বিপিএলের ইতিহাসে দ্রুততম সময়ে ফিফটির রেকর্ড নিজের করে নিলেন ক্যারিবিয় অলরাউন্ডার সুনীল নারাইন। তার ১৩ বলে ফিফটির রেকর্ডের পর ডু প্লেসিস ও মঈন আলীর ব্যাটিং ঝোড়ে চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্সকে হারিয়ে ফাইনালে জায়গা করে নিয়েছে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স। ফাইনালে মোস্তাফিজদের প্রতিপক্ষ সাকিব আল হাসানের ফরচুন বরিশাল।
বুধবার (১৬ ফেব্রুয়ারি) মিরপুর শেরে বাংলা ক্রিকেট স্টেডিয়ামে বিপিএলের দ্বিতীয় কোয়ালিফায়ার ম্যাচে নির্ধারিত ২০ ওভারের আগেই ১৪৮ রানে অলআউট হয়ে যায় আফিফ হোসেনের চট্টগ্রাম। জবাবে মাত্র ১২ ওভার ৫ বলে ৭ উইকেট হাতে রেখে দুর্দান্ত জয় তুলে নিয়েছে ইমরুল কায়েসের নেতৃত্বাধীন কুমিল্লা।
রান তাড়া করতে নেমে উদ্ভোধনী জুটিতে লিটন দাসের সঙ্গে ব্যাট করতে নামেন নারাইন। ইনিংসের প্রথম বলেই লিটন দাস আউট হয়ে গেলেও চট্টগ্রামের বোলিং ইউনিটকে রীতিমত উড়িয়ে দেন এই ক্যারিবিয়ান। শরিফুলের প্রথম ওভারে ২০ রানের পর মেহেদি হাসান মিরাজের পরের ওভার থেকে আসে ২৩ রান। তিন নম্বর ওভারে আফিফের বোলিংয়ে কায়েস দেখেশুনে ব্যাট চালালে স্ট্রাইক পাননি নারাইন। কিন্তু চতুর্থ ওভারের চতুর্থ বলে এক ছক্কা আর শেষ বলে চারে মেরে বিপিএলে দ্রুততম ফিফটির রেকর্ড থেকে মাত্র একটা চারের দূরত্বে চলে যান।
পাওয়ার প্লের শেষ ওভারে চট্টগ্রামের পেসার মৃত্যুঞ্জয়ের প্রথম বলেই ছক্কা হাঁকিয়ে ক্যারিবিয় অলরাউন্ডার নারাইন ভেঙ্গে দেন বিপিএলে ১০ বছর আগের রেকর্ড। ২০১২ সালে বরিশাল বুলসের হয়ে পাকিস্তানি ব্যাটার আহমেদ শেহজাদের করা ১৬ বলের ফিফটিই ছিল এতদিন দ্রুততম ফিফটি।
এদিন ব্যাট হাতে ৫ চারের সঙ্গে ৬টি বিশাল ছক্কায় সাজানো তার ৫৭ রানের ইনিংস খেলেন নারাইন। এরপর অধিনায়ক ইমরুল কায়েসের ২২, ফাফ ডু প্লেসিসের ৩০ ও মঈন আলীর ঝড়ো ইনিংসের উপর ভর করে মাত্র ১২ ওভার ৫ বলে ৭ উইকেট হাতে রেখে দুর্দান্ত জয় তুলে নিয়েছে ইমরুল কায়েসের নেতৃত্বাধীন কুমিল্লা। আগামী শুক্রবার (১৮ ফেব্রুয়ারি) মিরপুর শেরে বাংলা ক্রিকেট স্টেডিয়ামে ফাইনালে সাকিবদের প্রতিপক্ষ মোস্তাফিজের কুমিল্লা।
এর আগে ম্যাচের শুরুতে চট্টগ্রাম ব্যাটিংয়ে নেমে পেটের পীড়া কাটিয়ে ফেরা চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্সের ওপেনার উইল জ্যাকস ও জাকির হোসেন দারুণ সূচনা এনে দেন। তবে শুরুর তালটা বেশিক্ষণ ধরে রাখতে পারেননি এই দুই ব্যাটার। ২২ বলে তাদের উদ্বোধনী জুটি থেকে আসে ৩১ রান। শহিদুলের বলে ৯ বলে ১৬ রান করা জ্যাকস আউট হলে ভাঙে এই জুটি। জাকির অবশ্য দেখে শুনে খেলতে গিয়েই ফেরেন সাজঘরে। মঈনের প্রথম শিকারে যখন পরিণত হন তিনি, তখন নামের পাশে ১৯ বলে ২০ রান।
দুই ওপেনারের মাঝে আরও একটি বড় উইকেট হারায় চট্টগ্রাম। আগের ম্যাচটি জেতানোর নায়ক চ্যাডউইক ওয়ালটন ফেরেন মাত্র ২ রান করে। এরপর আফিফ হোসেন (১০), শামীম পাটোয়ারীও (০) সুবিধা করতে পারেননি মঈনের সামনে। এতে দলীয় স্কোর পঞ্চাশ ছুঁতেই ৫ উইকেট হারিয়ে বসে চট্টগ্রাম। এতে বড় সংগ্রহের স্বপ্ন ফিকে হয়ে যায়।
ষষ্ঠ উইকেট জুটিতে অবশ্য দলকে টেনে তোলেন মেহেদী হাসান মিরাজ আর আকবর আলি। ৪০ বলের জুটিতে দুই জন যোগ করেন ৬১ রান। দারুণ ব্যাট করতে থাকা আকবর রনিকে তুলে মারতে গিয়ে ফিরতি ক্যাচ দিয়ে সাজঘরের পথ ধরেন ২০ বলে ৩৩ রান করে। যেখানে সমান ২টি করে চার-ছক্কা মারেন তিনি। আকবরের আউটের পর বেনি হাওয়েল রান আউটে কাটা পড়েন ৩ রান করে।
শেষদিকে ৩টি চার ও ২টি ছয়ে মিরাজের ৩৮ বলে ৪৪ রানের ইনিংসের সঙ্গে মৃত্যুঞ্জয়ের ৯ বলে ১৫ রানের কল্যাণে নির্ধারিত ওভারের আগেই অলআউট চট্টগ্রাম ১৪৮ রানের সংগ্রহ পায়।
কুমিল্লার হয়ে তিন ওভারে ২০ রান দিয়ে ৩ উইকেন নেন মঈন। শহিদুল ৩ উইকেট নিতে খরচ করেন ৩৩ রান।
ম্যাচে ১৬ বলে ৫৭ রান করে ম্যাচসেরা হয়েছেন কুমিল্লার সুনীল নারাইন।