• ঢাকা
  • শনিবার, ২৩ নভেম্বর, ২০২৪, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

পোশাক নিয়ে প্রশ্ন নয়, বরং তাদের নন্দিত করুন


সেলিনা হোসেন
প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ২১, ২০২২, ০৩:২৬ পিএম
পোশাক নিয়ে প্রশ্ন নয়, বরং তাদের নন্দিত করুন

নেপালের মাটিতে শক্তিশালী দল নেপালকে হারিয়ে সাফ চ্যাম্পিয়নশিপের শিরোপা জিতেছে বাংলাদেশের নারী ফুটবল দল। তাদের আন্তরিক অভিনন্দন জানাই। ক্রীড়াঙ্গনে মেয়েদের এই জায়গাগুলো আরও অনেক বেশি করে তুলে ধরতে হবে। এর জন্য আমাদের যত ধরনের উদ্যোগ নেওয়া দরকার, তা করতে হবে। আমি মনে করি, মেয়েদের এই জায়গাগুলো অনেক বড় পর্যায়ে সরকারিভাবে তুলে ধরতে হবে। মেয়েরা যে খেলতে গেছে, সেই মূল্যবোধের জায়গাটি সামাজিক পর্যায়ে মর্যাদার সঙ্গে দেখতে হবে। কেউ যেন তাদের তুচ্ছতাচ্ছিল্য না করে। কেউ যেন মনে না করে, মেয়েদের খেলাধুলা ঠিক নয়।

অন্য দেশের মেয়েরা যেভাবে খেলে, আমাদের দেশের মেয়েরাও সেভাবেই খেলেছে। তাই তারা যে চ্যাম্পিয়ন হয়েছে, এই গর্বের জায়গাটা ধারণ করতে হবে। এই কৃতিত্বকে আরও বিশাল জায়গায় নিয়ে গিয়ে তাদের তৈরি করতে হবে। এটা সরকারের দায়িত্ব।

আমরা দেশবাসী তাদের নানাভাবে নন্দিত করব, অভিনন্দিত করব এবং তাদের এই খেলাটাকে আরও অনেক বড় পর্যায়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য সবাই মিলে সমর্থন দিয়ে যাব।

যে মেয়েরা গ্রাম থেকে এসেছে, আদিবাসী গোষ্ঠী থেকে এসেছে, তাদের সবাইকে সমান মর্যাদায় বড় করে তুলতে হবে। এই তুলে ওঠার জন্য আমাদের যেন কোনো ধরনের বিরূপ প্রতিক্রিয়া দেখা না যায়। একশ্রেণির ধর্মান্ধ গোষ্ঠী তাদের জায়গা থেকে খেলোয়াড় মেয়েদের পোশাক নিয়ে প্রশ্ন তুলছে। তারা বলছে, ওই মেয়েদের পোশাক ছোট। আমি মনে করি না, এই কথার কোনো ভিত্তি আছে। খেলার যে পোশাক, সেটা তো পরেই তাকে খেলতে হবে। সে তো আর শাড়ি পরে ফুটবল খেলতে যাবে না। কাজেই পোশাককেন্দ্রিক এই প্রশ্নগুলো শক্ত হাতে, যুক্তির সঙ্গে মোকাবেলা করতে হবে। আমি মনে করি, মেয়েদের গৌরবের জায়গাগুলো নেতিবাচকভাবে না দেখে বরং তাদের নন্দিত করা উচিত। এই নন্দিত জায়গা থেকে মেয়েরা আরও অগ্রসর হতে পারবে।

এদিকে আমাদের ক্রীড়াঙ্গনে ছেলেরা যে পরিমাণ সুযোগ পায়, মেয়েরা তেমন সুযোগ পায় না। আমাদের গর্বের জায়গা তুলে ধরে ওরা যখন দেশে ফিরেছে, ওদের সেই সুযোগ-সুবিধাগুলো দিয়ে মর্যাদায় বড় করে তুলতে হবে। এখানে যেন কোনো ধরনের আপস না থাকে।

অন্যদিকে এটাও শুনেছি, অনেক পরিবার তাদের মেয়েদের খেলাধুলায়, বিশেষ করে ক্রিকেট-ফুটবল খেলায় নিরুৎসাহিত করে। এটা মোটেও ঠিক কাজ নয়। আমি সেসব পরিবারকে শ্রদ্ধা ও ভালোবাসা জানাই, যারা তাদের মেয়েদের খেলায় উৎসাহ দিয়ে আজকে এই পর্যায়ে নিয়ে এসেছে। আগামী দিনে আরও অনেক মেয়ে বিদেশ থেকে দেশের জন্য এমন আরও গৌরব বয়ে নিয়ে আসবে, এমনটাই প্রত্যাশা রইল। শুভকামনা হে সংগ্রামী নারীরা, তোমরা এগিয়ে চলো।

 

লেখক : সম্পাদক, সংবাদ প্রকাশ

Link copied!