ইলন মাস্কের মাইক্রোব্লগিং সাইট টুইটারের বিকল্প হিসেবে মার্ক জাকারবার্গ ‘থ্রেডস’ নামে একটি অ্যাপ নিয়ে এসেছে। যা ইনস্টাগ্রামের সঙ্গে লিংক করা। ফেসবুক ও ইনস্টাগ্রামের প্যারেন্ট কোম্পানি মেটার নতুন এ অ্যাপটি অ্যাপল স্টোর ও গুগলের প্লে-স্টোরে বৃহস্পতিবার থেকেেই পাওয়া যাচ্ছে। এরই মধ্যে প্রতিদ্বন্দ্বী এই অ্যাপের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার বিষয়টি বিবেচনা করার কথা জানিয়েছে টুইটার।
শুক্রবার (৭ জুলাই) ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে।
টুইটারের অভিযোগ, সাবেক টুইটার কর্মীরা থ্রেডস তৈরি করতে সহায়তা করেছে। যদিও টুইটারের প্রধান ইলন মাস্ক বলেছেন, ‘প্রতিযোগিতা ঠিক আছে, প্রতারণা নয়’। অন্যদিকে
মেটার তথ্য অনুসারে, ইতোমধ্যেই ৩ কোটিরও বেশি ব্যবহারকারী থ্রেডস অ্যাপে নিবন্ধন করেছেন। থ্রেডসের চালানোর অনুভূতি টুইটারের মতোই বলে বিবিসি নিউজের প্রযুক্তি প্রতিবেদক জেমস ক্লেটন উল্লেখ করেছেন। তিনি বলেছেন, মেটার এই নতুন অ্যাপের নিউজ ফিড এবং পুনরায় পোস্ট করার বিষয়টি অবিশ্বাস্যভাবে পরিচিত।
এই পরিস্থিতিতে টুইটার অ্যাটর্নি অ্যালেক্স স্পিরো বুধবার মেটা সিইও মার্ক জাকারবার্গকে একটি চিঠি পাঠিয়েছেন। সেখানে তিনি মেটাকে থ্রেডস তৈরি করতে ‘টুইটারের বাণিজ্য গোপনীয়তা এবং অন্যান্য বুদ্ধিবৃত্তিক সম্পত্তির নিয়মতান্ত্রিক, ইচ্ছাকৃত এবং বেআইনি অপপ্রয়োগের’ অভিযোগ করেছেন।
বিশেষত, ওই চিঠিতে স্পিরো অভিযোগ করেছেন, মেটা টুইটারের কয়েক ডজন সাবেক কর্মীকে নিয়োগ করেছিল, যাদের ‘টুইটারের বাণিজ্য গোপনীয়তা এবং অন্যান্য অত্যন্ত গোপনীয় তথ্যগুলোতে প্রবেশাধিকার ছিল’। আর তারাই শেষ পর্যন্ত মেটাকে ‘কপিক্যাট’ থ্রেডস অ্যাপ তৈরি করতে সহায়তা করেন বলেও অভিযোগ করেছেন তিনি।
চিঠিতে আরও বলা হয়েছে, টুইটার তার বুদ্ধিবৃত্তিক সম্পত্তির অধিকার কঠোরভাবে প্রয়োগ করতে চায় এবং মেটায় অবিলম্বে টুইটার বাণিজ্য গোপনীয়তা বা অন্যান্য অত্যন্ত গোপনীয় তথ্য ব্যবহার বন্ধ করার জন্য পদক্ষেপ টুইটার নেবে বলেও দাবি করা হয়েছে।
থ্রেডসের বিষয়ে মেটার মুখপাত্র অ্যান্ডি স্টোন পোস্ট করেছেন, ‘থ্রেডস ইঞ্জিনিয়ারিং টিমের কেউই সাবেক টুইটার কর্মী নয়।’
মেটার ইনস্টাগ্রামভিত্তিক এই নতুন অ্যাপটিকে ‘টুইটার কিলার’ হিসেবে অভিহিত করেছেন অনেকে। তাদের মতে, টুইটার সাম্প্রতিক সময়ে তাদের অ্যাপে যেসব পরিবর্তন এনেছে, সেগুলো নিয়ে অনেক ব্যবহারকারীই ত্যক্ত-বিরক্ত। যেহেতু থ্রেডসের ফিচারগুলো অনেকটা টুইটারের মতোই। তাই তারা টুইটার ছেড়ে থ্রেডসের দিকে ঝুঁকতে পারেন।
এদিকে ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত দেশগুলোতে এটির যাত্রা এখনো শুরু হয়নি। ইনস্টাগ্রামে দুই বিলিয়নের বেশি সক্রিয় ব্যবহারকারী রয়েছে অন্যদিকে ৩৬৪ মিলিয়ন সক্রিয় ব্যবহারকারী রয়েছে টুইটারের।
সাম্প্রতিক বছরগুলোতে টুইটারের সাদৃশ্য বেশ কয়েকটি অ্যাপ বাজারে এসেছে। উদাহরণ হিসেবে বলা যায়, সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ট্রুথ সোশ্যাল এবং মাস্টোডনর নাম। তবে ৪৪ বিলিয়ন ডলারের টুইটারের সঙ্গে পাল্লা দেওয়ার মতো কিছু করে দেখাতে পারিনি এগুলো।