বিশ্বজুড়ে ইউরোপ-ল্যাটিন ফুটবলারদের মতো কোচদেরও চাহিদা তুঙ্গে। আফ্রিকাতেও এর ব্যতিক্রম নয়। তবে কাতারে বিশ্বকাপে খেলতে যাওয়া পাঁচ আফ্রিকান দলের কোনোটির ডাগআউটে দেখা যাবে না বিদেশি কোচের ছায়া। বিদেশি কোচের ধারা থেকে বেরিয়ে দেশি কোচেই ভরসা রাখছে। ফুটবল বিশ্বকাপে এই প্রথম আফ্রিকার দেশগুলোর সবকটিতেই দেখা যাবে দেশি কোচদের।
মধ্যপ্রাচ্যের দেশ কাতারে হতে যাওয়া এই বিশ্বকাপে আফ্রিকার প্রতিনিধিত্ব করবে ক্যামেরুন, ঘানা, মরক্কো, সেনেগাল ও তিউনিসিয়া। সবগুলো দেশের ডাগ আউটে আছেন দেশগুলোর স্থানীয় কোচ। যা কি-না এই প্রথমবারের মতো ঘটতে যাচ্ছে।
এক যুগ পিছনে ফিরলেও দেখা যাবে আফ্রিকান ফুটবল ইউরোপ কিংবা ল্যাটিন কোচদের আধিপত্য। দক্ষিণ আফ্রিকায় হওয়া ২০১০ বিশ্বকাপে ছিল ছয় আফ্রিকান দেশ। সেবার আলজেরিয়া ছাড়া সবগুলো আফ্রিকান দেশের ডাগআউটে ছিল বিদেশি কোচ। এমনকি সর্বশেষ রাশিয়া বিশ্বকাপেও দুই দলের ডাগ আউটে ছিল দেশি কোচ। বাকি তিন দলের কোচেরা ছিলেন ল্যাটিন ও ইউরোপিয়ান।
দেশি কোচের উপর ভরসার আফ্রিকান ফুটবলের উন্নতির ধারাবাহিকতা তুলে ধরছে বলেও জানান সেনেগালকে আফ্রিকান নেশনস কাপ শিরোপা জেতানো আলিউ সিসে। সংবাদ মাধ্যম বিবিসিকে তিনি বলেন, “আফ্রিকা মহাদেশে এমন কিছু ঘটছে, যার কারণে দেশি কোচদের উপরই ভরসা করছে ফেডারেশন ও ক্লাবগুলো।”
তিনি আরও বলেন, “আমাদের স্বপ্ন সবাইকে বোঝানো আফ্রিকাকেও ভালোমানের ফুটবল কোচ আছে। এখানকার কোচরাও ইউরোপে কোচিং করানোর যোগ্যতা রাখে।”
আফ্রিকান ফুটবল সংশ্লিষ্টটের দেশি কোচের ভরসা রাখার প্রভাবটা বেশ ভালোভাবেই পড়েছে মহাদেশীয় টুর্নামেন্টগুলোতে। সাম্প্রতিক সময়ে আফ্রিকান দলগুলোর মধ্যে বাড়ছে প্রতিদ্বন্দ্বীতার ঝাঁজও।
আফ্রিকায় দীর্ঘদিনের কোচিং অভিজ্ঞতা আছে বেলজিয়ান কোচ টিম সেইফার্টের। তিনিও আফ্রিকান কোচদের এই উন্নতি তার চোখেও দিচ্ছে ভালো কিছু ইঙ্গিত। ত্নি বলেন, “ইউরোপিয়ান ফুটবলের উন্নতিটা অনেক আগেই হয়েছে। তাই এখন ভালো ভালো কোচ পাওয়া যাচ্ছে। এখন আফ্রিকার ফুটবলও এগিয়ে যাচ্ছে। এখান থেকে প্রতিভাবান সব কোচকে পাওয়া যাচ্ছে। ভবিষ্যতে এর পরিমাণ আরও বাড়বে।”
তিনি আরও যোগ করেন, “আফ্রিকান ফুটবল বুঝতে হলে তাদের সংস্কৃতিও বুঝতে হবে। সেটা সম্ভব হলেই তাদের সাথে কাজ করা সুবিধা হবে। তা না হলে কাজ করতে অসুবিধায় পড়তে হবে।”
কাতার বিশ্বকাপে আফ্রিকার প্রতিনিধিত্ব করবে মরক্কো,ক্যামেরুন,তিউনিসিয়া, ঘানা ও সেনেগাল। মরক্কো তাদের দায়িত্ব তুলে দিয়েছে ওয়ালিদ রাগরাগুইকে। মরক্কোর দায়িত্ব নেওয়ার আগে ওয়দাদ কাসাব্লাঙ্কাকে আফ্রিকান চ্যাম্পিয়নস লিগ স্বাদ পাইয়ে দিয়েছিলেন।
বাকি চার দেশের কোচের সবারই জাতীয় দলের জার্সিতে আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলার অভিজ্ঞতা আছে। শুধু তাই নয়, জাতীয় দলে নিজেদের সময়ে ছিলেন সেরা খেলোয়াড়।