• ঢাকা
  • রবিবার, ২৪ নভেম্বর, ২০২৪, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

নাঈমের ৬ উইকেট, শ্রীলঙ্কা থামল ৩৯৭ রানে


সংবাদ প্রকাশ ডেস্ক
প্রকাশিত: মে ১৬, ২০২২, ০৪:০৩ পিএম
নাঈমের ৬ উইকেট, শ্রীলঙ্কা থামল ৩৯৭ রানে
ছবি সংগৃহীত

বাংলাদেশ দলের নিয়মিত অফস্পিনার মেহেদি হাসান মিরাজ ইনজুরিতে পড়ায় একাদশে জায়গা পেয়েছিলেন তরুণ নাঈম হাসান। সুযোগ পেয়েই নিজের ক্যারিয়ারের তৃতীয় পাঁচ উইকেটের দেখা পেয়েছেন ২১ বছর বয়সী এই ক্রিকেটার। তার ক্যারিয়ার সেরা ৬ উইকেটে সফরকারী শ্রীলঙ্কার ইনিংস থেমেছে ৩৯৭ রানে।

শেষ ব্যাটার হিসেবে ম্যাথিউস যখন সাজঘরের পথ ধরেন তখন তার নামের পাশে ১৯৯ রান। নিজের ক্যারিয়ারের দ্বিতীয় ডাবল সেঞ্চুরি তুলে নেয়ার আক্ষেপ হয়ত সারাজীবন পোড়াবে সাবেক এই লঙ্কান অধিনায়ককে।

বাংলাদেশের পক্ষে নাঈমের ছয় উইকেটের সঙ্গে সাকিব আল হাসান নিয়েছেন ৩ উইকেট। বাকি উইকেটটি পেয়েছেন আরেক স্পিনার তাইজুল ইসলাম।

এর আগে টস জিতে প্রথমে ব্যাটিংয়ের সিদ্ধান্ত নেন শ্রীলঙ্কান অধিনায়ক দিমুথ করুনারত্নে। শুরুতে বাংলাদেশি পেসার শরিফুল ইসলাম এবং খালেদ আহমেদের বিপক্ষে দেখেশুনে শুরু করেন দিমুথ করুনারত্নে আর ওসাদা ফার্নান্ডো। টাইগার পেসারদের টেক্কা দিয়ে প্রথম ৭ ওভারে ২২ রান করে বেশ ভালোভাবেই কাটিয়ে দেন তারা।

এরপর টাইগার অধিনায়ক মুমিনুল হক বল তুলে দেন তরুণ অফস্পিনার নাঈমের হাতে। নিজের পঞ্চম বলেই শ্রীলঙ্কার অধিনায়ক করুনারত্নেকে লেগ বিফোরের ফাঁদে ফেলেন এই বোলার। তার কুইকার বল করুনারত্নের প্যাডে লাগলে জোড়ালো আবেদন করেন। একটু সময় নিলেও আম্পায়ার পরে আঙুল তুলে দেন। ফলে ১৭ বলে মাত্র ৯ রানেই সাজঘরে ফেরেন লঙ্কান অধিনায়ক।

এরপর আরেক ওপেনার ফার্নান্ডো দলকে এগিয়ে নেন কুশল মেন্ডিসকে সঙ্গে নিয়ে। ৩ বাউন্ডারি ও ১ ছক্কা হাঁকিয়েও ফেলেছিলেন ফার্নান্ডো। কিন্তু এই ব্যাটারকেও ফেরান নাঈম। উইকেটের পিছনে লিটন দাসের কাছে ক্যাচ দিয়ে ফেরার আগে ৭৬ বলে ৩৬ রান করেন ফার্নান্ডো।

এরপর কুশল মেন্ডিস ও ম্যাথিউস উইকেটে থিতু হন। পুরো দ্বিতীয় সেশনে বাংলাদেশের বোলারদের সামলে তুলে নেন নিজেদের ব্যক্তিগত ফিফটি। চা বিরতির আগে ইনিংসের ৪৩তম ওভারের দ্বিতীয় বলে মেন্ডিস সিঙ্গেল নিয়ে তুলে নেন নিজের ক্যারিয়ারের ১৩তম হাফ সেঞ্চুরি। অন্যদিকে ম্যাথিউস ক্যারিয়ারের ৩৮তম ফিফটি তুলে নেন খালেদ আহমেদের করা বলে রান নিয়ে।

তৃতীয় সেশনে দলীয় ১৫৮ রানে তাইজুলের স্পিন ঘুর্ণিতে নাঈম হাসানের হাতে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন মেন্ডিস। ফলে ম্যাথিউসের সঙ্গে ৯২ রানের জুটির সমাপ্তি ঘটে। এরপর ধনঞ্জয়া ৬ রানে সাকিবের বলে দ্রুত বিদায় নিলেও একপ্রান্ত আগলে ধরে দলকে বড় সংগ্রহের দিকে নিয়ে যেতে থাকেন ম্যাথিউস। পঞ্চম উইকেট জুটিতে দীনেশ চান্দিমালের সঙ্গে অপরাজিত ৭৫ রানের জুটি গড়ে ৪ উইকেটে ২৫৮ রানে স্বস্তিতেই দিন শেষ করে লঙ্কানরা। 

দ্বিতীয় দিনে ম্যাথিউসের ১১৪ রানের সঙ্গে চান্দিমাল খেলা শুরু করেন ব্যক্তিগত ৩৪ রানে। দিনের প্রথম ঘন্টা বাংলাদেশি বোলারদের ওপর চড়াও হয়েই খেলছিলেন তারা। এর মধ্যে চান্দিমাল তার ক্যারিয়ারের ২১তম ফিফটিও তুলে নিয়ে হাত খুলে খেলছিলেন। সেখানেই বোলিংয়ে এসে একই ওভারে জোড়া উইকেট তুলে নিয়েছেন অফস্পিনার নাঈম হাসান।

তার স্পিন ভেলকিতে চান্দিমাল ৬৬ রান করে লেগ বিফোরের ফাঁদে পড়ার পর উইকেটকিপার ব্যাটার নিরোশান ডিকওলা একই ওভারে ফেরেন ব্যক্তিগত ৩ রান করে। নাঈমের খাটো লেন্থের বল পিছনে সরে মারতে গিয়ে সোজা বোল্ড হয়ে যান এই বাঁহাতি। 

এরপর মধ্যান্থ বিরতির পর প্রথম ওভারেই সাকিবের ব্যাক টু ব্যাক উইকেট। ওভারের দ্বিতীয় বলে দুর্দান্ত এক ডেলিভারিতে রমেশ মেন্ডিসকে (১) বোল্ড করেন সাকিব। পরের বলেই কুইকার লেন্থে বল করেন সাকিব। তাতে লাসিথ এম্বুলদেনিয়ার প্যাডে বল লাগলে লেগ বিফোরের আবেদন করে বাংলাদেশ। আম্পায়ার তার আবেদনে সাড়া দিয়ে আঙুল তুলে দেন। কিন্তু শ্রীলঙ্কা রিভিউ নিয়েও কোনো লাভ হয়নি। 

এরপর ম্যাথিউস-ফার্নান্দো জুটি ২৩.৩ ওভার ব্যাট করে দলের সংগ্রহে ৪৭ রান যোগ করেন। মাঝে বিশ্ব ফার্নান্ডো মাথায় আঘাত পেয়ে প্যাভিলিয়নে ফিরে আসেন। এরপর শেষ ব্যাটার আসিথা ফার্নান্ডোকে নিয়ে নিজের ডাবল সেঞ্চুরির দিকেই এগিয়ে যান ম্যাথিউস। তবে আসিথাকে (১) সরাসরি বোল্ড করে নিজের ক্যারিয়ারের তৃতীয় পাঁচ উইকেট তুলে নেন নাঈম।  

ফলে আবারও ব্যাটিংয়ে আসেন বিশ্ব ফার্নান্ডো। কিন্তু ১৫৩তম ওভারের শেষ বলে ব্যক্তিগত ১৯৯ থেকে ডাবল সেঞ্চুরির জন্য বড় শট খেলতে গিয়েছিলেন ম্যাথিউজ। কিন্তু নাইম হাসানের সেই ডেলিভারি তার ব্যাটের ভেতরের কানায় লেগে চলে যায় সাকিব আল হাসানের হাতে। ফলে ১৯৯ রানে থামতে হয় ম্যাথিউজকে।

নয় ঘণ্টা ৩৮ মিনিটের ম্যারাথন ইনিংসে ৩৯৭ বল খেলে ১৯ চার ও ১ ছয়ের মারে এ ইনিংস সাজিয়েছেন ম্যাথিউজ।

Link copied!