজ। দুজন মিলে যোগ করেন ৪৭ রান। মিরাজ ১টি করে চার-ছয়ে করেন ১৮ বলে ১৭ রান। জানাত ৪ চার ও ১ ছয়ে ২৬ বলে খেলেন ৩২ রানের ইনিংস।
শেষ দিকে বরিশাল ইনিংসে ফের ছোবল দেন মুকিদুল। তার দারুণ বোলিংয়ে স্রেফ ১০ রানে শেষের ৫ উইকেট হারিয়ে ৫ বল আগেই অলআউট হয় বরিশাল।