ইন্টারনেট প্রযুক্তিতে ওয়াই-ফাইয়ের জনপ্রিয়তার পর এবার আসছে লাইট ফিডেলিটি বা লাই-ফাই। নতুন এই প্রযুক্তির মাধ্যমে ইন্টারনেট গতি আরও দ্রুত হবে। মানে এটি দ্বারা আলোক তরঙ্গের মাধ্যমে তথ্যের আদান-প্রদান করা যাবে।
২০১১ সালে প্রকাশ হয় লাই-ফাই প্রযুক্তির। ঘরের বৈদ্যুতিক বাতি, রাস্তার বাতি এমনকি এলইডি টিভির আলোর সাহায্যে ইন্টারনেটের সঙ্গে সংযোগ স্থাপনের নতুন প্রযুক্তিই হলো লাই-ফাই।
এই প্রযুক্তিতে গবেষকরা আপাতত এলইডি বাতি দিয়ে নেট ডাটা বিলির প্রক্রিয়া চালু করেছেন। তবে গবেষকদের ইচ্ছে, ইনফ্রারেড বা অদৃশ্য আলোর সাহায্যে লাই-ফাই ব্যবহারকে আরও তরান্বিত করা। বাতিকে অত্যন্ত দ্রুত বন্ধ ও জ্বালিয়ে দেওয়ার মাধ্যমে ইন্টারনেট সংকেত তৈরি করবে লাইফাই। খালি চোখে এটি ধরা না পড়লেও মোবাইল বা কম্পিউটার সহজেই এই সংকেত গ্রহণ করতে পারবে।
লাইফাই-এর কোনো রাউটার প্রয়োজন হয় না। এই প্রযুক্তি নিরাপদ এবং সহজ। প্রচলিত ওয়াইফাই থেকে অপেক্ষাকৃত দ্রুতগতিতে চলবে লাইফাই। আলোক উৎসের দিকে মোবাইল বা কম্পিউটার সরাসরি থাকলেই দ্রুত গতির ইন্টারনেট সংযোগ পাওয়া যাবে।
সাধারণত বাসা-বাড়ির ওয়াই-ফাই ব্যবহারকারী ৫-১০ জনের মধ্যে ইন্টারনেট সংকেত ভাগ হয়ে গেলে অপেক্ষকৃত ধীরগতির জটিলতা দেখা দেয়। ডাটা আদান-প্রদানেও সমস্যা হয়।
অন্যদিকে লাইফাই-এ এই ধরণের কোনো সমস্যা হয় না। কারণ ওয়াইফাই-এর সর্বোচ্চ ব্যান্ড ফ্রিকোয়েন্সি যেখানে ৫ গিগাহার্জ থাকে, সেখানে লাইফাই- এ পাওয়া যাবে প্রায় ২ লাখ গিগাহার্জ।
ফলশ্রুতিতে লাইফাই-এর মাধ্যমে অনেক বেশি ব্যবহারকারীর কাছে বেশি তথ্য আদান-প্রদান করা সম্ভব।
নেদারল্যান্ডসেররআইন্দভান বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০১৭ সালের গবেষণায় এই তথ্য প্রমাণিত হয়েছে। গবেষণায় দেখা গেছে, সবচেয়ে ভালো ওয়াইফাই দিয়ে যখন সর্বোচ্চ ৩০০ এমবিপিএস ডাটা ডাউনলোড করা যাচ্ছে, সেখানে লাইফাই দিয়ে এর পরিমাণ ৪২ জিবিপিএস-এরও বেশি।
চমৎকার এই প্রযুক্তি কতদিনে আমরা ব্যবহার করতে পারবো এ নিয়ে জানিয়েছেন এডিনবার্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকরা। গবেষক হেরাল্ড হাস-জানান, আগামী ২ থেকে ৩ বছরের মধ্যেই বিশ্বের সব সাধারণ ব্যবহারকারীর কাছে এই প্রযুক্তি সহজলভ্য হবে।
গবেষক হেরাল্ড হাস আরও জানান, ইতোমধ্যে কিছু দপ্তর এই প্রযুক্তি পরীক্ষামূলকভাবে চালু করেছে। উড়োজাহাজ নির্মাতা প্রতিষ্ঠানগুলোও লাইফাই প্রযুক্তি নিয়ে বেশ আগ্রহ দেখাচ্ছে।
গবেষকরা জানান, লাইফাই অত্যন্ত নিরাপদ। বেতার তরঙ্গের মতো আলোক তরঙ্গ দেয়াল ভেদ করে অন্যপাশে যেতে পারে না। কাজেই এর তথ্য চুরি বা ধরা অসম্ভব। অন্যান্য তরঙ্গ যেমন রেডিও, মাইক্রওয়েভ ইত্যাদি একটি আরেকটির সঙ্গে সংঘর্ষে তথ্যের বিচ্যুতি ঘটায়। কিন্তু আলোর ক্ষেত্রে এমনটা হওয়ার সম্ভাবনা কম।
বিদ্যুৎ বিভ্রাটে ঘরের বাতি বন্ধ হয় বা পাশের ঘরের ব্যবহারকারী আলো নিভিয়ে রাখলে কি লাইফাই-এর নেট পাওয়া যাবে? এমন প্রশ্নের উত্তরে গবেষকরা জানান, চিন্তার কিছু নেই, ঘরের ছোট রিচার্জেবল এলইডি বাতি দিয়েও নেট ডাটা পাওয়া যাবে অনাসায়ে।
 
                
              
 
																                   
                                                     
                                                     
                                                     
                                                     
                                                     
                                                     
                                                     
                                                     
                                                     
                                                    






































