সিডনিতে প্রদর্শনী হচ্ছে ‘জীবন থেকে নেয়া’, টাকা ছাড়াই দেখার সুযোগ


সংবাদ প্রকাশ ডেস্ক
প্রকাশিত: ফেব্রুয়ারি ৮, ২০২৫, ১২:৩৭ পিএম
সিডনিতে প্রদর্শনী হচ্ছে ‘জীবন থেকে নেয়া’, টাকা ছাড়াই দেখার সুযোগ
প্রদর্শনীর সূচি। ছবি : সংগৃহীত

সিডনির ক্যাম্পবেলটাউনের ডুমারেস্ক স্ট্রিট সিনেমায় ঐতিহাসিক বাংলা ছবি ‘জীবন থেকে নেয়া’র বিশেষ প্রদর্শনীর আয়োজন করা হয়েছে। বঙ্গজ ফিল্মস এবং বেঙ্গলি সিনে ক্লাব অস্ট্রেলিয়ার প্রতিষ্ঠাতা তানিম মান্নান ঐতিহাসিক বাংলা এই সিনেমাটির বিশেষ প্রদর্শনীর আয়োজন করেছেন।

আগামী ২৩ ফেব্রুয়ারি সন্ধ্যায় এই প্রদর্শনী অনুষ্ঠিত হবে।  

উন্মুক্ত এ আয়োজনে প্রদর্শনী মূল্য থাকছে না, তবে আসন সংখ্যা যেহেতু সীমিত তাই উপস্থিতি নিশ্চিত করার জন্য এসএমএসের মাধ্যমে নাম ও আসনের সংখ্যাসহ ০৪০৬০৬৩০৫ নম্বরে আগামী ১৪ ফেব্রুয়ারির মধ্যে নিশ্চিত করতে হবে।

জানা গেছে, ছবিটি যত্নসহকারে 2K রেজোলিউশনে এবং HD মানের অডিওসহ পুনরুদ্ধার করা হয়েছে। পাশাপাশি নতুন প্রজন্মের জন্য তানিম মান্নান নিজ উদ্যোগে ইংরেজি সাবটাইটেল যোগ করেছেন। এই উদ্যোগটি অস্ট্রেলিয়ায় জন্ম বা বেড়ে ওঠা পরবর্তী প্রজন্মের কাছে বাংলা সিনেমার গৌরব উপস্থাপন করার ইচ্ছা থেকে পরিচালিত হয়েছে।

‘জীবন থেকে নেয়া’ হলো প্রয়াত জহির রায়হানের একটি মৌলিক কাজ, যাকে বাংলা চলচ্চিত্রের অন্যতম প্রভাবশালী পরিচালক হিসেবে বিবেচনা করা হয়। ১৯৭০ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত ছবিটি একটি শক্তিশালী রাজনৈতিক ব্যঙ্গচিত্র যা বাংলা ভাষা আন্দোলন এবং স্বাধীনতার সংগ্রাম দ্বারা অনুপ্রাণিত। গল্পটি একজন অত্যাচারী মহিলাকে কেন্দ্র করে, যা শোষক শ্রেণির শাসনের প্রতীক এবং সেই শাসনের বিরুদ্ধে প্রতিরোধের গল্প। বাস্তব ঘটনার আলংকারিক চিত্রণ দর্শকদের মুগ্ধ করে এবং আজও প্রাসঙ্গিক।

বঙ্গজ ফিল্মস এবং বেঙ্গলি সিনে ক্লাব অস্ট্রেলিয়ার প্রতিষ্ঠাতা তানিম মান্নান জানান, জীবন থেকে নেয়া আমার এবং আমাদের প্রজন্মের অনেক বাংলাদেশির কাছে ভীষণ আবেগপূর্ণ। আমরা ২১ ফেব্রুয়ারি প্রতি বছর টেলিভিশন বা ভিসিআরে এটি দেখে বড় হয়েছি। ছবিটির গল্প, সংলাপ এবং প্রেক্ষাপট এখনো প্রাসঙ্গিক এবং বাংলাদেশের বর্তমান চলমান পরিস্থিতির সঙ্গেও ভীষণ সংগতিপূর্ণ। সিনেমাটি আমাদের নির্যাতন এবং মানবতার বিরুদ্ধে যেকোনো ষড়যন্ত্রের বিস্তার ঠেকাতে ঐক্যবদ্ধ হতে অনুপ্রাণিত করে।

এই আয়োজনে তানিম তার বন্ধু, লেখক এবং চলচ্চিত্র সমালোচক বিধান রিবেরুর প্রতি তার গভীর কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন, তিনি প্রয়াত জহির রায়হানের পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগের ব্যবস্থা করেছিলেন। তানিম জহির রায়হানের সন্তান অনল রায়হান ও তপু রায়হানের প্রতিও অশেষ কৃতজ্ঞ, যারা সাগ্রহে প্রদর্শনের জন্য অনুমতি প্রদান করেছেন।

আনুষ্ঠানিক অনুমোদন পাওয়ার পর তানিম বাংলাদেশ চলচ্চিত্র উন্নয়ন করপোরেশন (বিএফডিসি) থেকে চলচ্চিত্রটির ডিজিটালি পুনরুদ্ধার করা কপি সংগ্রহ করে রেজর এজ স্টুডিওর কৌশিক এর মাধ্যমে এটি আরও উন্নত করেন। তানিম এবং তার ছোট ভাই তাহিনুল মান্নান সংলাপগুলির প্রতিলিপি করার পর সাবটাইটেলের জন্য ইংরেজিতে অনুবাদ করেছেন।

২০১৬ সাল থেকে এ পর্যন্ত অস্ট্রেলিয়া, নিউজিল্যান্ড এবং অন্যান্য দেশে ৫০টির বেশি বাংলা চলচ্চিত্র মুক্তি দিয়েছেন তানিম। এমন অসাধারণ এবং অনুপ্রেরণামূলক চলচ্চিত্রগুলো  তিনি আরও বড় পরিসরে দেখানোর স্বপ্ন দেখেন।

তানিম বলেন, “আমরা আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উদযাপনের জন্য একটি হাউসফুল শোর জন্য অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছি। এই প্রদর্শনী প্রয়াত জহির রায়হানের কালজয়ী নৈপুণ্যের প্রতি আমাদের শ্রদ্ধার্ঘ। চলচ্চিত্রপ্রেমীদের এই সাংস্কৃতিক উদযাপনে অংশ নেওয়ার জন্য আমন্ত্রণ জানাচ্ছি।”

Link copied!