পাকিস্তান আয়োজিত আইসিসি চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি ক্রিকেট আসর শুরু হতে আর বাকি মাত্র ৪০ দিনের মতো। দলগুলোর প্রস্তুতি যখন শেষ পর্বে তখন পাকিস্তানের স্টেডিয়ামগুলোর কাজ চলছে খুবই ধীর গতিতে। অর্থাৎ একাধিক স্টেডিয়ামে কাজ শেষ হতে এখনও অনেকটা সময় বাকি রয়েছে। যা নিয়ে চিন্তায় রয়েছে পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ডও (পিসিবি)।
এমনিতেই গত বছর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের সময় আইসিসিকে নিয়ে প্রশ্ন উঠেছিল। কারণ যুক্তরাষ্ট্রের স্টেডিয়ামের পিচগুলোর কাজ অনেক ক্ষেত্রেই বাকিই থেকে গিয়েছিল। ফলে এমন পিচে ক্রিকেটারদের খেলতে হয়েছিল, যেখানে খেলোয়াড়দের চোট লাগতেও পারত। এই আবহে পাকিস্তানেও মাঠ এবং গ্যালারির কাজ অনেকটা বাকি থাকায় চাপে রয়েছে আইসিসিও।
ফেবরুয়ারির ১২ তারিখের মধ্যে আইসিসির হাতে স্টেডিয়ামগুলোকে দিয়ে দিতে হবে। কথা ছিল গত বছরের ডিসেম্বরের মধ্যেই কাজ শেষ হবে, কিন্তু তা হয়নি। এখনও কাজ অনেকটা বাকি রয়েছে। জানা গেছে, চলতি সপ্তাহেই আইসিসির একটি দল পাকিস্তানে আসবে। সেখানে এসে নিজেরাই কাজে তদারকি করে দেখবে ঠিক কি অবস্থায় রয়েছে। এছাড়াও দুবাইয়ের মাঠও পরিদর্শনে যাবে আইসিসির দল। তবে দুবাই নিয়ে এত মাথা ব্যথা নেই আইসিসির, কারণ প্রধান আয়োজক চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির পাকিস্তান।
আইসিসির এক সূত্র হতাশা প্রকাশ করে বলছেন, ‘এটা অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক যে স্টেডিয়ামগুলোর কাজ শেষ হওয়া থেকে এখনও অনেকটা দূরে রয়েছে। সিট, ফ্লাডলাইট ছাড়াও অন্যান্য পরিকাঠামোর অনেক কাজই এখনও বাকি রয়েছে। আউটফিল্ড, প্লেয়িং সারফেসও ঠিক নেই।’
বিশেষ করে লাহোর এবং করাচির স্টেডিয়াম নিয়ে চিন্তা রয়েছে। কারণ এখানে ড্রেসিং রুম এবং হসপিটালিটি বক্সের কাজ এখনও অনেকটাই বাকি রয়েছে, যা ১ মাসে শেষ করাও কঠিন।
আইসিসির সেই সূত্র আরও জানাচ্ছে, ‘দ্রুত মাঠের কাজগুলো শেষ করতে হবে, যদিও আবহাওয়া অনুকুল নয়। লিবিয়ান নেতা কর্নেল গাদ্দাফির নামে লাহোরের স্টেডিয়ামে এখনও প্লাস্টারের কাজও শেষ হয়নি। ড্রেসিং রুমও তৈরি নয়। আইসিসির ইভেন্টে তো আর সাধারণ ঘরকে ড্রেসিং রুম বানানো যায় না। আইসিসির নির্দিষ্ট কিছু মাপকাঠি রয়েছে, যেগুলোকে পূর্ণ করতে হয়।’
এই গাদ্দাফি স্টেডিয়ামেই হওয়ার কথা সেমিফাইনাল, ভারত যদি ফাইনালে না ওঠে তাহলে ফাইনালও হবে এখানেই। কিন্তু শেষ মূহূর্তে এত কাজের চাপ পড়ায় তারা হিমসিম খাচ্ছে। ওভারটাইম করতে হচ্ছে শ্রমিকদের। নতুন যে সব নির্মানের কথা ছিল, সেগুলো আপাতত থামিয়ে কোনওমতে ক্রিকেটার এবং দর্শকদের জন্য যে নূন্যতম মানের পরিকাঠামো, তা দেওয়ার জন্য মরিয়া পিসিবি।
যা পরিস্থিতি তাতে গোটা প্রতিযোগিতায় সৌদি আরবে নিয়ে চলে যাওয়া হতে পারে, যদি পাকিস্তান নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে স্টেডিয়াম আইসিসির হাতে না দিতে পারে। আইসিসির তরফ থেকে স্পষ্টভাবেই জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, কোনওভাবেই সেমি রেডি ভেনু, অর্থাৎ আধা তৈরি মাঠে খেলা হওয়া সম্ভব নয়। সেক্ষেত্রে আগামী সপ্তাহে পাকিস্তানে আইসিসির প্রতিনিধিদের পরিদর্শনই গোটা বিষয়টি খোলসা করতে পারে।