• ঢাকা
  • রবিবার, ২৪ নভেম্বর, ২০২৪, ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

২৫ মার্চের কালরাতের কথা ও ইতিহাসের দায়


হাবীব ইমন
প্রকাশিত: মার্চ ২৫, ২০২৪, ০২:১০ পিএম
২৫ মার্চের কালরাতের কথা ও ইতিহাসের দায়

মার্কিন সাংবাদিক রবার্ট পেইন লিখেছেন, “সে রাতেই সাত হাজার মানুষকে হত্যা করা হয়, গ্রেপ্তার করা হয় আরও তিন হাজার লোককে। পূর্ব পাকিস্তানজুড়ে সৈন্যরা বাড়িয়ে চলল মৃতের সংখ্যা। জ্বালাতে শুরু করল ঘরবাড়ি, দোকানপাট, লুট আর ধ্বংস তাদের নেশায় পরিণত হলো যেন। রাস্তায় রাস্তায় পড়ে থাকা মৃতদেহগুলো কাক-শেয়ালের খাবারে পরিণত হলো। সমস্ত বাংলাদেশ হয়ে উঠল শকুন-তাড়িত শ্মশানভূমি।”

পৃথিবীর ইতিহাসে এক ভয়াবহ রক্তপাতের কালরাত ২৫ মার্চ। পাকিস্তান সেনাবাহিনী এই দিন মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধের এক সবচাইতে খারাপ নজির তৈরি করেছিল বাংলাদেশে। ঢাকা শহরের নিরস্ত্র ঘুমন্ত মানুষের লাশের স্তূপগুলো পৃথিবীর মানুষকে স্তম্ভিত করেছিল। 
দুনিয়াজুড়ে মানুষের ঘৃণা আর ক্ষোভ তৈরি হয়েছিল পাকিস্তানিদের গণহত্যার বিরুদ্ধে। পাকিস্তান সেনাবাহিনীর অপারেশন সার্চলাইটকে বলা হয় অপারেশন ব্লিটজের সিক্যুয়েল, যার উদ্দেশ্য ছিল, এই ভূমির প্রধান শহরগুলোর নিয়ন্ত্রণ নিতে শক্তিপ্রয়োগ করে এক মাসের মধ্যে সব ধরনের রাজনৈতিক এবং সামরিক প্রতিরোধ গুঁড়িয়ে দেওয়া। তারা মানুষ নয়, চেয়েছিল এই দেশের পোড়া আর রক্তে ভেজা মাটি।

১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ দিনটি ছিল বৃহস্পতিবার। বাইশে মার্চ বঙ্গবন্ধুর বাসভবনে প্রাক্তন বাঙালি সৈনিকদের সঙ্গে বৈঠকে কর্নেল এম এ জি ওসমানী (মুক্তিবাহিনীর প্রধান সেনাপতি) বঙ্গবন্ধুকে জিজ্ঞাসা করেন, “ডু ইউ থিংক দ্যাট টুমরো উইল বি এ ক্রুসিয়াল ডে?” বঙ্গবন্ধু জবাবে বলেন, “নো, আই থিংক, ইট উইল বি টুয়েন্টি ফিফথ্।”

তখন ওসমানী পুনরায় তীক্ষ্ণ স্বরে তার কাছে প্রশ্ন রাখেন, “কাল তো তেইশ মার্চ। পাকিস্তান দিবস। সে উপলক্ষে ওরা কী কিছু করতে চাইবে না?” বঙ্গবন্ধু বলেন, “ওরা যেকোনো মুহূর্তে যেকোনো কিছু করতে পারে। তার জন্য কোনো দিবসের প্রয়োজন হয় না।”

কী নিখুঁত হিসাব বঙ্গবন্ধুর। হিসাব করেই তিনি বলেছিলেন, পঁচিশে মার্চেই পাকিস্তানিরা ক্র্যাকডাউন করবে।

দুই
আগুন জ্বলছে পলাশীর বস্তিতে, বিদ্রোহ ইপিআর ও রাজারবাগ পুলিশ লাইনসে। দাউদাউ করে জ্বলছে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ও স্থাপনা। রাতের শেষ প্রহরে কামানের গর্জন। আগুনের ফুলকি চারিদিকে। সামরিক শাসক ইয়াহিয়ার নির্দেশে, জেনারেল টিক্কা খানের নেতৃত্বে ‘অপারেশন সার্চ লাইট’ নামের সামরিক অভিযানে সংঘটিত হয় ইতিহাসের জঘন্যতম গণহত্যা। জাতিসংঘের ঘোষণায় ‘জেনোসাইড’-এর যে সংজ্ঞা দেওয়া হয়েছে, তার পুঙ্খানুপুঙ্খ বাস্তবায়ন হয়েছে সেদিন বাঙালির ওপর। রাজারবাগ পুলিশ লাইনস, পিলখানার তৎকালীন ইপিআর ক্যাম্প, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের জগন্নাথ হল, রোকেয়া হল, জহুরুল হক হলসহ সারা ঢাকা শহরে তারা ব্যাপক হত্যাযজ্ঞ চালায়। ২৬ মার্চ সকালে ঢাকা থেকে বের করে দেওয়া হয় বিদেশি সাংবাদিকদের; যাতে করে কেউ গণহত্যার কোনো সংবাদ পরিবেশন করতে না পারেন।

আর্চার ব্লাডের লেখা ‘দ্য ক্রুয়েল বার্থ অব বাংলাদেশ’ গ্রন্থ থেকে জানা যায়, সেই রাতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রোকেয়া হলে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়েছিল এবং ছাত্রীরা হল থেকে দৌড়ে বের হওয়ার সময় মেশিনগানের গুলি চালিয়ে তাদের হত্যা করা হয়েছিল। ২৬ মার্চ সকালের দিকে সেনাবাহিনীর কন্ট্রোল রুম ও ৮৮ ইউনিটের মধ্যে যে কথোপকথন হয় তার রেকর্ড থেকে জানা যায়, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসেই অগণিত ছাত্রছাত্রী নিহত হয়েছিলেন।

বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ মিনার আবাসিক এলাকায় ৩৪ নম্বর ভবনের নিচতলায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের অধ্যাপক জ্যোতির্ময় গুহঠাকুরতা থাকতেন। ২৫ মার্চ রাত দুইটার দিকে রান্নাঘরের দরজা ভেঙে ঢুকে পড়ে এক পাকিস্তানি সেনা কর্মকর্তা। শোবার ঘরে গিয়ে জ্যোতির্ময় গুহঠাকুরতাকে টেনেহিঁচড়ে বাইরে নিয়ে যাওয়া হয়। একই ভবনের তিনতলা থেকে নেওয়া হয় পরিসংখ্যান বিভাগের অধ্যাপক এ এন এম মুনীরউজ্জামানকেও।

১৯৭১ সালে দশম শ্রেণিতে জ্যোতির্ময় গুহঠাকুরতার মেয়ে মেঘনা গুহঠাকুরতা পড়তেন। এখন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক। সেই রাতের স্মৃতিচারণা করতে গিয়ে তিনি জানান, তার বাবাকে টেনে ঘর থেকে বের করে নেওয়ার পর আটটি গুলির শব্দ তারা শুনতে পান। তখন অধ্যাপক মুনীরউজ্জামানের স্ত্রী সৈয়দা মাহমুদা জামান নিচে নেমে দেখেন, জ্যোতির্ময়ের দেহে প্রাণ আছে। তার ঘাড়ে ডান দিকে গুলি করেছে। শরীর অবশ। কিন্তু অধ্যাপক মুনীরউজ্জামান সেখানেই মারা যান। পরে ৩০ মার্চ হাসপাতালে মারা যান জ্যোতির্ময় গুহঠাকুরতা।

২৫ মার্চ মধ্যরাতে পাকিস্তানি সেনারা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের জগন্নাথ হলের প্রভোস্ট ভবনে ঢুকে হত্যা করে দর্শনের অধ্যাপক গোবিন্দ চন্দ্র (জিসি) দেবকে। তাঁর লাশ মাটিচাপা দেয় হলের মাঠে।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে এই হামলার ঘটনা প্রত্যক্ষ করেছিলেন রবিউল আফতাব। তখন তার বয়স মাত্র ছয়। মুক্তিযুদ্ধে শহীদ বুদ্ধিজীবী এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক আনোয়ার পাশা ছিলেন তার বাবা। ওই ঘটনার বর্ণনা দিতে গিয়ে তিনি জানান, রাত্রি একটু বেশি হতেই শোনা গেল প্রচণ্ড গোলাগুলির আওয়াজ। তার এটুকু মনে আছে যে অল্প কিছুক্ষণের মধ্যেই তা বেড়ে ভয়াবহ রূপ ধারণ করল।

রবিউল আফতাব বলেন, “কান ফাটানো আওয়াজ, কিছুক্ষণের মধ্যে চারিদিকে প্রচণ্ড আলো- এখন যেমন আমরা ফ্লাডলাইট বলি, সে রকম আলো। কিছুক্ষণের মধ্যে শোনা গেল অনেক গাড়ির আওয়াজ। আমাদের ছাদের ওপর কেমন জানি ভারী মচমচে জুতার আওয়াজ। আমরা ভয়ে খাটের নিচে ঢুকে গিয়েছিলাম।” পরে তিনি শুনেছিলেন ছাদের দেয়ালে চারিদিক থেকে পাকিস্তানি সেনারা এলোপাতাড়ি গুলি চালাচ্ছে। চারিদিকে মানুষের ‘বাঁচাও বাঁচাও’ ভয়ার্ত চিৎকারের মধ্যে ২৫ মার্চের সেই ‘বিভীষিকাময়’ গোটা রাত্রি কাটায় তার পরিবার।

প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ড. নূরুল্লার ধারণকৃত ভিডিও চিত্রে দেখা যায়, ছাত্রদের দিয়েই জগন্নাথ হলের মাঠে গর্ত খোঁড়া হচ্ছে, আবার সেই গর্তেই ছাত্রদের লাশ মাটিচাপা দেওয়া হচ্ছে। অনেক ঘরবাড়ি ও পত্রিকা অফিস, প্রেসক্লাবে আগুন ধরিয়ে, কামান ও মর্টার হামলা চালিয়ে সেগুলো বিধ্বস্ত করা হয়। অগ্নিসংযোগ করা হয় শাঁখারীপট্টি ও তাঁতীবাজারের অসংখ্য ঘরবাড়িতে। ঢাকার অলিগলিতে, বহু বাড়িতেও অগ্নিসংযোগ করা হয়। হত্যাকাণ্ড শুরুর প্রথম তিন দিনে ঢাকা, চট্টগ্রাম, যশোর, ময়মনসিংহ, কুষ্টিয়া ও অন্যান্য শহরে লাখ লাখ নর-নারী ও শিশু প্রাণ হারায়। ঢাকার প্রায় ১০ লাখ ভয়ার্ত মানুষ গ্রামে গিয়ে আশ্রয় নেয়।

তিন
নিরস্ত্র ও শান্তিপ্রিয় বাঙালির ওপর ‘অপারেশন সার্চলাইট’ নামের ওই নিধনযজ্ঞের পরিকল্পনা হয়েছিল একাত্তরের মার্চের শুরুতেই, জুলফিকার আলী ভুট্টোর পাকিস্তানের লারকানার বাড়িতে। গণহত্যার ষড়যন্ত্রে অংশ নিয়েছিলেন জুলফিকার আলী ভুট্টো, জেনারেল ইয়াহিয়া এবং জেনারেল হামিদ প্রমুখ। তারা ভেবেছিলেন বিপুল সংখ্যার মানুষ হত্যা করলেই ভয় পেয়ে যাবে বাঙালি, থেমে যাবে এই জাতির স্বাধীনতার লড়াই।

অপারেশন সার্চলাইটের পরিকল্পনা লেখা হয়েছিল একটি সাধারণ কাঠপেনসিল দিয়ে। ২৫ মার্চ অভিযান চালানোর এক সপ্তাহ আগে এর পরিকল্পনা করেছিলেন পাকিস্তান সেনাবাহিনীর কর্মকর্তারা। ‘উইটনেস টু সারেন্ডার’ শিরোনামের একটি বই লিখেছেন সিদ্দিক সালিক। তিনি ১৯৭১ সালের মার্চে পাকিস্তান সেনাবাহিনীর জনসংযোগ কর্মকর্তা হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। সেই বইয়ে তিনি লিখেছেন, জেনারেল রাও ফরমান আলী হালকা নীল কাগজের অফিশিয়াল প্যাডের ওপর একটি সাধারণ কাঠপেনসিল দিয়ে পরিকল্পনার খসড়া লিখেছিলেন। সেই লেখা সিদ্দিক সালিক নিজের চোখে দেখেছিলেন।

মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ে গবেষকেরা মনে করেন, কাঠপেনসিল দিয়ে লেখা হয়েছিল, যাতে প্রমাণ বা দলিল হিসেবে তা না থাকে। কেননা, কাঠপেনসিলের লেখা দ্রুত নষ্ট করে ফেলা সম্ভব। যখন এই অপারেশন সার্চলাইটের পরিকল্পনা করা হয়েছিল, তখন ঢাকা ছিল রাজনৈতিক দিক থেকে চরম উত্তেজনাপূর্ণ। গণপরিষদের অধিবেশন স্থগিত করায় ঢাকা তখন বিক্ষোভের নগর।

এরই মধ্যে স্বাধীনতা আন্দোলনের নেতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ভাষণ দিয়েছেন ৭ মার্চ তৎকালীন রেসকোর্স ময়দানে। এর আগেই ঢাকায় ওড়ানো হয়েছে স্বাধীন বাংলাদেশের পতাকা। অন্যদিকে ঢাকায় তখন চলছে শেখ মুজিব এবং ইয়াহিয়া খানের মধ্যে বৈঠক। বৈঠকে অংশ নিতে জুলফিকার আলী ভুট্টোও তখন ঢাকায় ছিলেন। এমন প্রেক্ষাপটে পাকিস্তান সেনাবাহিনী নিয়েছিল অপারেশন সার্চলাইটের পরিকল্পনা।

চার
১৯৭১ সালের মার্চে পাকিস্তান সেনাবাহিনীর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের মধ্যে যারা ঢাকায় দায়িত্বরত ছিলেন, তাদের অনেকেই অবসরের পর স্মৃতিকথা লিখেছেন। তাদের কেউ কেউ লিখেছেন, রাজনৈতিক সমঝোতা ব্যর্থ হলে পাকিস্তানের কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠায় সামরিক অভিযান চালানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় এবং সেই সিদ্ধান্তের ভিত্তিতে অপারেশন সার্চলাইট পরিকল্পনা করা হয়।

‘আ স্ট্রেঞ্জার ইন মাই ওউন কান্ট্রি ইস্ট পাকিস্তান ১৯৬৯-১৯৭১’ শিরোনামে স্মৃতিচারণামূলক বই লিখেছেন মেজর জেনারেল খাদিম হুসাইন রাজা। ১৯৭১ সালে তিনি তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানে সেনাবাহিনীর ১৪তম ডিভিশনের জিওসি ছিলেন। পাকিস্তান সেনাবাহিনীর যে কর্মকর্তারা অপারেশন সার্চলাইটের পরিকল্পনা করেছিলেন, তাদের মধ্যে অন্যতম ছিলেন মেজর জেনারেল খাদিম হুসাইন রাজা।

বইয়ে খাদিম হুসাইন রাজা লিখেছেন, ১৯৭১ সালের ১৭ মার্চ রাতে পূর্ব পাকিস্তানের গভর্নর লেফটেন্যান্ট জেনারেল টিক্কা খান তাকে এবং মেজর জেনারেল রাও ফরমান আলীকে কমান্ড হাউসে ডেকে পাঠান। তারা দুজন সেখানে যাওয়ার পর টিক্কা খান তাদের বলেন, শেখ মুজিবের সঙ্গে ইয়াহিয়া খানের আলোচনায় প্রত্যাশিত অগ্রগতি হচ্ছে না। সে কারণে ইয়াহিয়া খান ‘মিলিটারি অ্যাকশন’-এর জন্য প্রস্তুত থাকতে বলেছেন।

ইয়াহিয়া খানের বরাত দিয়ে টিক্কা খান সেনা কর্মকর্তাদের একটি পরিকল্পনা তৈরির নির্দেশ দেন।

মেজর জেনারেল খাদিম হুসাইন রাজা তার বইয়ে আরও লিখেছেন, সেই নির্দেশ অনুযায়ী পরদিন ১৮ মার্চ ক্যান্টনমেন্টে তার বাসায় রাও ফরমান আলী আসেন। তারা দুজন মিলে অপারেশন সার্চলাইটের খসড়া তৈরি করেন। তারা দুজন আলাদা দুটি পরিকল্পনা তৈরি করেছিলেন। সে অনুযায়ী রাও ফরমান আলী ঢাকা অঞ্চলে সামরিক অভিযানের দায়িত্ব নেন এবং খাদিম হুসাইন রাজা দায়িত্ব নেন ঢাকার বাইরে।

সেই খসড়া নিয়ে তারা সন্ধ্যায় যান কমান্ড হাউসে। সেখানে অল্প সময়ের মধ্যেই তা অনুমোদন করা হয়। এরপর বাস্তবায়নের প্রস্তুতি নেওয়া শুরু করেন ১৯ মার্চ থেকে। সে অনুযায়ী ঢাকায় সশস্ত্র আক্রমণ চালানো হয় ২৫ মার্চ মধ্যরাতে।

পাঁচ
পৃথিবীর ইতিহাসে একটি নৃশংস রাত—এমনটার পুনরাবৃত্তি আমাদের কাম্য নয়। আমরা চাই নির্মোহ আর কাটাছেড়াহীন ইতিহাসের পথ ধরে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় এক অসাম্প্রদায়িক, গণতান্ত্রিক, শোষণমুক্ত ও ধর্মনিরপেক্ষ বাংলাদেশ গড়তে। তাহলে পরে ২৫ মার্চের কালোরাত আরও বেশি প্রাসঙ্গিক হবে, গুরুত্বপূর্ণ হবে। এই দিবসকে ঘিরে গণহত্যাকারীদের বিরুদ্ধে ঘৃণা জাগ্রত করা এবং সাংস্কৃতিক-সামাজিক আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে। যাতে আর কখনই এ রকম গণহত্যার ঘটনা না ঘটে। তাহলে হয়তো গণহত্যায় যারা শহীদ হয়েছেন, প্রকৃতভাবে তাদের চরণে মাল্যদানই পবিত্র থেকে উজ্জ্বলতর হবে। মনে রাখতে হবে, এটা ইতিহাসের দায়, অমোচনীয় ইতিহাসের দায়।  

Link copied!