রোমানিয়া এক বছরে বাংলাদেশের ৩৯৭ জন অভিবাসীকে ফেরত পাঠিয়েছে। মঙ্গলবার (১৬ জানুয়ারি) দেশটির জেনারেল ইনস্পেক্টরেট ফর ইমিগ্রেশনের (আইজিআই) বরাত দিয়ে ইনফোমাইগ্রেন্টস এ তথ্য প্রকাশ করে।
এই ৩৯৭ বাংলাদেশিসহ বিভিন্ন দেশের মোট ১ হাজার ২২২ নাগরিককে রোমানিয়া নিজস্ব পুলিশি পাহারায় তাদের নিজ নিজ দেশে ফেরত পাঠিয়েছে। এর মধ্য দিয়ে ২০২৩ সালে অভিবাসীদের জোর করে ফেরত পাঠানোর ক্ষেত্রে শীর্ষে পৌঁছেছে নতুন শেনজেন জোটভুক্ত হওয়া এই দেশ। ফেরত পাঠানোর এই ব্যক্তিরা আগামী পাঁচ বছর ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) কোনো দেশে প্রবেশ করতে পারবেন না।
২০০৭ সাল থেকে ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) সদস্য রোমানিয়া ও বুলগেরিয়া। ২০২৩ সালের ডিসেম্বরে রোমানিয়া সরকার জানায়, আকাশ ও সমুদ্রসীমান্ত দিয়ে ইউরোপের পাসপোর্টমুক্ত অবাধ চলাচলের শেনজেন অঞ্চলে প্রবেশ করবে দেশ দুটি। ২০২৪ সালের মার্চ মাস থেকে এ সিদ্ধান্ত কার্যকর হবে।
জানা যায়, শুধু ডিসেম্বরে বড়দিনের ছুটির দিনগুলোয় রোমানিয়া ছেড়ে ইউরোপের অন্য দেশে যেতে উদ্যত ১০৩ জন বাংলাদেশি সীমান্তে ধরা পড়েছেন। তাদের মধ্যে ২০ জনকে এরই মধ্যে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। যাদের ফেরত পাঠাতে হয়, তাদের পাসপোর্ট থাকলে রোমানিয়া সরকার যোগাযোগ করে না। কিন্তু গত বছর দেশটির সরকারের অনুরোধে বুখারেস্টে বাংলাদেশ দূতাবাস থেকে অসংখ্য ট্রাভেল পাস (টিপি) দিতে হয়েছে। ফেরত পাঠানো ব্যক্তিদের একটি বড় অংশ কাজের বৈধ ভিসা নিয়ে রোমানিয়ায় গিয়েছিলেন।
২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে জানানো হয়েছিল, বাংলাদেশকে ৮ হাজার ৪০০ ভিসা দেবে রোমানিয়া। এর মধ্যে নতুন ভিসা ৫ হাজার এবং বাকি ৩ হাজার ৪০০ ভিসা প্রক্রিয়াধীন।
২০২৩ সালের এপ্রিলে রোমানিয়ার সীমান্ত পুলিশ বিভিন্ন আফ্রো-এশীয় দেশ থেকে আসা ১১৫ জন বিদেশি নাগরিককে গ্রেপ্তার করে। তারা বিভিন্ন উপায়ে লুকিয়ে অবৈধভাবে হাঙ্গেরি সীমান্ত অতিক্রম করার চেষ্টা করেছিলেন। তাদের মধ্যে অধিকাংশই ছিলেন বাংলাদেশি।
ইনফোমাইগ্রেন্টসের তথ্য অনুযায়ী, ২০২৩ সালে রোমানিয়া থেকে ফেরত যাওয়া লোকদের মধ্যে দ্বিতীয় স্থানে আছেন পাকিস্তানের অভিবাসীরা। দেশটির মোট ১৫৪ নাগরিককে ফেরত পাঠানো হয়েছে।
এ ছাড়া নেপালের ১২৩ জন, শ্রীলঙ্কার ১০৪ জন, ভারতের ৮৮ জন, মলডোভার ৫৮ জন, মিসরের ৫২ জন, মরক্কোর ৩৯ জন, ভিয়েতনামের ৩২ জন ও সিরিয়ার ৩ জন নাগরিককে বছরের বিভিন্ন সময় ফেরত পাঠিয়েছে রোমানিয়া সরকার।
যাদের ফেরত পাঠানো হয়েছে, তাদের সবার আগামী পাঁচ বছর ইউরোপীয় ইউনিয়নের ২৭টি সদস্যরাষ্ট্র, ইউরোপীয় অর্থনৈতিক এলাকা (ইউরো জোন) ও সুইজারল্যান্ডে প্রবেশের ওপর নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে।