সে এক বিশাল কাহিনী। ২০১৭ সালে বিশ্ব ক্রিকেটের নিয়ামক সংস্থা আইসিসির পূর্ণ সদস্যের তকমা পেয়েছিল আফগানিস্তান। পুরুষদের পর নারী ক্রিকেট দলও তৈরি হয়েছিল সে দেশে। ২০২০ সালের নভেম্বর মাসে ২৫ জন ক্রিকেটারকে সরকারি চুক্তির আওতায় আনা হয়েছিল।
২০২১ সালে ওমানের বিরুদ্ধে প্রথম আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলার জন্য তৈরি হচ্ছিলেন বেনাফসা হাশিমি, নাহিদা সাপানেরা। কিন্তু সেই স্বপ্ন অধরাই থেকে গিয়েছে। সেই ম্যাচের আগেই তালিবান আফগানিস্তানের ক্ষমতা দখল করে। নারীদের অধিকার খর্ব করা হয়। ক্রিকেট খেলা তো দূর, প্রকাশ্যে নারীদের বাড়ির বাইরে বার হওয়ার বিষয়েও জারি হয় নিষেধাজ্ঞা। বাধ্য হয়ে দেশ ছেড়েছিলেন ১৯ আফগান নারী ক্রিকেটার। সঙ্গে ছিলেন তাদের পরিবার, কোচ, প্রশাসক ও আফগানিস্তান ক্রিকেট বোর্ডের সদস্যেরা। কী ভাবে দেশ ছেড়েছিলেন তারা?
আফগানিস্তান থেকে পাকিস্তান হয়ে অস্ট্রেলিয়ায় পালিয়েছিলেন ক্রিকেটারেরা। তাদের সাহায্য করেছিলেন অস্ট্রেলিয়ার সাবেক ক্রিকেটার মেল জোন্স। অস্ট্রেলিয়া ও ইংল্যান্ডের মধ্যে নারীদের অ্যাশেজ টেস্ট শুরু হওয়ার আগে একটি প্রদর্শনী ম্যাচ খেলবে আফগানিস্তান একাদশ ও ক্রিকেট উইদাউট বর্ডার্স একাদশ। তার আগে সেই অভিজ্ঞতার কথা জানিয়েছেন জোন্স।
অস্ট্রেলিয়ার সাবেক ক্রিকেটার জানিয়েছেন, মেলবোর্নের হোটেলে নিভৃতবাসে থাকাকালীন আফগানিস্তানের এই পরিস্থিতির কথা তিনি জানতে পারেন। তার মনে হয়েছিল, নারী ক্রিকেটারদের সাহায্য করা উচিত। তিনি যোগাযোগ করেছিলেন হাশিমির সঙ্গে।
হাশিমিকে একটি মেসেজ পাঠান জোন্স। তাতে লেখা ছিল, ‘আপনি আমাকে চিনতে পারবেন না। কিন্তু আপনি বা অন্য কোনও ক্রিকেটারের জীবন কি বিপন্ন? আপনারা কি আফগানিস্তান থেকে বার হতে চান?’ জবাবে হাশিমি লেখেন, ‘হ্যাঁ, চাই।’ সে কথা শুনে হোটেলে বসেই সব ব্যবস্থা সেরে ফেলেন জোন্স।
তারা প্রথমে ভেবেছিলেন, শুধু ক্রিকেটারদের আফগানিস্তান থেকে বার করবেন। কিন্তু পরে পরিস্থিতি বদলে যায়। জোন্স বলেন, ‘শুধু ১৯ জন ক্রিকেটার ছিল না, সঙ্গে তাদের পরিবার, কোচ, প্রশাসক ও আফগানিস্তান ক্রিকেট বোর্ডের সদস্যরাও ছিল। সব মিলিয়ে সংখ্যাটা দাঁড়ায় ১৩০। আমি অস্ট্রেলিয়ার প্রশাসনের সঙ্গে যোগাযোগ করি। প্রথমে ওরা বলেছিল, এত লোককে বার করে আনা যাবে না। কিন্তু শেষ পর্যন্ত আমরা তা পেরেছি।’