বিদ্যানন্দের প্রতিষ্ঠাতা কিশোর কুমার দাসের ফেসবুক লাইভটি দেখলাম। কিছু বিষয় তিনি পরিষ্কার করেছেন। আমি যা জানলাম এবং বুঝলাম—
১. তাদের সোশাল মিডিয়া পেজগুলো কোনো কমার্শিয়াল এজেন্সি দিয়ে পরিচালিত হয় না, তাদের ভলান্টিয়াররাই চালান। ( সুতরাং এখানে ভুলত্রুটির সম্ভাবনা বেশি থাকবেই। )
২. তাদের কর্মীবাহিনীর বড় অংশ একেবারেই কিশোর তরুণ স্বেচ্ছাসেবী, তারা এভাবেই রাখতে চান।
৩. বিদ্যানন্দ বিভিন্ন ধরণের কার্যক্রম নেওয়ার কারণ, তারা যে তরুণ যা করতে ভালোবাসে তাকে সেটা করতেই অনুপ্রাণিত করেন। তাই বিভিন্ন ধরণের কাজে তাদেরকে দেখা যায়।
৪. তারা ডোনারদের কাছে স্বচ্ছতা নিশ্চিত করতে গিয়ে ডোনারের স্পনসর করা প্রোগ্রামে ডোনারদের আমন্ত্রণ জানান, সুবিধাভোগীদের ফোন নম্বরসহ সকল তথ্য ডোনারদের সরবরাহ করেন। (আমি যেহেতু কোনোদিন বিদ্যানন্দকে কোনো চাঁদা দেইনি, তাই আমি এ বিষয়ে মন্তব্য করছি না।)
৫. তাদের অধিকাংশ জায়গা, বিশেষ করে পাহাড়ের জায়গাগুলো অনাথালয় তৈরির উদ্দেশ্যেই লিজ নেওয়া। সেই অনাথালয়গুলোতে শুধুমাত্র পাহাড়ি জনগোষ্ঠীর বাচ্চারাই থাকেন এবং অনাথালয়গুলোর ৯৫ ভাগ কর্মচারি স্থানীয় পাহাড়ি মানুষ। জায়গাগুলোর চুক্তিতে পরিষ্কারভাবে লেখা আছে যে অনাথালয় ছাড়া অন্য কোনো উদ্দেশ্যে (যেমন পর্যটন ইত্যাদি) জায়গা ব্যবহার করা যাবে না বা করলে চুক্তি বাতিল হবে।
৬. তারা রাজনৈতিক নেতাদের নাম এড়াতে কিছু নির্দিষ্ট নাম (মজিদ চাচা ইত্যাদি) ঘুরে ফিরে ব্যবহার করেন।
৭. তাদের অডিট রিপোর্ট নিয়ে কারো কোনো সন্দেহ থাকলে যেকোনো জায়গায় যে কেউ সেটি চ্যালেঞ্জ করতে পারবেন।
আমার কনক্লুশন
আমার কাছে মনে হয়েছে প্রতিষ্ঠানটি খুব দ্রুত বড় হওয়ার কারণে, বড় প্রতিষ্ঠান ম্যানেজমেন্টের যে দক্ষতা সেটি তারা এখনও পুরোপুরি অর্জন করতে পারেননি। তাদের উন্নতির অনেক সুযোগ রয়েছে।
একটি প্রতিষ্ঠান তৈরি করা অনেক কঠিন কাজ। বাঙালি সাধারণত প্রতিষ্ঠান গড়তে পারে না। শুধুমাত্র ট্রল করে একটি প্রতিষ্ঠানকে ধ্বংস করে ফেলার পক্ষপাতি আমি নই।
বিদ্যানন্দকে গত কয়েক বছর ধরেই কঠিন সময় পার করতে হচ্ছে। তারা সর্বদা আতশ কাচের নিচে আছেন। আমি আশা করি, এই আতশ কাচের নিচে থাকা তাদেরকে আরো দক্ষ করবে, আরো স্বচ্ছ করবে। যে ভুলত্রুটি তারা করছেন, সেগুলো তারা দ্রুত কাটিয়ে উঠবেন। বিদ্যানন্দের প্রতি আমার শুভেচ্ছা থাকল।