বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমিতে অনুষ্ঠিত হয়ে গেল ‘স্বরকল্পন আবৃত্তিচক্র’র দুইটি পূর্ণাঙ্গ প্রযোজনা। সব্যসাচী লেখক সৈয়দ শামসুল হক রচিত ‘পরানের গহীন ভিতর’ ও আবুল হাসানের কবিতায় ‘যে তুমি হরণ করো’ শীর্ষক আবৃত্তিসন্ধ্যায় অংশগ্রহণ করেন ২৩ জন বাচিকশিল্পী।
শুক্রবার (৮ মার্চ) বিকেল ৫টা ও সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় বাংলাদেশ শিল্পকলা একডেমির জাতীয় সংগীত, নৃত্যকলা ও আবৃত্তি মিলনায়তনে একক ও দলগত পরিবেশনার মধ্য দিয়ে এ অনুষ্ঠান শুরু হয়। অনুষ্ঠানের নির্দেশনা দেন মোস্তাফিজ রিপন।
এ প্রসঙ্গে নির্দেশক মোস্তাফিজ রিপন বলেন, “আবুল হাসানের কবিতায় উঠে আসে ‘একাকিত্ব আর অসহায়বোধের’ চিত্র। চেনা জীবন চিবুকের কাছেও অচেনা ও নিঃসঙ্গতায় লাবণ্য ধরে রাখে মমতায়। অন্যদিকে সৈয়দ শামসুল হকের ‘পরানের গহীন ভিতর’ কাব্যগ্রন্থটি বাংলা সাহিত্যের এক অনন্য সম্পদ। লোকজ শব্দ আর হৃদয়ে কান পেতে তুলে আনা স্বগতঃবিলাপে কী অবলীলায় তিনি বলে গেলেন, ‘মানুষ কী জানে ক্যান মোচড়ায় মানুষের মন’ এমন জীবন্ত অনুভূতির পূর্ণ প্রকাশে মানুষের পরানের গহীনে মোচড় দেয়। এমনই জীবন কথনে সাজানো ‘পরানের গহীন ভিতর’ নিয়ে আবৃত্তি প্রযোজনা মানুষের অনুভূতিকে আলোড়িত করবে।”
স্বরকল্পন আবৃত্তিচক্রের সভাপতি শাহীদুল হক মিল্কী বলেন, “সব্যসাচী লেখক সৈয়দ শামসুল হকের এক অনন্যসাধারণ সৃষ্টি ‘পরানের গহীন ভিতর’ কাব্যগ্রন্থ। এর প্রতিটি কবিতা প্রাণের গভীরতর অনুভূতিগুলোর সাবলীল আর নান্দনিক উপস্থাপনায় সমৃদ্ধ। অন্যদিকে আবুল হাসানের কবিতা নিয়ে ‘যে তুমি হরণ করো’ দারুণ জীবন সংলগ্ন কবিতার উপস্থাপনা। একই দিনে স্বরকল্পন আবৃত্তিচক্রের পক্ষে দুইটি প্রযোজনা করা চ্যালেঞ্জের ছিল তবে সবার অংশগ্রহণমূলক কাজে তা সুন্দরভাবেই সম্পন্ন হয়েছে। আমরা পারি, আমরা চাইলে সবই পারি।”
স্বরকল্পন আবৃত্তি চক্রের সাধারণ সম্পাদক সোহেল আহমেদ বলেন, “একইদিনে পরপর দুটি ভিন্ন প্রযোজনা মঞ্চায়নের এক অভিনব আয়োজনে আবৃত্তিপ্রেমী দর্শক-শ্রোতাদের জন্য যার প্রথমটি সব্যসাচী লেখক সৈয়দ শামসুল হকের অনবদ্য সৃষ্টি ‘পরানের গহীন ভিতর’ এবং দ্বিতীয়টি ক্ষণজন্মা কবি আবুল হাসানের কবিতা নিয়ে ‘যে তুমি হরণ করো।”
এ সময় স্বরকল্পন আবৃত্তিচক্রের পক্ষ থেকে বেইলি রোডে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে নিহত সকলের প্রতি গভীর শোক প্রকাশ করেন সোহেল আহমেদ।
আবৃত্তি চক্রের এই প্রযোজনায় অংশ নেন জ্যেষ্ঠ ও তরুণ আবৃত্তিশিল্পীরা।
প্রযোজনায় অংশগ্রহণ করেন, শাহীদুল হক মিল্কী, সোহেল আহমেদ, মনোয়ার হোসেন, আরিফ আনোয়ার, খুরশিদা ইয়াসমিন, রিফাত আরা ইসলাম, খাইরুল আলম রবি, তৃষা খন্দকার, জনি মুহাম্মদ নুর উদ্দিন, শরিফুল ইসলাম শিবলী, বর্ণালী সরকার, আশরাফি জাহান মিতু, দেওয়ান সুমাইয়া সুলতানা আশা, সামিরা মাশরুহা, আরিফুল ইসলাম শাহাব, শাহদাত পলাশ, রোহনী তাসকিম ইতি, তাহিরাতুজ জোহরা অর্নিম, মিফতাহুল জান্নাত, আহসান হায়দার, মনিরা খাতুন, সাবিকুন নাহার লিমু ও রোজ।
মঞ্চ পরিকল্পনায় ছিলেন, আরিফ আনোয়ার, আপু ইব্রাহিম, চমন আরা মুস্তারি, রোকসানাসহ অনেকে।
আবহ সংগীতে ছিলেন, আরিফুল ইসলাম শাহাব, শাহদাত পলাশ ও জনি মুহাম্মদ নুর উদ্দিন।
এছাড়া আলোক প্রক্ষেপণে ছিলেন, রাশেদুল ইসলাম রানা, আরিফ আনোয়ার ও শরিফুল ইসলাম শিবলী। শব্দ নিয়ন্ত্রণে ছিলেন জাহিদুর রহমান।