• ঢাকা
  • শুক্রবার, ২২ নভেম্বর, ২০২৪, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৯ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

প্রশান্ত মহাসাগরে ৫ হাজার নতুন প্রাণীর সন্ধান, খনিজ অনুসন্ধানে বিলুপ্তির শঙ্কা


সংবাদ প্রকাশ ডেস্ক
প্রকাশিত: মে ২৭, ২০২৩, ০৫:০৭ পিএম
প্রশান্ত মহাসাগরে ৫ হাজার নতুন প্রাণীর সন্ধান, খনিজ অনুসন্ধানে বিলুপ্তির শঙ্কা

প্রশান্ত মহাসাগরের তলদেশের ক্ল্যারিয়ন ক্লিপারটোন জোন (সিসিজেড) নামে পরিচিত  অঞ্চলটিতে আগামী বছর থেকেই শুরু হতে যাচ্ছে খনিজ সম্পদ অনুসন্ধানের তৎপরতা। আর এই কাজ শুরু হলে স্বাভাবিকভাবেই অস্তিত্বের হুমকিতে পড়বে এ অঞ্চলের ৫ হাজারেরও বেশি প্রজাতির প্রাণী।

শুক্রবার (২৬ মে) কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম এক প্রতিবেদনে এ খবর জানিয়েছে। সম্প্রতি বিজ্ঞানীরা যুক্তরাষ্ট্রের হাওয়াই দ্বীপপুঞ্জ থেকে মেক্সিকো পর্যন্ত বিস্তৃত ৬০ লাখ বর্গ কিলোমিটার বিস্তৃত প্রশান্ত মহাসাগরের এ অঞ্চলে সম্প্রতি ৫ হাজারেরও বেশি প্রজাতির প্রাণীর সন্ধান পেয়েছেন। তবে এসব প্রাণী আর কতদিন এ পৃথিবীতে টিকে থাকবে তা নিয়ে শঙ্কা তৈরি হয়েছে।

গবেষকরা বৃহস্পতিবার বলেছেন, তারা ক্ল্যারিয়ন ক্লিপারটোন জোনে ৫ হাজার  ৫৭৮ প্রজাতির প্রাণী শনাক্ত করেছেন। যার মধ্যে ৯২ শতাংশই নতুন।

চলতি জুলাই মাস থেকেই ক্ল্যারিয়ন ক্লিপারটোন জোনে খননকাজ চালাতে ইচ্ছুক কোম্পানিগুলোর আবেদনপত্র গ্রহণ করা শুরু করবে ইন্টারন্যাশনাল সি বেড অথরিটি। তার পর সেপ্টেম্বর থেকে শুরু হবে খনন কাজ।

যুক্তরাজ্যের ন্যাচারাল হিস্ট্রি মিউজিয়াম লন্ডনের গভীর সমুদ্রের বাস্তুসংস্থান বিশেষজ্ঞ ম্যুরিয়েল র‌্যাবোনের নেতৃত্বে একটি দল সম্প্রতি এ সম্পর্কিত একটি গবেষণা প্রবন্ধ প্রস্তুত করেছেন। জীববিজ্ঞান সম্পর্কিত আন্তর্জাতিক সাময়িকী কারেন্ট বায়োলজি জার্নালে সেই গবেষণা প্রবন্ধ প্রকাশিতও হয়েছে।

বিশেষজ্ঞ ম্যুরিয়েল র‌্যাবোন জানিয়েছেন, এখন পর্যন্ত এই প্রজাতিগুলোর মধ্যে মাত্র ৪৩৮টির নামকরণ হয়েছে। বাকি ৫ হাজার ১৪২টি প্রাণীর বৈজ্ঞানিক নাম এখনো দেওয়া হয়নি। বিজ্ঞানীরা এসব প্রজাতিকে ইনফর্মাল বিভিন্ন নামে অভিহিত করে থাকেন।

তিনি বলেন, “এমনকি নতুন এই প্রজাতির অনেকগুলোর পূর্ণাঙ্গ বিবরণও এখন পর্যন্ত পাওয়া যায়নি। এসব প্রজাতি কোন বর্গের তা আমরা বলতে পারব কিন্তু প্রজাতিগুলোর বিস্তারিত বৈজ্ঞানিক বিবরণ এখনও আমাদের অজানা।”

ক্ল্যারিয়ন ক্লিপারটোন জোন (সিসিজেড) অঞ্চলে নতুন যেসব প্রাণী পাওয়া গেছে— সেগুলোর অধিকাংশই অর্থোপোডা বর্গের অমেরুদণ্ডী প্রাণী। যেমন চিংড়ি, কাঁকড়া এবং কাঁকড়াবিছা ইত্যাদি।

সমুদ্রের তলদেশ গবেষণা বিষয়ক আন্তর্জাতিক সংস্থা ইন্টারন্যাশনাল সি বেড অথরিটির উদ্যোগে এক দশক আগে ট্যাক্সোনমিক পদ্ধতিতে জরিপ চালানোর সময় প্রথম এসব প্রাণীর সম্পর্কে জানতে পারে মানুষ। অধিকাংশ প্রজাতিই বসবাস করে সমুদ্রের তলদেশে, যেখানে সূর্যের আলোও ঠিকমতো পৌঁছাতে পারে না। প্রসঙ্গত, সমুদ্রের ২০০ ফুট গভীর পর্যন্ত পৌঁছাতে পারে সূর্যালোক।

হাজার হাজার প্রজাতির প্রাণীর মতো খনিজ সম্পদেরও এক বিশাল ভাণ্ডার প্রশান্ত মহাসাগরের ক্ল্যারিয়ন ক্লিপারটোন জোন। গবেষণা থেকে প্রাপ্ত তথ্য বলছে নিকেল, ম্যাঙ্গানিজ, তামা, দস্তা ও কোবাল্টসহ বিভিন্ন খনিজের সমৃদ্ধ মজুত রয়েছে সিসিজেডের তলদেশের গভীরে।

ক্ল্যারিয়ন ক্লিপারটন জোনে খননকাজ চালাতে ইচ্ছুক কানাডিয়ান প্রতিষ্ঠান দ্য মেটাল কোম্পানির শীর্ষ নির্বাহী গেরার্ড ব্যারনও স্বীকার করেছেন, বাস্তুসংস্থানকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে সিসিজেডে খননকাজ চালানো উচিত বলে মনে করে তার প্রতিষ্ঠান এবং অন্যান্য কোম্পানিরও এ বিষয়টিতে সচেতন থাকা প্রয়োজন।

Link copied!