কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বা আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স (এআই) মানবসভ্যতাকে বিলুপ্তির দিকে নিয়ে যেতে পারে বলে সতর্ক করে দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। ওষুধ তৈরির উপাদানকে রাসায়নিক অস্ত্র তৈরিতে ব্যবহার করবে এআই।
ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি এক প্রতিবেদনে এ খবর জানিয়েছে। ওপেনএআই ও গুগল ডিপমাইন্ডের প্রধানসহ অন্তত এক ডজন এআই বিশেষজ্ঞ সতর্কবার্তা দিয়েছেন। এআই সেফটি সেন্টারের ওয়েবপেজ এক বিবৃতিতে ঝুঁকির বিষয়টি তুলে ধরেছে।
চ্যাটজিপিটির নির্মাতা ও ওপেনএআইয়ের প্রধান নির্বাহী স্যাম অল্টম্যান, গুগল ডিপমাইন্ডের প্রধান নির্বাহী ডেমিস হাসাবিস ও অ্যানথ্রোপিকের ডারিও অ্যামোডাইও এই বিবৃতির প্রতি সমর্থন জানিয়েছেন।
যদিও অন্য বিশেষজ্ঞরা এআই নিয়ে এই ধরনের সতর্কবার্তাকে অতিরঞ্জন বলেছেন।
বিবৃতিতে বলা হয়েছে, মহামারি ও পারমাণবিক যুদ্ধের মতো অন্যান্য সামাজিক ঝুঁকির মতো এআই থেকে বিলুপ্তির ঝুঁকি হ্রাসের বিষয়টিকে বিশ্বজুড়ে অগ্রাধিকার দেওয়া উচিত।
সেন্টার ফর এআই সেফটির ওয়েবসাইটে এআইয়ের বেপরোয়া বিকাশে কয়েকটি দুর্যোগের সম্ভাব্য পরিস্থিতির কথা বলা হয়েছে। এগুলো হলো:
* কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাকে অস্ত্র বানানোর কাজে ব্যবহৃত হবে। উদাহরণ হিসেবে ওষুধ তৈরির উপাদানকে রাসায়নিক অস্ত্র তৈরিতে ব্যবহার হবে, এমন ঝুঁকির কথা বলা হয়েছে।
* এআইয়ের মাধ্যমে তৈরি করা ভুল তথ্য সমাজকে অস্থিতিশীল করে তুলতে পারে, যা সম্মিলিত সিদ্ধান্তগ্রহণকে দুর্বল করে ফেলে।
* এআইয়ের সক্ষমতা ক্রমবর্ধমান হারে কমসংখ্যক মানুষের হাতে কেন্দ্রীভূত হতে পারে। যা সর্বাধিক নজরদারি এবং নিপীড়নমূলক সেন্সরশিপের মাধ্যমে সংকীর্ণ মূল্যবোধ প্রয়োগে সক্ষম।
* মানুষ এআইয়ের ওপর নির্ভরশীল হয়ে পড়বে। অনেকটা ‘ওয়াল-ই’ চলচ্চিত্রে দেখানো দৃশ্যের অনুরূপ।
ছয় ঘণ্টায় ৪০ হাজার জৈব অস্ত্রের ফর্মুলা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার
কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা মাত্র ৬ ঘণ্টার মধ্যে ৪০ হাজার জৈব অস্ত্রের ফর্মুলা তৈরিতে সক্ষম। বিজ্ঞানীরা সাধারণত মানুষের শরীর এবং শরীরে বাইরে নানা ধরনের ক্ষতিকর জৈব উপাদান শনাক্ত করতে এটি ব্যবহার করেন। তবে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ব্যবহার করে জৈব অস্ত্র তৈরির বিষয়টি নিয়েও আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন তারা দ্য ভার্জ এ খবর জানিয়েছে।
ন্যাচার মেশিন জার্নালে প্রকাশিত এক নিবন্ধে বলা হয়েছে, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা হাজার হাজার নতুন প্রাণঘাতী রাসায়নিক পদার্থ নিয়ে এসেছে, যার মধ্যে কিছু কিছু রাসায়নিক ভাইরাস-এক্সের মতো শক্তিশালী, যা এখন পর্যন্ত বিকশিত সবচেয়ে শক্তিশালী নার্ভ এজেন্ট।
কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা যখন অনেক শক্তিশালী, অনেক দ্রুততর হয়ে উঠবে এবং আমাদের স্বাস্থ্যের উন্নতির জন্য ওষুধের রাসায়নিক উপাদানগুলো খুঁজে বের করার বিষয়টি সামনে আসবে, তখন অবধারিতভাবে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা যে খুব বিপজ্জনক ও মারাত্মক ক্ষতিকর পদার্থ ব্যবহার করবে না, তার নিশ্চয়তা দেওয়া যায় না।