যুদ্ধক্ষেত্রে গুপ্তচরবৃত্তির জন্য অনেক ক্ষেত্রে ব্যবহার করা হয় পোষা ও বন্য প্রাণীদের। বর্তমানে গবেষণার কাজে তথ্য সংগ্রহের জন্যও প্রাণীদের ব্যবহার করে থাকেন বিজ্ঞানীরা। তেমনি এবার অ্যান্টার্কটিকায় গবেষণার জন্য পাঠানো হয়েছে ক্যামেরাবাহী একদল সিলকে।
অ্যান্টার্কটিকার পুরু বরফের নিচের অজানা জগতে ঘোরাফেরা করছে অ্যান্টেনাসহ হেলমেট পরা সিল। জাপানি গবেষকদের জরিপ করতে সহায়তা করছে তারা।
ওয়েডেল প্রজাতির আটটি সিল যোগ দিয়েছে এই গবেষণায়। তাদের প্রত্যেকের মাথায় একটি মনিটরিং ডিভাইস যুক্ত রয়েছে। ২০১৭ সালে একটি গবেষণা প্রকল্পের জন্য অ্যান্টার্কটিকায় শীতপ্রধান অঞ্চলে এই সিলগুলো পাঠানো হয়।
মূলত এ অঞ্চলের তাপ পরিবাহিতা, তাপমাত্রা ও বরফের গভীরতা সেন্সর দিয়ে যাচাই করে দেখছেন বিজ্ঞানীরা। সেখনকার প্রতিকূল পরিবেশ, পানির তাপমাত্রা ও লবণের মাত্রাসহ বিভিন্ন তথ্য সংগ্রহ করতে চেষ্টা করছেন তারা।
প্রকল্পের প্রধান নোবুও কোকুবুন জানান, এই ধরনের গবেষণায় প্রাণীরা তাদের বাস্তুসংস্থানসংক্রান্ত তথ্যে দিয়ে থাকে। এই সাতটি সিল থেকে সফলভাবে সংগৃহীত তথ্য গবেষণার কাজে নানাভাবে সাহায্য করছে।
তাদের মধ্যে একটি অ্যান্টার্কটিকায় অবস্থিত জাপানের শোভা স্টেশনের উপকূল থেকে ৬৩৩ কিলোমিটার পর্যন্ত এলাকা ভ্রমণ করেছে। আরেকটি সিল পানির নিচে ২ হাজার ২৯৭ফুট গভীর পর্যন্ত ঘুরে এসেছে।
কোকুবুন বলেন, “সিলদের কাছ থেকে পাওয়া তথ্য থেকে বিজ্ঞানীরা জানতে পেরেছেন যে বছরের মার্চ থেকে পরবর্তী শীতকালের মধ্যে সমুদ্রের উন্মুক্ত স্তর থেকে উষ্ণ পানি অ্যান্টার্কটিকায় এসে পৌঁছায়। এ অঞ্চলের বরফের নীচ দিয়েও উষ্ণ পানি প্রবাহিত হয়। এর মাধ্যমে অন্যান্য অঞ্চল থেকে অ্যান্টার্কটিক ক্রিলের মতো সামুদ্রিক প্রাণী ভেসে আসে। সিলদের খাবারের প্রধান উৎস এরা।”
অ্যান্টার্কটিকের উপকূলীয় অঞ্চলে বৈশ্বিক উষ্ণায়নের প্রভাব পরীক্ষা করতে আগামীতে পেঙ্গুইনের মতো দক্ষিণ মেরুতে থাকা অন্যান্য প্রাণীদের সাহায্যেও গবেষণা চালাতে চান বিজ্ঞানীরা। সে ক্ষেত্রে প্রাণীদের শরীরে লাগানোর জন্য তাদের ডিভাইসগুলো আরও ছোট ও হালকা ওজনের হতে হবে।
তথ্যসূত্র: রয়টার্স