মধ্যপ্রাচ্যের দুই শক্তি ইরান এবং ইসরায়েল অবশেষে মুখোমুখি সংঘাতে জড়িয়ে পড়েছে। এই সংঘাত যদিও এখন পর্যন্ত ভয়াবহ রূপ নেয়নি, তবে তা যে মারাত্মক আকার ধারণ করবে না, সে কথা বলার মতো অবকাশ আসেনি। বরং পরিস্থিতি যা সৃষ্টি হয়েছে, তাতে এই শঙ্কা এখনো জোরালো যে, যেকোনো সময় ভয়াবহ সংঘর্ষ হতে পারে। তবে গাজা যুদ্ধ এবং নির্বিচারে ফিলিস্তিনি নারী ও শিশু হত্যাসহ নানামুখী অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডের কারণে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে নেতানিয়াহুর উগ্র ডানপন্থী সরকার চাপের মুখে রয়েছে। বলা চলে তারা কূটনৈতিকভাবে ইরানের চেয়ে দারুণভাবে ব্যাকফুটে।
গত ১ এপ্রিল সিরিয়ার রাজধানীর দামেস্কের ইরানি কনসুলেট ভবনে ইসরায়েল যে বিমান থেকে ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করে হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে, তা শুধু হত্যাকাণ্ডের ভেতরেই সীমাবদ্ধ থাকেনি বরং ইরানের জাতীয় সার্বভৌমত্বকে লঙ্ঘন করেছে। ইসরায়েলের এই পদক্ষেপের কারণে আমেরিকাসহ তার পশ্চিমা মিত্ররাও একটা বিব্রতকর অবস্থায় পড়ে। যদিও তারা লাজ-লজ্জার মাথা খেয়ে জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদে ইরানের বিরুদ্ধে নিন্দা জানানোর চেষ্টা চালিয়েছে।
ইরানের কনসুলেট ভবনে ইসরায়েলি হামলার কারণে ইরান অনেকটা নৈতিকভাবে তার জবাব দেওয়ার জন্য চাপের মুখে পড়ে। এ বিষয়ে যেমন রাষ্ট্রীয়ভাবে চাপের মুখে পড়ে, তেমনি জনগণের চাপ ছিল। একইভাবে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে ইরানের অবস্থান ধরে রাখার জন্য ইসরায়েলের হামলার বিরুদ্ধে জবাব দেওয়া ইরানের জন্য অপরিহার্য হয়ে পড়ে। কারণ এই জবাব না দিলে মধ্যপ্রাচ্য এবং আন্তর্জাতিক অঙ্গনে ইরান এই প্রশ্নের মুখে পড়তো যে তাহলে কি ইরানের সেই সামরিক সক্ষমতা নেই, যা দিয়ে তারা ইসরায়েলের বিরুদ্ধে জবাব দিতে পারে? অথচ ইরান দীর্ঘদিন ধরেই বলে আসছে তার সার্বভৌমত্ব লঙ্ঘন করলে ইসরায়েলকে কঠোর এবং তাৎক্ষণিকভাবে জবাব দেওয়া হবে।
এ ছাড়া ইরান যে বিরাট সামরিক বাহিনী পোষে, পরমাণু কর্মসূচি, ক্ষেপণাস্ত্র কর্মসূচি মহাকাশ গবেষণা প্রকল্প, ড্রোন তৈরির প্রকল্প, কুদস তথা ফিলিস্তিন মুক্ত করার পরিকল্পনা এবং এগুলোর পেছনে ইরানে যে বিশাল অর্থ ব্যয় হয় তা নিয়েও দেশের জনগণের মধ্যে প্রশ্ন উঠত। এর পাশাপাশি দীর্ঘদিন ধরে আঞ্চলিক যে প্রক্সিফোর্স তৈরি করেছে ইরান এবং তার পেছনে যে সামরিক ও অর্থনৈতিক বিনিয়োগ রয়েছে তাও বৃথা বলে বিবেচনা করা হতো। এসব কিছু নিয়েই জনগণের ভেতরে এবং আন্তর্জাতিক অঙ্গনে প্রশ্ন উঠত। এ ছাড়া ইরানের জনগণের ভেতরে যে ঐতিহ্য ও জাতীয়তাবাদী চেতনা রয়েছে তা অটুট রাখতেও ইসরায়েলের বিরুদ্ধে ইরানের পাল্টা জবাব দেয়ার প্রশ্ন অনিবার্য ছিল।
যাহোক, এই জবাব দেওয়ার ক্ষেত্রে ইরান কিন্তু দারুণ পরিপক্কতার পরিচয় দিয়েছে, অন্তত কূটনৈতিক ক্ষেত্রে। ১ এপ্রিল ইরানি কনসুলেটে ইসরায়েল হামলা করলেও ইরান কিন্তু তাৎক্ষণিকভাবেই তার জবাব দেয়নি। বরং তারা কমপক্ষে ১২ দিন অপেক্ষা করেছে আন্তর্জাতিক অঙ্গন থেকে জাতিসংঘ-সহ বিভিন্ন সংস্থা ইসরায়েলের বিরুদ্ধে কী ব্যবস্থা নেয় তা দেখার জন্য। ইরান জাতিসংঘের কাছে বিষয়টি নালিশ হিসেবে তুলে ধরেছে, এই হামলার বিরুদ্ধে নিন্দা জানাতে এবং কার্যকর ব্যবস্থা নিতে জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদকে চিঠি দিয়েছে। কিন্তু কোনো জায়গা থেকেই কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। ফলে ইরান তার নিজের মতো করে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত করেছে এবং একেবারে প্রকাশ্যে বলে-কয়ে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে পাল্টা হামলা চালিয়েছে। এ ক্ষেত্রে আমেরিকা ও পশ্চিমা কারো চোখ রাঙানিকে হিসেবে ধরেনি।
এখানে খুবই গুরুত্বপূর্ণ কয়েকটি বিষয় হচ্ছে, ইরান যে হামলা চালিয়েছে তা আসলে কতটা কার্যকর ছিল, ইরান কোনো ধরনের ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন ব্যবহার করেছে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে হামলা চালাতে, ইরানের হামলা নস্যাৎ করতে আরব দেশগুলো কী ধরনের ভূমিকা রেখেছে— এসবই আলোচনায় আছে। এখানে একটা তথ্য জানিয়ে রাখি, ইরান নতুন-পুরনো অস্ত্রের মিশেলে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে হামলা চালিয়েছে। যতদূর জানা যাচ্ছে, ইরান কিছু পুরনো এবং মেয়াদ উত্তীর্ণ হওয়ার কাছাকাছি পর্যায়ের ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র পাঠিয়েছে ইসরায়েলের আকাশে। একই সাথে বেশ কিছু ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্র, ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র এবং হাইপারসনিক ক্ষেপণাস্ত্র দিয়ে হামলা চালিয়েছে। এই হাইপারসনিক ক্ষেপণাস্ত্র আটকানোর কোনো প্রযুক্তি আপাতত ইসরায়েলের হাতে নেই। ফলে সেগুলো সুনির্দিষ্ট লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হেনেছে—সে কথা অবধারিত। আবার বেশ কিছু ব্যালিস্টিক ও ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্র আঘাত হেনেছে। একই সাথে আরেকটি লক্ষণীয় বিষয় ছিল যে, ইরান বেসিক্যালি আমেরিকা, ব্রিটেন, ফ্রান্স, জর্ডান এবং খোদ ইসরায়েলের নিরাপত্তা বলয় ভেদ করে ইসরায়েলের বিভিন্ন অবস্থানে হামলা চালিয়েছে। কারণ হচ্ছে, ইরাকের আকাশ পেরিয়ে যখন জর্ডানের আকাশ সীমায় ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র প্রবেশ করেছে তখন সেখানে অবস্থিত মার্কিন, ব্রিটিশ এবং ফরাসি ঘাঁটি থেকে ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন ভূপাতিত করার চেষ্টা হয়েছে। এক্ষেত্রে জর্ডানও কিছু ড্রোন এবং ক্ষেপণাস্ত্র ভূপাতিত করেছে বলে খবর বের হয়েছে। তো, এই চার দেশের নিরাপত্তা ব্যবস্থা ডিঙিয়ে ইরানের ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র ইসরায়েলের আকাশে প্রবেশ করেছে এবং তারপরে ইসরায়েলের আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার মুখোমুখি হয়েছে। সেখান থেকে যেগুলো ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাকে ফাঁকি দিতে সক্ষম হয়েছে সেগুলো আঘাত হেনেছে।
সে সময় ইরান প্রকৃতপক্ষে কিছু ড্রোন এবং ক্ষেপণাস্ত্র পাঠিয়ে ইসরাইলি প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাকে ব্যস্ত রেখেছে এবং এই ফাঁকে ইরানের আধুনিক ব্যালিস্টিক, ক্রুজ এবং হাইপারসনিক ক্ষেপণাস্ত্র ইসরায়েলের ভেতরে আঘাত হেনেছে। সেক্ষেত্রে ইসরায়েলে অভিযানের বেলায় ইরানের সামরিক বাহিনী বিশেষ কৌশল এবং সক্ষমতার পরিচয় দিয়েছে, এ কথা বলা যায়।
যাহোক এই প্রতিশোধমূলক হামলার মধ্যদিয়ে মধ্যপ্রাচ্যে ক্ষমতার ভারসাম্য প্রকৃতপক্ষে ইরানের দিকে বিরাটভাবে ঝুঁকে পড়েছে। আমি বেশ কয়েকটি আলোচনায় বলেছি যে, যদি ইসরায়েল এবং আমেরিকা এই হামলার জবাব না দেয়, তাহলে মধ্যপ্রাচ্য এবং আন্তর্জাতিক অঙ্গনে তাদের অবস্থান মারাত্মকভাবে ক্ষুণ্ণ হবে। আমেরিকা ও ইসরায়েলের সামরিক শক্তি ভীষণভাবে প্রশ্নের মুখে পড়বে। ইরান যদি ইসরায়েলের বিরুদ্ধে হামলার জবাব না দিত তাহলে তারা যেমন তাদের সামরিক শক্তি নিয়ে প্রশ্নের মুখে পড়তো, তেমনি ইরানি হামলার জবাব যতক্ষণ পর্যন্ত ইসরাইল এবং আমেরিকা না দেবে ততক্ষণ পর্যন্ত তাদের সামরিক সক্ষমতা নিয়ে জনমনে প্রশ্ন জ্বলজ্বল করবে (যদিও আমি যুদ্ধ চাই না)। এই বাস্তব প্রেক্ষাপট থেকে বলা যাচ্ছে, মধ্যপ্রাচ্য এবং আন্তর্জাতিক অঙ্গনে নিজেদের ক্ষমতা এবং প্রভাব প্রতিপত্তি ধরে রাখার জন্য ইসরায়েল ও আমেরিকার জন্য ইরানের বিরুদ্ধে হামলা চালানো অনেকটা অপরিহার্য। সেই জায়গা থেকে বড় রকমের সংঘাত-সংঘর্ষের আশঙ্কা জোরালোভাবে বিদ্যমান।
অন্যদিকে, ইরান এমনভাবে এবং এমন সময় ইসরায়েলের ওপর এই হামলাটা চালিয়েছে যখন ইসরায়েল আন্তর্জাতিক অঙ্গনে নানা কর্মকাণ্ডের কারণে ভীষণভাবে চাপের মুখে এবং অনেকটা একঘরে। এছাড়া, আমেরিকা একেবারেই প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের মুখোমুখি সময়ে অবস্থান করছে। এমনিতেই নানা কারণে বিশেষ করে গাজা-ইসরায়েল যুদ্ধকে কেন্দ্র করে জো বাইডেন জনপ্রিয়তার তলানিতে রয়েছেন এবং ইউক্রেন যুদ্ধ নিয়ে অর্থনীতিসহ নানামুখী চাপের মুখে; ঠিক সেই সময় ইরান যদি ইসরায়েলের বিরুদ্ধে হামলা চালায় তাহলে আমেরিকা সরাসরি ইরানের বিরুদ্ধে যুদ্ধে জড়িয়ে যাওয়ার ঝুঁকি নেবে না। এই সুযোগটি ইরান কাজে লাগিয়েছে। এই মুহূর্তে নির্বাচনের কারণে জো বাইডেনের হাত-পা অনেকটা বাঁধা।
এছাড়া, ইরানের বিরুদ্ধে যদি যুদ্ধ শুরু করে ইসরায়েল এবং আমেরিকাসহ তার পশ্চিমা মিত্ররা, তাহলে হরমুজ প্রণালী এবং বাব আল-মান্দেব প্রণালী দিয়ে তেল পরিবহন থেকে শুরু করে সব ধরনের পণ্য পরিবহন একেবারেই অসম্ভব হয়ে পড়বে। এমনকি ইরান এবং ইয়েমেনের হুথিরা এই দুটি প্রণালী বন্ধ করে দিতে পারে। সে ক্ষেত্রে সারা বিশ্বে ভয়াবহ অর্থনৈতিক সংকট সৃষ্টি হবে। এই ঝুঁকিও আমেরিকাকে বিবেচনায় রাখতে হয়েছে। পাশাপাশি তারা ইরানের সামরিক শক্তিকেও উপেক্ষা করতে পারছে না। এছাড়া, পরিস্থিতির অবনতি হলে ইরান যেকোনো মুহূর্তে তার পরমাণু কর্মসূচি প্রকাশ্যে সামরিক দিকে ডাইভার্ট করতে পারে এবং পরমাণু বোমা তৈরি করতে পারে। সেটা আমেরিকারসহ ইসরায়েল এবং পশ্চিমাদের জন্য বড় মাথা ব্যথার কারণ হবে। এসব দিক বিবেচনা করে আমেরিকা কোনোমতেই ইরানের সাথে এখন সংঘর্ষে জড়াতে চায়নি। অন্যদিকে নেতানিয়াহুর প্রয়োজন যুদ্ধ। কারণ তাকে ইসরায়েলের ক্ষমতায় টিকে থাকতে হলে ইরানকে তছনছ করে দিতে হবে; গাজার হামাস, লেবাননের হিজবুল্লাহ ইয়েমেনের হুথি বাহিনী বং ইরাকের রেজিস্ট্যান্স ফোর্সকে একেবারে নির্মূল করে দিতে হবে। কিন্তু এগুলো কোনোটাই তার পক্ষে এখন সম্ভব না। সেজন্য ইরানের ওপর হামলা চালিয়ে নেতানিয়াহু আমেরিকা এবং তার পশ্চিমা মিত্রদের ডেকে এনে ইরানকে শায়েস্তা করতে চেয়েছিলেন। কিন্তু তার পরিকল্পনা এবং ফাঁদে পা দেননি ঝানু জো বাইডেন। ফলে, নেতানিয়াহু চূড়ান্তভাবে অভ্যন্তরীণ রাজনীতিতে অবস্থান হারিয়েছেন। এরইমধ্যে খবর বের হয়েছে, ইন্টারপোল নেতানিহয়াহুর বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছে। ইসরায়েলের ভেতরে যে অবস্থা তৈরি হয়েছে, বিশেষ করে হামাসের হাতে থাকা বন্দিদের মুক্ত না করে যুদ্ধ চালিয়ে যাওয়ার মতো গোয়ার্তুমি দেখিয়ে নেতানিয়াহু ইসরায়েলি জনগণের চোখে অপরাধ করেছেন। আগের দুর্নীতি এবং ক্ষমতার অপব্যবহারের অভিযোগের সাথে সাথে এখন নতুন করে যুক্ত হবে নিজ নাগরিকদের হত্যার অভিযোগ। সেক্ষেত্রে যুদ্ধ বন্ধ হলেই নেতানিয়াহুর ক্ষমতা শেষ হবে এবং তাকে জেলে যেতে হবে। এজন্য তিনি এককভাবে গাজায় যুদ্ধ চালিয়ে যাচ্ছেন এবং ইরানের ওপর হামলা চালিয়ে আমেরিকা এবং পশ্চিমা বিশ্বকে জড়িয়ে বৃহত্তর যুদ্ধ সৃষ্টি করে নিজের ক্ষমতায় টিকিয়ে রাখার এবং বিচার ও জেল-জরিমানা এড়ানোর কৌশল নিয়েছিলেন। কিন্তু তার সমস্ত কৌশল মার খেয়ে গেছে। সেক্ষেত্রে দেশের ভেতরে তিনি একেবারেই ঠুনকো ব্যক্তিতে পরিণত হয়েছেন।
এর সাথে তার উগ্র ডানপন্থী মন্ত্রিসভার আরও কিছু সদস্য রয়েছেন যারা ইরানসহ মধ্যপ্রাচ্যের রেজিস্ট্যান্স ফোর্সকে নির্ভুল করতে চান। তারাও যুদ্ধের পক্ষে। এসব বিবেচনা করে নেতানিয়াহু এবং ইসরায়েলের উগ্র কয়েকজন মন্ত্রীর কারণে ইরানের সাথে ইসরায়েলের যুদ্ধের আশঙ্কা একেবারেই উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না। আবার নির্বাচনী বৈতরণী পার করে জো বাইডেন যদি ক্ষমতায় ফিরতে পারেন তাহলে ইসরায়েল ও পশ্চিমা মিত্রদের সাথে মিলে তিনি ইরানের বিরুদ্ধে যদি নতুন করে সংঘর্ষের কোনো পরিকল্পনা নেন তাহলে তাতে অবাক হওয়ার কিছু থাকবে না। কারণ ইসরায়েলের ওপর ইরানের প্রতিশোধমূলক হামলা যেমন ইসরায়েলের কর্তৃত্বকে নস্যাৎ করেছে; তেমনি ইরাকের আইন আল-আসাদ ঘাঁটিতে ইরান যে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়ে ঘাঁটিটি ধ্বংস করে দিয়েছিল তাতেও আমেরিকার সামরিক সক্ষমতা আন্তর্জাতিক অঙ্গনে ভীষণ প্রশ্নের মুখে পড়েছে। এসব মাথায় রেখে আমেরিকা এবং ইসরায়েলের শীর্ষ কর্মকর্তারা কোন ফন্দি আঁটছেন তা এখনই জানা না গেলেও যুদ্ধ-শঙ্কার কারণ আছে। মনে রাখতে হবে, আমেরিকা দুই দিনের পরিকল্পনায় কাজ করে না। বরং তারা দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনার আওতায় কাজ করে। এছাড়া, ইরানের এই বেড়ে চলা শক্তি এখনই শেষ করতে না পারলে বিশ্বকে নিজেদের নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারবে না আমেরিকা-ইসরায়েল বলয়। এজন্য তাদের নিশ্চয়ই ভিন্ন পরিকল্পনা থাকবে। কী সেই পরিকল্পনা, তা দেখার জন্য আমাদের অপেক্ষা করতে হবে; আপাতত এর বিকল্প নেই।
লেখক: সাংবাদিক ও মধ্যপ্রাচ্য বিষয়ক গবেষক