এই কণ্ঠশিল্পীকে চেনেন কি? যে তাকে পরিচালনা করছে তাকে চেনেন বিলক্ষণ। ওই কণ্ঠশিল্পী বাংলার, উপমহাদেশের, বিশ্বের গর্ব। তাকে ভারতরত্ন না দিয়ে পদ্মশ্রী দিয়ে অপমান করা হয়েছিল। কলকাতার এক পদ্মপণ্ডিত ‘শিল্পী’ তখন বলেছিল ‘একটা পদ্মভূষণ দেওয়া যেত।’ ‘ভারতরত্ন’ কথাটা তার মুখ দিয়ে বেরোতে চায়নি।
এইচএমভি স্টুডিওয় রেকর্ডিংরতা এই মহাশিল্পী সেই পদ্মশ্রী প্রত্যাখ্যান করায় ভারতের এক চ্যানেল তাকে ‘দেশদ্রোহী’ বলেছিল।
ভাষার মাস। আমার মাভাষা ওই মহাশিল্পীরও মাভাষায়। এই ভাষায় আমি তার জন্য ১২টি গান লিখে সুর করেছিলাম। আমায় যে বঙ্গজরা সমানে গাল দেয় তারা এ খবর রাখে কি? রেকর্ডগুলি প্রকাশ করেছিলেন এইচএমভি/ সারেগামা।
বাহান্নর একুশের ডাক।
এই মহাশিল্পীকে দিয়ে আমি গাইয়েছিলাম আমার রচনা, ‘রংধনুটানা সেতু/ চলে গান স্বপ্নের মতো।’
‘রংধনু’ কথাটি আমার জীবনে বাংলাদেশের দান। ভাগ্যিস বাংলাদেশ হয়েছিল, ভাগ্যিস বাহান্নয় ঘটেছিল একুশ, ভাগ্যিস একদিন শুনেছিলাম বাংলার বজ্রকন্ঠ—এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম।
ভাগ্যিস আমার মাভাষা বাংলাদেশের রাষ্ট্রভাষা।
আসছে ১৬ মার্চ ৭৫ পূর্ণ করে ৭৬-এ পড়ব। জীবন ফুরোতে চলল। অনেক কিছুই শুকিয়ে এসেছে। তাও এখনও আমার মাভাষার ডাকে, আমার মাভাষার জন্য চোখে বান ডাকে। অহিংসায় বিশ্বাসী এই আমি আমার মাভাষার জন্য অন্তত ইটপাটকেল, মলোটভ ছুঁড়তে পারি। বন্দুক ধরার শক্তি আমার নেই।
রংধনু
ধন্য বাংলাদেশ। ধন্য বাংলা ভাষা।
‘রংধনুটানা সেতু
চলে গান স্বপ্নের মতো
মেঘভাঙা বিকেলের দেশ থেকে
সন্ধের দূরত্ব কত...’