টরন্টোর স্কারবরোতে উদযাপিত হলো আবৃত্তি গীতি আলেখ্য। শনিবার (৭ অক্টোবর) অনুষ্ঠানটি কবি আসাদ চৌধুরীর স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা রেখে উৎসর্গ করা হয়। অনুষ্ঠানের শুরুতে কবি আসাদ চৌধুরীকে স্মরণ করে স্মরণসভা ও তাকে নিয়ে লেখা কবিতা থেকে পাঠ করা হয়।
কবি আসাদ চৌধুরীর স্মৃতিচারণা করেন টরন্টোর খ্যাতনামা নাট্যকার আহমেদ হোসেন, সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব ও কবি হাসান মাহমুদ, সমাজসেবী ও সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব ফরিদা হক, সমাজসেবী ও সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব যোয়াকিম ভিক্টর গোমেজ এবং কবি তনয় আসিফ চৌধুরী। কবি কাজী জহিরুল ইসলামের কবিতা ‘আসাদ ভাই যাচ্ছেন’-এর বৃন্দ আবৃত্তিতে উচ্চারিত হয় কবির প্রতি বিনম্র শ্রদ্ধা ও ভালোবাসা। আবৃত্তিতে অংশ নেন আবৃত্তিশিল্পী মাহবুবা রুনা, জিনাত জাহান , মুনিমা শারমিন, জনি ফ্রান্সিস গোমেজ, মানবী মৃধা, ফ্লোরা শুচি ও সবুজ হক। তারা যুক্তরাষ্ট্র ও কানাডার বিভিন্ন শহর থেকে যুক্ত হয়েছিলেন। এ সময় কবির বিদেহী আত্মার শান্তি কামনা করে ও কবিকে শ্রদ্ধা জানিয়ে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়।
নশ্বর পৃথিবীতে প্রেম চিরন্তন! অনন্তকাল ধরে জীবনের বন্ধন রচনা করে এই প্রেম। বিপন্ন এই পৃথিবীতে মানুষের বেঁচে থাকার সংগ্রামও চিরন্তন। হৃদয়ের ভাঙা গড়ায় তবুও মানুষ প্রেমে ভাসে, শত প্রতিবন্ধকতা উপেক্ষা করেও জন্মজন্মান্তর ভালোবাসার অঙ্গীকার করে বলে ওঠে, ‘উত্তরের জানালায়’ প্লাটফর্ম থেকে এই আয়োজনটির নামকরণ করা হয় ‘দেখা হল বছর কুড়ি পর’। আয়োজনটি দুটি অংশে উপস্থাপন করা হয়, যাতে প্রমিতো ও আঞ্চলিক কবিতার আবৃত্তি উপস্থাপন করা হয়। মানব-মানবীর সম্পর্ক, প্রেম, ভালোবাসা, অনুভূতির অনুরণন তা দেশ, সীমা, জাতি, গোত্র, সমাজ-সংসার, ভাষা পেরিয়ে একই স্পন্দনে স্পন্দিত হলেও জীবনের সেই চাওয়া-পাওয়া, প্রাপ্তি-অপ্রাপ্তি, অভিযোগ-অনুযোগগুলো সব ক্ষেত্রে এক নয়, সব সময় পূর্ণতা লাভ করে না -অপূর্ণতার মাঝেই তাই খুঁজে ফেরে প্রেম ভালোবাসা আর বন্ধুত্ব।
জীবনের বিভিন্ন সীমায় পরিসীমায় মানব-মানবীর প্রেম ও ভালবাসার উপখ্যান উঠে এসেছে বহুল চর্চিত ও বিখ্যাত কবিতার উচ্চারণে। সেই সঙ্গে আবহতে মুগ্ধ করে রাখেন এডওয়ার্ড মিল্টনের মূর্ছনা ও সংগীত। জিনাত জাহান (ওকলোহোমা -যুক্তরাষ্ট্র) মাহবুবা জামান রুনা (টেনেসি -যুক্তরাষ্ট্র) আসিফ চৌধুরী (টরন্টো) মুনিমা শারমীন (টরন্টো) জনি ফ্রান্সিস গোমেজ (টরেন্টো) ফ্লোরা শুচি (টরন্টো) সবুজ হক (অটোয়া) সামিরা সামাদ (ঢাকা) ও সুমন হকের (ঢাকা) উচ্চারণ ছুঁয়ে যায় শ্রোতাদের মন। মুহুরমুহু করোতালিতে শ্রোতা ও দর্শকরা অভিনন্দিত করেন শিল্পীদের। এখানে উল্লেখ্য যে অতিমারির দুঃসময়ে ‘উত্তরের জানালায়’ অন্তর্জালে কবিতা আবৃত্তি ও গান দিয়ে জয় করে নিয়েছিলেন শ্রোতা ও দর্শকদের মন।
‘উত্তরের জানালায়’-এর আহ্বায়ক ফ্লোরা শুচি ও সবুজ হকের দৃষ্টিনন্দন সঞ্চালনায় সন্ধ্যা ৬টার দিকে আয়োজনটি শুরু করা হয়। তিন ঘণ্টার এ মনোজ্ঞ আয়োজন শেষে আমন্ত্রিত অতিথিরা অংশগ্রহণ করেন চা চক্রে। আয়োজনটিকে সফল করতে যুক্ত হয়েছিলেন বিশিষ্ট ও সাংস্কৃতিক ব্যক্তিরা। তাদের মধ্যে রয়েছেন প্রভিনসিয়াল পার্লামেন্টের সদস্য মিস ডলি বেগম, বিশিষ্ট নাট্যব্যক্তিত্ব আবৃত্তিকার সংগঠক আহমেদ হোসেন, বিশিষ্ট সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব কবি ও অভিভাবক হাসান মাহমুদ, দেশে-বিদেশে টিভির অধিকর্তা নজরুল মিন্টো, NRB TV এর অধিকর্তা সাহেদুল ইসলাম মিন্টু , নন্দন টিভির অধিকর্তা নীল উৎপল, আলোকচিত্রি বিদ্যুৎ সরকার, কবিপুত্র আসিফ চৌধুরী, কবি ও প্রাবন্ধিক রেজা অনিরুদ্ধ, বিশিষ্ট গজল ও সংগীতশিল্পী শোয়েব মর্তুজা, বিশিষ্ট সংগীতশিল্পী অমিত রায়, প্রধান পৃষ্ঠপোষক ফরিদা হক, যোয়াকিম ভিক্টর গোমেজ, আশরাফ খান, সাবরিন সুলতানা , জামাল হোসাইন ও ফরিদা হক, মোহাম্মদ কায়েস রহমান, ব্যারিস্টার রওশন আরা ইসলাম, ভিকটর রোজারিও, রাহুল সাহা, কল্যানি ইন্ডিয়ান কুইজিন ও ব্যারিস্টার আব্দুর রাজ্জাক। বিশিষ্ট আবৃত্তিশিল্পী ও সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব রাশেদা মুনীর, হাসি রহমান, রিফাত নূয়েরীন, জানা শাম্মী, আলোকধারায় মিলি, ট্রিস্টেন রোজারীও, ফারহানা হুদা, ডক্টর মনিরুজ্জামান।
অনুষ্ঠান পরিকল্পনা: সবুজ হক, ফ্লোরা শুচি। গান ও আবহ: এডওয়ার্ড মিল্টন। সহযোগিতায়: রিফফাত নূয়েরীন, মানবী মৃধা। চলমানচিত্র ধারণ ও সম্প্রচারণ: জানা শাম্মী। অন্তর্জাল সম্প্রচার: সামিরা সামাদ, সুমন হক। গ্রন্থনা: ফারিহা রহমান, সবুজ হক, সামিরা সামাদ, শিরীণ আক্তার।
সার্বিক সহযোগিতা ও সমন্বয়: তুষি শারমীন। কার্যকরী সদস্য: সামিরা সামাদ, সুমন হক, শিরীণ আক্তার, তুষি শারমীন, মাহবুবা জামান রুনা, শামস কালাম, মানবী মৃধা। সার্বিক তত্ত্বাবধানে: ফ্লোরা শুচি। নির্দেশনা ও প্রযোজনা: সবুজ হক।