• ঢাকা
  • রবিবার, ২৪ নভেম্বর, ২০২৪, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬
বিপিএল 

নাটকীয় ম্যাচে সাকিবদের হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন কুমিল্লা


সংবাদ প্রকাশ ডেস্ক
প্রকাশিত: ফেব্রুয়ারি ১৮, ২০২২, ০৯:৫১ পিএম
নাটকীয় ম্যাচে সাকিবদের হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন কুমিল্লা
ছবি সংগৃহীত

মিরপুরের আকাশে আজ সব আলো কেড়ে নিল কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সে। বিপিএলের ফাইনাল ম্যাচে হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ে শেষ পর্যন্ত মাত্র ১ রানের জয় পেল ইমরুল কায়েসের কুমিল্লা। আর তাতেই বিপিএলের তৃতীয় শিরোপা ঘরে তুলল মোস্তাফিজ-লিটনরা।  
 
শুক্রবার (১৮ ফেব্রুয়ারি) মিরপুর শেরেবাংলা ক্রিকেট স্টেডিয়ামে ফাইনাল খেলায় টস জিতে প্রথমে ব্যাট করে নির্ধারিত ২০ ওভারে ৯ উইকেট হারিয়ে ১৫১ রান করে কুমিল্লা। দলের পক্ষে সর্বোচ্চ ৫৭ রান করেন ক্যারিবিয় অলরাউন্ডার সুনীল নারাইন। 

জবাবে লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে নির্ধারিত ২০ ওভার খেলে ৮ উইকেট হারিয়ে ১৫০ রানে থেমেছে বরিশালের ইনিংস। ব্যাটের পর বল হাতেও ৪ ওভারে মাত্র ১৫ রানে ২ উইকেট নিয়ে কুমিল্লার জয়ের নায়ক সুনীল নারাইন।

১৫২ রানের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে শুরুটা একদম ভালো হয়নি বরিশালের। এবারের বিপিএলে ঝড় তোলা ব্যাটার মুনিম শাহরিয়ার নিজের নামের পাশে কোন রান করার আগেই বিদায় নেন। এরপর ব্যাট করতে নেমে একাদশে সুযোগের সদ্ব্যবহার করেন সৈকত আলী। ক্যারাবিয়ান ব্যাটিং দানব ক্রিস গেইলকে একপাশে দর্শক বানিয়ে ব্যাট হাতে ঝড় তোলেন এই ব্যাটার। পাওয়ার প্লেতে স্কোর বোর্ডে ৫১ রান তোলে এই জুটি।

খানিক পর টুর্নামেন্টে নিজের প্রথম ফিফটির দেখা পান সৈকত। মাত্র ২৬ বলে অর্ধশতক পূর্ণ করেন তিনি। যদিও ইনিংসটাকে পরে আর টেনে নিয়ে যেতে পারেননি। বাঁহাতি স্পিনার তানভীরের বলে ইমরুলের হাতে ক্যাচ দিয়ে সাজ ঘরে ফিরে যান এই ব্যাটার। আউট হবার আগে ১১টি চার ও ১টি ছয়ের মারে ৩৪ বলে খেলেন ৫৮ রানের ইনিংস।

৭৯ রানে সৈকত ফিরে গেলে দলের হাল ধরেন গেইল। তবে ক্রিজে থিতু হতে পারেননি তিনি। ইনিংসের ১৩তম ওভারে গেইলকে আউট করেন তারই স্বদেশি নারাইন। লেগবিফোরের ফাঁদে পড়ে সাজঘরে ফেরার আগে করেন ৩১ বলে ৩৩ রানে। যেখানে ১টি চারের সঙ্গে ছক্কা হাঁকান ২টি।

অধিনায়ক সাকিব অবশ্য আজ সুবিধা করতে পারেননি, মুস্তাফিজ দারুণ এক ক্যাচ নিয়ে ফেরান সাকিবকে। ৭ বলে ৭ রান করেন সাকিব।

সাকিবের আউটের পর মোমেন্টাম ফিরে পায় কুমিল্লা। নুরুল হাসান সোহান রান আউটে কাটা পড়েন ১৪ রানে। সুবিধা করতে পারেন ব্রাভো আর নাজমুল হোসেন শান্ত। ব্রাভো ১ আর শান্ত আউট হন ১৫ বলে ১২ রানে। ৭ উইকেট হারানো বরিশালের শেষ ওভারে জয়ের জন্য প্রয়োজন পড়ে ১০ রান। শেষ বলে ৩ রান দরকার পড়লে দ্বিতীয় রান নিতে গিয়ে রান আউটে কাটা পড়েন মুজিব উর রহমান। ১ রানে রোমাঞ্চকর জয় শিরোপা ঘরে তোলে কুমিল্লা।

এ নিয়ে বিপিএলে ৮ মৌসুমে ৩ বার ফাইনাল খেলে তিনবারই শিরোপা জিতল কুমিল্লা। ব্যাট হাতে ২৩ বলে ৫৭ রানের ইনিংসের পর বোলিংয়ে ৪ ওভারে মাত্র ১৫ রান দিয়ে ২ উইকেট নেন কুমিল্লার সুনীল নারাইন।

ফাইনালে ম্যাচসেরা হয়েছেন সুনীল নারাইন। আর চতুর্থবারের মত টুর্নামেন্ট সেরা হয়েছেন বরিশালের অধিনায়ক সাকিব আল হাসান।

এর আগে প্রথম ইনিংসে লিটন দাসের সঙ্গে ব্যাটিং করতে আসেন ক্যারিবিয় অলরাউন্ডার সুনীল নারাইন। তৃতীয় ওভারের মধ্যেই তারা তুলে ফেলে ৪০ রান। কিন্তু সাকিবের গুড লেন্থের বল খেলতে গিয়ে ৬ বলে ৪ রান করা লিটন ক্লিন বোল্ড হয়ে বিদায় নেন।

পাওয়ার প্লের পঞ্চম ওভারেই ২১ বলে নারাইন তুলে নেন এবারের বিপিএলে ব্যাক টু ব্যাক ফিফটি। পরের ওভারে নারাইন বিদায় নেন ২৩ বলে ৫৭ রান করে।  

নারাইনের বিদায়ের পর আবারও আফগান স্পিনার মুজিবকে বোলিংয়ে আনেন সাকিব। অধিনায়কের আস্থার মান রাখেন এই আফগান স্পিনার। পরে ৩ ওভারে স্পেলে ফিরিয়েছেন ফাফ ডু প্লেসি (৪) আর আরিফুল হককে (০)।

তার আগে ব্রাভোর দুর্দান্ত এক থ্রোতে রান আউটে কাটা পড়েন মাহমুদুল হাসান জয়। ৭ বল খেলে ৮ রানে ফেরেন তিনি। বল হাতেও সাফল্য পেয়েছেন ব্রাভো। ইমরুলকে আউট করেন ব্যক্তিগত ১২ রানে। উড়তে থাকা কুমিল্লা হঠাৎ ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়।

৯৫ রান তুলতেই ৬ উইকেট হারানো দলের হাল ধরেন মঈন আলি আর আবু হায়দার রনি। তাদের সপ্তম উইকেটে ৫২ বলে ৫৪ রানের পার্টনারশিপে চ্যালেঞ্জিং সংগ্রহ পায় কুমিল্লা। যদিও রনির ব্যাটিং একেবারেই টি-টোয়েন্টি সূলভ ছিল না। কিন্তু তার ২৭ বলে ১৯ রান কুমিল্লার ইনিংসে অনেক কার্যকর ভূমিকা রাখে। আর মঈন আলী করেন ৩২ বলে ৩৮ রান।

ফলে নির্ধারিত ২০ ওভার শেষে ৯ উইকেট হারিয়ে ১৫১ রানের সংগ্রহ পেয়েছে কুমিল্লা। বরিশালের মুজিব ও শফিকুল নেন ২টি করে উইকেট। এছাড়া সাকিব ও ব্রাভো নেন একটি করে উইকেট।

Link copied!