• ঢাকা
  • রবিবার, ০৮ সেপ্টেম্বর, ২০২৪, ২৪ ভাদ্র ১৪৩১, ৩ রবিউল আউয়াল ১৪৪৫

সৌদিতে সড়কে নিভে গেল চাঁদপুরের ৩ যুবকের প্রাণ


চাঁদপুর প্রতিনিধি
প্রকাশিত: জুন ১৪, ২০২৪, ০২:২০ পিএম
সৌদিতে সড়কে নিভে গেল চাঁদপুরের ৩ যুবকের প্রাণ
সৌদিতে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত ৩ যুবক। ছবি: সংগৃহীত

সৌদি আরবের আফিফ শহরে সড়ক দুর্ঘটনায় চাঁদপুরের তিন রেমিট্যান্স-যোদ্ধার মৃত্যু হয়েছে। বৃহস্পতিবার (১৩ জুন) সৌদি আরবের আফিফ শহরের বিশ্ব রোডে দুই মাইক্রোবাস মুখোমুখি সংঘর্ষের এ দুর্ঘটনা ঘটে। পরে রাতে তাদের পরিবারে মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়লে শোকের ছায়া নেমে আসে।

পরিবারের দাবি, সরকারের সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের হস্তক্ষেপে দ্রুত তাদের মৃতদেহ দেশে আনার ব্যবস্থা করা হোক। নিহতরা হলেন চাঁদপুরের হাইমচরের কমলাপুর গ্রামের রিফাত ও দক্ষিণ আলগী গ্রামের সাব্বির এবং ফরিদগঞ্জের কনট্র্যাক্টর সবুজ হোসেন।

হাইমচর উপজেলার দক্ষিণ আলগী দুর্গাপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান জলিলুর রহমান মাস্টার তার ইউনিয়নের দুজন ও পার্শ্ববর্তী উপজেলার একজনসহ মোট তিনজন সড়ক দুর্ঘটনায় সৌদি আরবে মারা যাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

শুক্রবার (১৪ জুন) সকালে সরজমিনে তাদের বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, স্বজন হারানোর শোকে কান্নায় ভেঙে পড়েছেন পরিবারে সদস্যরা। চার বছর আগে সৌদি আরব পাড়ি দেওয়া রিফাত ঈদের পর দেশে আসার কথা ছিল। রিফাত আসবে ঠিকই, তবে জীবিত নয়, মৃতদেহ। এমন বিলাপে কান্নাকাটি করছে তার বোন আর মা-বাবা।

রিফাতের বাবা দেলোয়ার হোসেন বলেন, ‘ছেলে দেশে আসার কথা। নতুন আকামা করবে। কত স্বপ্ন ছিল।  সব শেষ হয়ে গেলো। ছেলের শোক কিভাবে সইবো।’

দুর্ঘটনায় নিহত আরেক যুবক সাব্বির হোসেন। তিনি রিফাতের খালাতো ভাই। তারা কনট্রাকটর সবুজ হোসেনের সাথে কনস্ট্রাকশনের কাজ করতো। পরিবারের দাবি সাব্বিরের মৃতদেহ দ্রুত দেশে আনার ব্যবস্থা করার।

সাব্বিরের বাবা ইসমাইল হোসেন বলেন, ‘কোন টাকা পয়সা চাই না। ছেলেটারে দেখতে চাই। নিজের হাতে দাফন করব।’

মাত্র দুই সপ্তাহ আগে স্ত্রী ও দুই কন্যা সন্তানকে সৌদি আরবে নেয় কন্ট্রাক্টার সবুজ হোসেন। তিনি দীর্ঘ বছর সৌদি প্রবাসী। নিজেই গাড়ী ড্রাইভ করে বাসায় ফেরার পথে দুর্ঘটনায় কবলিত হন। তার বাড়ি ফরিদগঞ্জ উপজেলার ১২ নং পশ্চিম চরদুখিয়া ইউনিয়নের পশ্চিম বিশ কাটাখালী গ্রামে। মা-বাবা ও চার ভাই -বোনের সংসার। মৃত্যুর খবরে চলছে শোকের মাতম।

সবুজের বাবা জামাল  ফকির সরকারের কাছে সন্তানকে দেশে আনার প্রক্রিয়া করার আহবান জানিয়ে বলেন, ‘১৮ বছর ছেলে বিদেশ করে। দুই নাতিন আর বউমাকে নিয়ে গেছে। এখন তো আমাকে পরিবারের আলোর প্রদীপ আর নেই। কে দেখাশোনা করবে এতো বড় পরিবারের।’

সরকারের কাছে রিফাত, সাব্বির ও সবুজের পরিবারের শেষ আকুতি তাদের মৃতদেহ দ্রুত দেশে আনার ব্যবস্থা করার। এ বিষয়ে হাইমচর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা উম্মে সালমা নাজনীন তিশা বলেন, ‘পরিবারের পক্ষ থেকে সহযোগিতা চাওয়া হলে তাদের মৃতদেহ দেশে আনার জন‍্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

Link copied!