হাঁসের বাচ্চা পেয়ে নিম্ন আয়ের নারী-পুরুষের মুখে হাসি


সংবাদ প্রকাশ প্রতিবেদক
প্রকাশিত: এপ্রিল ২৭, ২০২৪, ০৬:০৫ পিএম
হাঁসের বাচ্চা পেয়ে নিম্ন আয়ের নারী-পুরুষের মুখে হাসি
হাঁসের বাচ্চা বিতরণ করে কিউএলএফ। ছবি : সংগৃহীত

সুন্দরবনের কালাবগির ঝুলন্তপাড়ায় হাঁসের বাচ্চা বিতরণ করে নিম্ন আয়ের নারী-পুরুষের মুখে হাসি ফুটিয়েছে কোয়ালিটি লাইফ ফাউন্ডেশন (কিউএলএফ)। জলবায়ু পরিবর্তনে ক্ষতিগ্রস্ত ৭০ জন অতি নিম্ন আয়ের লোকের মাঝে দুই হাজার ১০০টি হাঁসের বাচ্চা বিতরণ করে ফাউন্ডেশনটি।

শনিবার (২৭ এপ্রিল) স্বাবলম্বীকরণে ঝুলন্তপাড়ায় নদীতে বিলীন হওয়া স্কুলের স্থানে তাদের হাতে হাঁসের বাচ্চা তুলে দেওয়া হয়। এসময় নারীদের শাড়ি ও শিশুদের জামাকাপড় প্রদান করা হয়।

হাঁসের বাচ্চা ও উপহার পেয়ে সবাই খুব খুশি হন। আনন্দিত নারীরা জানান, হাঁসের বাচ্চাগুলো লালনপালন করে তারা স্বাবলম্বী হতে পারবেন। এসময় তারা সুপেয় পানি ও ন্যূনতম স্বাস্থ্যসেবার জন্য অনুরোধ জানান।

অনুষ্ঠানে উপস্থিত বক্তারা বলেন, “দেশের সর্বদক্ষিণে সুন্দরবনের গহীনে সুতারখালি ইউনিয়নের কালাবগির পাশে শিবসা ও ভদ্রা নদীর মাঝে জলবায়ুর পরিবর্তনের অভিঘাতে হাজারো মানুষের দুঃখ দুর্দশায় পতিত দরিদ্র, নিঃস্ব, বঞ্চিত জনবসতির নাম ঝুলন্তপাড়া। এটি বাংলাদেশের সর্বশেষ জনবসতি।”

স্থানীয়রা জানান, ঝুলন্তপাড়ায় কয়েক বছর আগেও স্বাভাবিক জীবনযাপন ছিল। কিন্তু এখন বাঁশের খুঁটি আর গোলপাতা দিয়ে তৈরি তাদের ঝুলন্ত ঘরগুলোতে জোয়ারের সময় পানি এসে পাটাতন ডুবে যায়। আবার ভাটার সময় পাটাতনের নিচে কাঁদা জমে থাকে। বিভিন্ন সময় ঝড়ের নির্মম ছোবল, শীতের নির্দয় কামড়, শোক আর নিদারুণ দারিদ্রই তাদের অমোচনীয় বিধিলিপি। এর মধ্যেই শীতকালে বাঘের ভয়, গরমকালে সাপের ভয়। আর সারা বছর কুমির ও দস্যুর ভয় নিয়েই অসহায় মানুষগুলো কোনো রকমে বেঁচে আছেন। এখানে লবণাক্ত পানি, স্বাস্থ্য, শিক্ষা সুবিধা নেই বললেই চলে।

অনুষ্ঠানে কিউএলএফের সদস্য ডা. ইশরাত জাহান, বীরশ্রেষ্ঠ নুর মোহাম্মদ পাবলিক কলেজের বায়োলজির অধ্যাপক মু. আনোয়ার সাদাত, মিসেস সাহেরা হক, উদ্যোক্তা ব্যবসায়ী ফেরদৌস তুষার, স্থানীয় সংগঠক বরেন্দ্রনাথ রয়, স্থানীয় সদস্য বিউটি রয়, স্থানীয় ব্যবসায়ী মিতা প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।

ঝুলন্তপাড়ার হতদরিদ্রদের অমোচনীয় দুঃখগাথা নিরসনকল্প কাজে অংশ নিয়ে কিউএলএফের সমন্বয়ক ডা. দলিলুর রহমান বলেন, “ঝুলন্তপাড়ার মানুষদের স্বাবলম্বীকরণে আমাদের প্রচেষ্টা চলমান থাকবে। এখানকার মানুষের সুপেয় পানির জন্য ডিসেলাইনেশন প্রজেক্টসহ তাদের স্বাস্থ্য, শিক্ষা সুবিধার জন্য চেষ্টা করা হবে।”  

এসময় দায়িত্বশীল কর্তৃপক্ষ, সামর্থ্যবানদের এগিয়ে আসার আহ্বান জানান দলিলুর রহমান। 

জনসংযোগ বিভাগের আরো খবর

Link copied!