এজন্যই ক্রিকেটকে বলা হয় ভদ্রলোকের খেলা। ঠিক এ কারণেই 'স্পিরিট অব ক্রিকেট' কথাটি এখনো বেঁচে আছে ক্রিকেটে। আধুনিক ক্রিকেটে যুক্ত হয়েছে ডিআরএস প্রযুক্তি, যার ফলে আম্পায়ার আউট দিলেও তা রিভিউ করতে পারেন ব্যাটসম্যানরা। আর নিজে আউট হয়েছেন বুঝতে পারলেও অনেকেই ছাড়তে চান না পিচ। কিন্তু এবার উল্টো কাজটিই করেছেন ভারতের ব্যাটার পুনম রাউত। আম্পায়ার আউট না দিলেও, আউট হয়েছেন বুঝতে পেরে মাঠ থেকে বেরিয়ে যান তিনি।
ঘটনাটি ঘটে অস্ট্রেলিয়ার সোফি মোলিনেক্সের বলে। ভারতের পুনম রাউতের ব্যাটের খুব কাছ দিয়ে বল পৌঁছে যায় উইকেটরক্ষক অ্যালিসা হেইলির হাতে। বলটি ব্যাট স্পর্শ করেছে কি না তা নিয়ে তৈরি হয় ধোঁয়াশা। বোলার ও ফিল্ডাররা আম্পায়ারের কাছে আউটের আবেদন করলে তিনি মাথা নেড়ে নট আউটের সিদ্ধান্ত জানিয়ে দেন। কিন্তু মাঠ ছেড়ে বেরিয়ে যান পুনম।
২০০৩ সালের বিশ্বকাপে অস্ট্রেলিয়ার ওপেনার অ্যাডাম গিলক্রিস্টকে দেখা গিয়েছিল আম্পায়ার নট আউট দেওয়া সত্ত্বেও মাঠ ছেড়ে বেরিয়ে যেতে। উইকেটরক্ষক কুমার সাঙ্গাকারার হাতে ক্যাচ দিয়েছিলেন তিনি। আম্পায়ারের মনে হয়েছিল আউট নন গিলক্রিস্ট। কিন্তু তার মনে হয়েছিল ব্যাটে বল লেগেছে। বেরিয়ে যান তিনি। শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে সেই সেমিফাইনালে যদিও জিততে অসুবিধা হয়নি অস্ট্রেলিয়ার।
২০১১ সালের বিশ্বকাপে আম্পায়ার আউট না দিলেও মাঠ ছেড়ে বেরিয়ে গিয়েছিলেন শচীন টেন্ডুলকার। চিপকের মাঠে বল করছিলেন রবি রামপল। শচীনের গ্লাভসে বল ছুঁয়ে উইকেট রক্ষকের হাতে জমা পড়ে। আম্পায়ার যদিও বুঝতে পারেননি। তিনি আউট দেননি। তবে আম্পায়ারের সিদ্ধান্তের জন্য অপেক্ষা করেননি শচীন। মাঠ ছেড়ে বেরিয়ে গিয়েছিলেন তিনি। সেই ম্যাচে জিতেছিল ভারত।
প্রায় একই রকম ঘটনা ঘটে বিরাট কোহলীর সঙ্গেও। ২০১৯ সালের বিশ্বকাপে পাকিস্তানের বিপক্ষে ব্যাট করার সময় কোহলী মনে করেন তার ব্যাট ছুঁয়ে বল জমা পড়েছে উইকেটরক্ষকের হাতে। মাঠ ছেড়ে বেরিয়ে যান তিনি। পরে স্নিকো মিটারে দেখা যায় ব্যাটে বল লাগেনি। সাজঘর থেকে কোহলী বোঝানোর চেষ্টা করেন ব্যাটের গ্রিপে আওয়াজ হয়েছিল তার। সেটাতেই ভুল বুঝেছিলেন তিনি।
শুক্রবার (১ অক্টোবর) শচীন, কোহলীদের তালিকায় যুক্ত হলেন পুনম। তবে তার বেরিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্তে অবাক অস্ট্রেলিয়া। শর্ট লেগে দাঁড়িয়ে থাকা অস্ট্রেলিয়ার ক্রিকেটার বেথ মুনি বলেন, 'আমি পুনমের জায়গায় থাকলে কখনই এভাবে বেরিয়ে যেতাম না।'
১৬৫টি বল খেলে ৩৬ রান করে ফিরে যান পুনম। বৃষ্টির জন্য খেলা বন্ধ হওয়ার আগে ভারতের স্কোর পাঁচ উইকেট হারিয়ে ২৭৬।