বাংলাদেশের কাটারমাস্টার মোস্তাফিজুর রহমানের বয়স তখন মাত্র ২০ বছর। ভারতের বিপক্ষে ম্যাচে এক পর্যায়ে নিজের রাগ নিয়ন্ত্রণ করতে না পেরে পেসার মোস্তাফিজকে কাঁধ দিয়ে জোরে ধাক্কা মেরে ফেলে দিয়েছিলেন তখনকার ৩৪ বছর বয়সী মহেন্দ্র সিং ধোনি।
এবার ঠিক একইরকম কাজ করলেন বিরাট কোহলি। অস্ট্রেলিয়ার ১৯ বছর বয়সী ব্যাটার স্যাম কনস্টাস অভিষেক টেস্টেই ভারতীয় বোলারদের শাসন করেছেন। ৩৬ বছরের কোহলি এক পর্যায়ে কনস্টাসকে ধাক্কা মেরে বসেন। যে ঘটনা গড়াতে পারে আইসিসির টেবিল পর্যন্ত।
কনস্টাসকে ধাক্কা কাণ্ডের বিষয়টি আইসিসি অফিশিয়ালরা যেন পর্যালোচনা করেন, সেই দাবি তুলেছে ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়া।
আগ্রাসী তরুণ এই অজি ওপেনারের মনোসংযোগ নষ্ট করতেই হোক কিংবা অন্য কোনো কারণে, কনস্টাসকে পিচের কাছে কাঁধে ধাক্কা মেরে ভীষণ সমালোচিত হচ্ছেন কোহলি। সোশ্যাল মিডিয়া থেকে কমেন্ট্রি বক্স, সর্বত্রই কোহলি-কনস্টাস টক্কর নিয়ে আলোচনা হচ্ছে। রিকি পন্টিং, মাইকেল ভনের মতো সাবেক ক্রিকেটাররা এই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে কোহলির বিরুদ্ধে ম্যাচ রেফারির পদক্ষেপের দাবি করেছেন।
বৃহস্পতিবার মেলবোর্ন টেস্টের প্রথম দিনে অস্ট্রেলিয়ার প্রথম ইনিংসের দশম ওভারের পর খেলোয়াড়রা পিচ ক্রস করছিলেন। সেই সময় এই ধাক্কার ঘটনা ঘটে। মোহাম্মদ সিরাজের শেষ বলে সিঙ্গেল নেওয়ার পর গ্লাভস খুলে অন্য প্রান্তে ব্যাটিং পার্টনার উসমান খাজার দিকে হাঁটতে শুরু করেন কনস্টাস। কোহলি বল কুড়িয়ে নিয়ে কনস্টাসের দিকে এগিয়ে যান।
অস্ট্রেলিয়ান ওপেনার দিক বদলাননি, ভারতীয় কিংবদন্তিও একই লাইনে হেঁটে যান। এরপর দুজনের ধাক্কা লাগে। কোহলি তখন ঘুরে দাঁড়িয়ে কনস্টাসের উদ্দেশে কিছু বাক্যবাণ ছুঁড়ে দেন। এরপর উসমান খাজা এসে পরিস্থিতি কিছুটা সামাল দেওয়ার চেষ্টা করেন। অন ফিল্ড আম্পায়াররাও কথা বলেন কোহলি এবং কনস্টাসের সঙ্গে।
ক্রিকেট আইনের ২.১২ ধারা অনুযায়ী মাঠে কোনও ক্রিকেটার, সহকারী স্টাফ, আম্পায়ার বা রেফারি, দর্শকদের সঙ্গে অনুপযুক্ত শারীরিক সংঘর্ষ ঘটালে শাস্তি হতে পারে। সেই ক্ষেত্রে অপরাধটি ইচ্ছাকৃত ছিল কিনা, তা খতিয়ে দেখা হবে।
ম্যাচ রেফারি অ্যান্ডি পাইক্রফ্ট কীভাবে ঘটনাটি দেখছেন, তার উপরে নির্ভর করছে কোহলি শাস্তি পাবেন কিনা। যদি পাইক্রফ্টের মনে হয় বিরাট লেভেল টু পর্যায়ের দোষ করেছেন, তাহলে কোহলি খাতায় যোগ হতে পারে তিন থেকে চার ডিমেরিট পয়েন্ট।
৪ ডিমেরিট পয়েন্টের ক্ষেত্রে পরের ম্যাচে কোহলিকে দেখা যাবে না। তিনি এক ম্যাচ নিষিদ্ধ হবেন। তবে ম্যাচ রেফারি যদি বলেন, এটা লেভেল ওয়ান অপরাধ, তাহলে শুধু জরিমানা করেই ছেড়ে দেওয়া হতে পারে কোহলিকে।
উল্লেখ্য, ২৪ মাসের মধ্যে ৪ বা তার বেশি ডিমেরিট পয়েন্ট হয়ে গেলে একজন ক্রিকেটারকে সাসপেন্ড করা হয়।