যে ভালোবাসা, স্নেহ ও মমতা আমি পেয়েছি তার ঋণ শোধ করার আগেই এলো ১৯ জুলাই, ২০১২। সেই ভয়ঙ্কর দিন। প্রচণ্ড ভয়াবহতায় দুলে উঠল আমার পৃথিবী। ‘সপ্তম সংসারে’ পাড়ি জমালেন হুমায়ূন আহমেদ। যে সংসারের কথা তিনি লিখেছেন এভাবে, ‘সম্ভবত সপ্তম সংসার হবে আমার শেষ সংসার। সেখানে কি আমি একা থাকব, নাকি সুখ-দুঃখের সব সাথীই থাকবে?’ (নিউইয়র্কের নীলাকাশে ঝকঝকে রোদ, পৃষ্ঠা-১৫)
সপ্তম সংসারে তিনি একা নন। সেখানে আছে তার পুত্র রাশেদ হুমায়ূন, কন্যা লীলাবতী; পিতৃস্নেহ পায়নি যারা একটি দিনের জন্যও। আছেন মাতা আয়েশা ফয়েজ, পিতা ফয়জুর রহমান আহমেদ। বন্ধু আনিস সাবেত, প্রিয় লেখক সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়, বগুড়ার স্কুলজীবনের বন্ধু সেহেরী আর প্রিয় অভিনেতা চ্যালেঞ্জারও আছেন সেখানে। কোনো কোনো সংসারে এরাই তো ছিলেন তার সুখ-দুঃখের সাথী।
একই গ্রন্থের ৩১ পৃষ্ঠায় তিনি লিখেছেন, ‘আমেরিকার প্রেসিডেন্ট আব্রাহাম লিংকনের দুটি ছেলে নিতান্ত অল্প বয়সে হোয়াইট হাউসে মারা যায়। আব্রাহাম লিংকন তারপর হতাশ হয়ে লিখলেন, গডের সৃষ্টি কোনো জিনিসকে বেশি ভালোবাসতে নেই। কারণ তিনি কখন তার সৃষ্টি মুছে ফেলবেন তা তিনি জানেন। আমরা জানি না।’
বিধাতা কেন এত অকরুণ! প্রিয়জন যদি চলেই যাবে চিরতরে, তবে কেন এ মিছে মায়ায় জড়ানো!