প্রাচীনকালে সূর্যগ্রহণ ঘিরে ছিল ভয় আর আতঙ্ক। দিনের বেলা হঠাৎ করেই সূর্য যখন নিভে আসতো তখন ভীত-সন্ত্রস্ত হয়ে পড়তেন প্রাচীন মানুষ। তাতে অমঙ্গলের ছায়া দেখতেন তারা। সে সময় জ্যোতির্বিজ্ঞানের কোনো জ্ঞান ছিল না। তাই সূর্যগ্রহণ ঘিরে নানা কল্পকাহিনি ডালপালা মেলতো। সাংস্কৃতিক ইতিহাস ঘাঁটাঘাঁটি করলেও এসব নিয়ে চমৎকার তথ্য জানা যায়। সূর্য তেজোদীপ্ত, বিপরীতে চাঁদ শান্ত, নরম আলোয় আলোময়। তাই জনশ্রুতি আছে, চাঁদের জন্য সূর্যের ভালোবাসার লড়াই চলে এসেছে গোপনে। তাদের প্রেমময় উপাখ্যানের গল্প ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে ইতিহাস জুড়ে।
যেমন, অস্ট্রেলিয়ান এবোরিগেন্সের মতে, সূর্যের মধ্যে এক ধরণের নারীর সত্ত্বা বিরাজ করে। যা আলো সরবরাহ করে। আর চন্দ্রের মধ্যে বিরাজ করে পুরুষসত্ত্বা। চাঁদের আবর্তনের সঙ্গে সমন্বয় আর নারীর ঋতুগত ধাপের ধরণের ওপর ভিত্তি করে চাঁদের ফার্টালিটি হয়ে থাকে। এক্ষেত্রে চাঁদ আর সূর্যের দাম্পত্য মিলনে বাধা হয়ে দাঁড়ায় সূর্যগ্রহণ।
জার্মান মেথডোলজির আলোকে, রুদ্ররূপ ধারণ করা সূর্য আর শীতল রূপ চাঁদ পরস্পরের সঙ্গে বিয়ে বন্ধনে আবদ্ধ হয়েছে। তাই সূর্য দিনের বেলা প্রভাব বিস্তার করে আর চাঁদ রাতের বেলা। তাদের এই দাম্পত্যময় জীবনে সূর্যগ্রহণের মধ্যে পরস্পরের সাথে পরস্পরের সান্নিধ্যে আসে। আমেরিকানরা বিষয়টির সঙ্গে একমত পোষণ করেছেন যে চাঁদ আর সূর্য পরস্পরের সান্নিধ্যে আগমন করতেন সূর্যগ্রহণের মাধ্যমে।
পশ্চিমা আফ্রিকানদের বেনিনের মতে, বিপরীত লিঙ্গের চাঁদ এবং সূর্য চলাচলের কক্ষপথ খুব বেশি ব্যস্ত থাকার কারণে যখন তারা পরস্পরের সান্নিধ্যে আসে তখন তারা ব্যক্তিগত গোপনীয়তার জন্য আলো বন্ধ করে দেয়। তাহিতিয়ান সভ্যতার আলোকে, কক্ষপথপ্রেমীদের মতে সূর্যগ্রহণের কারণে তারা হারিয়ে যায় এবং ফলে আলোর জন্য তারার মধ্যে প্রতিস্থাপিত হয়।