• ঢাকা
  • রবিবার, ১৫ ডিসেম্বর, ২০২৪, ৩০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৩ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

শেষ হলো ভারতের ‘কোহলি অধ্যায়’


সংবাদ প্রকাশ ডেস্ক
প্রকাশিত: জানুয়ারি ১৬, ২০২২, ১২:১৭ এএম
শেষ হলো ভারতের ‘কোহলি অধ্যায়’

কেপটাউনে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে টেস্ট সিরিজ ২-১ ব্যবধানে পরাজয়ের একদিন পর ভারতের টেস্ট দলের অধিনায়কত্ব ছেড়েছেন অধিনায়ক বিরাট কোহলি।

কোহলি ২০১৫ সালের শুরুর দিকে ভারতের টেস্ট অধিনায়কের দায়িত্ব নেন। যখন মহেন্দ্র সিং ধোনি অস্ট্রেলিয়ায় অবসরের ঘোষণা করেছিলেন তখন থেকেই এই দায়িত্ব পালন করছেন কোহলি।

কোহলির আকস্মিক ঘোষণা তার এবং ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডের মধ্যে একটি সাম্প্রতিক মনোমালিন্যের ফলাফল হিসেবেই ধরা যায়। যা গত বছর বিশ্বকাপের আগে তার টি-টোয়েন্টি অধিনায়কের দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি নেওয়া থেকে শুরু হয়েছিল। এরপর ডিসেম্বরের শুরুতে বিসিসিআই কোহলিকে ওডিআই অধিনায়কত্ব থেকেও সরিয়ে দেয়। সাদা বলের দায়িত্ব রোহিত শর্মার হাতে তুলে দেয়।

একদিন পরে বিসিসিআই সভাপতি সৌরভ গাঙ্গুলি বলেছিলেন যে তিনি কোহলিকে টি-টোয়েন্টি অধিনায়কের পদ থেকে সরে যেতে মানা করেছিলেন। কিন্তু কোহলি গাঙ্গুলির বিরোধিতা করে বলেছিলেন যে তার পদত্যাগের সিদ্ধান্তকে বোর্ড ভালোভাবে গ্রহণ করেছে এবং তাদের প্রতিক্রিয়া এই সিদ্ধান্তের বিষয়ে ইতিবাচক ছিল। এবং তাকে তার সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনা করতে বলা হয়নি।

একই সংবাদ সম্মেলনে কোহলি হতাশা প্রকাশ করে বলেছেন, দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে টেস্ট স্কোয়াড বাছাই করার বৈঠকের মাত্র ৯০ মিনিট আগে তাকে ওডিআই অধিনায়কের পদ থেকে অপসারণের বিষয়ে বলা হয়েছিল এবং এটা নিয়ে তার সাথে পূর্বে কোনো আলাপ হয়নি।

বিতর্ক আরও দীর্ঘায়িত হয় যখন প্রধান নির্বাচক চেতন শর্মা ৩১ ডিসেম্বর দক্ষিণ আফ্রিকা সফরের জন্য ওডিআই স্কোয়াড ঘোষণা করার সময় বলেছিলেন যে "মিটিংয়ে উপস্থিত প্রত্যেকে" কোহলিকে তার সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনা করতে বলেছিলেন যখন তিনি টি-টোয়েন্টি অধিনায়কের পদ থেকে সরে দাঁড়ান।

আজ ১৫ জানুয়ারি শনিবার টুইটারে কোহলি তার টেস্ট অধিনায়কের পদ থেকে সরে যাওয়া প্রসঙ্গে এক দীর্ঘ টুইট করেন। তিনি লেখেন, "দলকে সঠিক পথে নিয়ে যাওয়ার জন্য ৭ বছর কঠোর পরিশ্রম এবং নিরলস অধ্যবসায় করেছি। আমি সম্পূর্ণ সততার সাথে কাজটি করেছি এবং সেখানে কিছুই বাদ রাখিনি। কোনো এক পর্যায়ে এসে সবকিছুই থেমে যায়। ভারতের টেস্ট অধিনায়ক হিসেবে আমার জন্য এটা এখন সময়। যাত্রাপথে অনেক উত্থান-পতন হয়েছে, কিন্তু কখনোই প্রচেষ্টার অভাব বা বিশ্বাসের অভাব হয়নি। আমি সবসময় বিশ্বাস করেছি। আমি যা কিছু করি তাতে আমার ১২০ শতাংশ দেওয়ার চেষ্টা থাকে। এবং যদি আমি তা করতে না পারি, আমি জানি এটি করা আমার জন্য সঠিক কাজ নয়। আমি সম্পূর্ণ স্বচ্ছ এবং আমি আমার দলের সাথে অসৎ হতে পারি না।

"আমি বিসিসিআইকে ধন্যবাদ জানাতে চাই আমাকে এত দীর্ঘ সময়ের জন্য আমার দেশকে নেতৃত্ব দেওয়ার সুযোগ দেওয়ার জন্য এবং আরও গুরুত্বপূর্ণ হলো সেই সমস্ত সতীর্থদের ধন্যবাদ দেওয়া যারা প্রথম দিন থেকেই দলের জন্য আমার লক্ষ্য পূরণ করে গেছেন এবং কখনও হাল ছেড়ে দেননি। যে কোনো পরিস্থিতিতে। আপনারা এই যাত্রাটিকে এত স্মরণীয় এবং সুন্দর করে তুলেছেন। রবি ভাই (রবি শাস্ত্রী) এবং সমর্থন গোষ্ঠী আমাদের টেস্ট ক্রিকেটে ধারাবাহিকভাবে উপরের দিকে নিয়ে যাওয়ার যে যন্ত্র, তার ইঞ্জিন হিসেবে কাজ করেছেন। সবশেষে, এমএস ধোনিকে অনেক ধন্যবাদ যিনি আমাকে একজন অধিনায়ক হিসেবে বিশ্বাস করেছেন এবং আমাকে একজন সক্ষম ব্যক্তি হিসেবে দেখেছেন যে ভারতীয় ক্রিকেটকে এগিয়ে নিয়ে যেতে পারে।"

টেস্ট অধিনায়ক হিসেবে কোহলি বেশ সফল ছিলেন। কারণ তিনি আইসিসি র‌্যাঙ্কিংয়ে দলকে এক নম্বরে পৌঁছে দিয়েছিলেন এবং বেশ কিছু স্মরণীয় বিদেশের মাটিতে জয়ে দলকে নেতৃত্ব দিয়েছেন। ২০২১ সালে তিনি সাউদাম্পটনে বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালে ভারতকে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন। সামগ্রিকভাবে, তিনি ৬৮টি ম্যাচে ৪০টিতে জয় পেয়েছেন। বাকি ২৮টির মধ্যে ১১টি ড্র এবং ১৭টি পরাজয়।

সংখ্যার দিক থেকে তিনি ছিলেন ভারতের সেরা অধিনায়ক। ধোনি (৬০টি ম্যাচে ২৭টি জয়) এবং গাঙ্গুলি (৪৯টির মধ্যে ২১টি জয়) তালিকার পরেই রয়েছেন।
 

Link copied!