ময়মনসিংহ জেলার ফুলপুর উপজেলায় তালের চারা রোপণ কর্মসূচির উদ্বোধন করেছে ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংক (ইউসিবি) পিএলসি। সম্প্রতি উপজেলার ডেকুলিয়া-বাঁশতলা রোয়ার বন্দ সড়কের ধারে ৫০০টি তালের চারা রোপণ কর্মসূচির উদ্বোধন করা হয়।
এ সময় ফুলপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) এম সাজ্জাদুল হাসান, উপজেলা চেয়ারম্যান মো. আতাউল করিম রাসেল, উপজেলার কৃষি কর্মকর্তা ফারুক আহমেদ, উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা কামরুল হাসান, ইউসিবির ময়মনসিংহ শাখার ব্যবস্থাপক জোবায়ের ইবনে জাহানসহ স্থানীয়রা উপস্থিত ছিলেন।
তালের চারা রোপণ কর্মসূচির উদ্বোধনকালে উপজেলা নির্বাহী অফিসার এম সাজ্জাদুল হাসান বলেন, “ইউনাইটেড কর্মাশিয়াল ব্যাংক পিএলসি পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষায় অসাধারণ উদ্যোগ নিয়েছে। এ ধরনের পরিবেশ রক্ষা এবং সমাজসেবামূলক কাজে প্রশাসন সবসময় তাদের পাশে থাকবে।”
তালের চারা রোপণ সম্পর্কে ইউসিবির ময়মনসিংহ শাখার ব্যবস্থাপক জোবায়ের ইবনে জাহান বলেন, “এই অঞ্চলটি বজ্রপাতের জন্য অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ। প্রায়ই এখানে বজ্রপাতে আমাদের কৃষক ভাইয়েরা মারা যান। এ ধরনের মৃত্যু কমিয়ে আনতেই আমরা তালের চারা রোপণে গুরুত্ব দিচ্ছি। এসব তালের চারা ঠিকমতো বেড়ে উঠলে বজ্রপাতের কারণে মৃত্যুর ঘটনা অনেকটা কমে আসবে বলে আমরা মনে করি।”
ইউসিবি কর্তৃপক্ষ জানায়, সাম্প্রতিক বছরগুলোতে বজ্রপাতে প্রাণহানির সংখ্যা বেড়ে যাওয়ায় ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংক পিএলসি সারা দেশে তালগাছ লাগানোর উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। উচ্চতা ও গঠনগত দিক থেকে তাল গাছ বজ্রপাত নিরোধে সহায়ক। এ ছাড়া তালগাছ ভূমিক্ষয়, ভূমিধস, ভূগর্ভস্থ পানির মজুত বৃদ্ধি ও মাটির উর্বরতা রক্ষা করে এবং মেঘ আকর্ষণ করে বৃষ্টিপাত ঘটায়। এসব কারণে ইউসিবি তালগাছ রোপণের ওপর বিশেষ গুরুত্বারোপ করেছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্দেশনা অনুযায়ী, ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংক পিএলসি (ইউসিবি) সামাজিক দায়িত্বের অংশ হিসেবে এ বছর কৃষিখাতে সহায়তা প্রদানমূলক প্রকল্প ‘ভরসার নতুন জানালা‘ বাস্তবায়নের উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। এই প্রকল্পের লক্ষ্য, দেশের খাদ্য নিরাপত্তা ও উন্নত পুষ্টিমান নিশ্চিতকরণ এবং জলবায়ু সহিষ্ণু টেকসই কৃষির প্রসার ঘটানো। পাশাপাশি বৃক্ষরোপণ করা।
উল্লিখিত প্রকল্লের অধীনে সারা দেশে ৫০টি নির্বাচিত উপজেলাকে মডেল এলাকা হিসেবে গড়ে তোলার উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। চর, হাওর, উপকূল, সীমান্তবর্তী এলাকাসহ তুলনামূলকভাবে অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে পিছিয়ে থাকা এসব ‘মডেল’ উপজেলায় এক হাজার করে সারা দেশে অন্তত ৫০ হাজার তাল বা স্থানীয় চাহিদার ভিত্তিতে অন্যান্য গাছ রোপণ করা হবে। একইসঙ্গে বজ্রপাতপ্রবণ এলাকায় বজ্রপাত নিরোধক ডিভাইস স্থাপন, কৃষি উদ্যোক্তাদের সংগঠিত করে ক্লাইমেট স্মার্ট বা কৃষি প্রযুক্তি সম্প্রসারণ ও যন্ত্রের ব্যবহারে উৎসাহ প্রদান, কৃষকদের মাঝে ব্যক্তিগত নিরাপত্তা সামগ্রী (নিরাপত্তা চশমা, কীটনাশক প্রতিরোধী পোশাক ইত্যাদি) বিতরণ, খাদ্য প্রক্রিয়াজাতকরণ, জৈব পদ্ধতির প্রয়োগে সহায়তা প্রদানসহ নানা কর্মসূচি বাস্তবায়ন করা হবে।
বৃক্ষরোপণ কর্মসূচির পাশাপাশি দেশের ৬৪ জেলার প্রতিটি উপজেলা থেকে কৃষি, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ-সংশ্লিষ্ট ২৫ জন করে কৃষি উদ্যোক্তাকে দক্ষতা উন্নয়ন প্রশিক্ষণ প্রদানের উদ্যোগও গ্রহণ করা হয়েছে।