সেপ্টেম্বরে গত ১৫ মাসের মধ্যে সর্বনিম্ন প্রবাসী আয় বা রেমিট্যান্স এসেছে দেশে। রোববার (৩ অক্টোবর) বাংলাদেশ ব্যাংক সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বিদায়ী সেপ্টেম্বর মাসে ব্যাংকিং চ্যানেলে প্রবাসীরা ১৭২ কোটি ৬৩ লাখ (১.৭২ বিলিয়ন) মার্কিন ডলার রেমিট্যান্স পাঠিয়েছেন। টাকার হিসেবে (প্রতি ডলার ৮৫ টাকা ৫০ পয়সা ধরে) যার পরিমাণ ১৪ হাজার ৭৫৯ কোটি টাকা। আগস্টে রেমিট্যান্স এসেছিল এক দশমিক ৮৭ বিলিয়ন ডলার বা ১৫ হাজার ৩৮৫ কোটি টাকা। সে হিসেব অনুসারে, আগস্টের চেয়ে সেপ্টেম্বরে ৭১৩ কোটি টাকা কম। এদিকে, ২০২০ সালের সেপ্টেম্বরে প্রবাসী আয়ের পরিমাণ ছিল ২১৫ কোটি ১০ লাখ ডলার। গত বছরের সেপ্টেম্বরের তুলনায় চলতি বছর রেমিট্যান্স কমেছে প্রায় ২০ শতাংশ।
গত তিন মাসে একটি পরিসংখ্যান বলছে, ওই তিন মাস রেমিট্যান্স ধারাবাহিক কমেছে। চলতি বছরের আগস্টে দেশে রেমিট্যান্স এসেছিল ১৮১ কোটি ডলার। যা জুলাইয়ের চেয়ে ৬ কোটি ১৪ লাখ ডলার কম। এছাড়া আগের বছরের একই সময়ের চেয়ে ১৫ কোটি ৩৮ লাখ বা প্রায় ৮ শতাংশ কম।
১৮৭ কোটি ১৪ লাখ ডলার রেমিট্যান্স আসে চলতি বছরের জুলাইয়ে। যা জুনের চেয়ে ৬ কোটি ৯৩ লাখ ডলার কম। এছাড়া আগের বছরের একই সময়ের চেয়ে প্রায় ২৮ শতাংশ কম।
২০২০-২১ অর্থবছরে দুই হাজার ৪৭৭ কোটি ৭৭ লাখ মার্কিন ডলার রেমিট্যান্স আসে। যা আগের অর্থবছরের (২০১৯-২০) চেয়ে ৩৬ দশমিক ১০ শতাংশ বেশি।
২০১৯ সালের ১ জুলাই থেকে প্রবাসীদের পাঠানো রেমিট্যান্সের ওপর ২ শতাংশ হারে প্রণোদনা দিচ্ছে সরকার। অর্থাৎ কোনো একজন প্রবাসী বাংলাদেশে ১০০ টাকা পাঠালে তার সঙ্গে আরও ২ টাকা যোগ করে মোট ১০২ টাকা পাচ্ছেন তিনি।
বিশেষজ্ঞরা চলতি অর্থবছরের প্রথম তিন মাসে ধারাবাহিক রেমিট্যান্স কমে যাওয়ার কারণ হিসাবে বৈশ্বিক মহামারি করোনাভাইরাসকে দুষছেন।
রেমিট্যান্স বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ড. সালেহ উদ্দিন আহমেদ বলেন, “করোনাভাইরাস গত অর্থবছরে ভয়াবহ আকার নিয়েছিল। সে সময় সবকিছু স্থবির হয়ে পড়ে। বন্ধ হয় অনেক প্রতিষ্ঠান। এতে প্রতিষ্ঠানগুলো তাদের কর্মীদের সব দেনা-পাওনা দিয়ে ছাঁটাই করেছিল। সে কারণে অনেক প্রবাসী একবারে হয়তো অনেক বেশি টাকা নিয়ে এসেছিল। এতে প্রবাসী আয় বেড়ে যায়।”
এখন প্রবাসীরা আবার নতুন করে কাজে যোগ দিয়েছেন উল্লেখ করে বলেন, “কাজ করে নির্দিষ্ট বেতনের অংশ পাঠাচ্ছেন বলে কম মনে হচ্ছে। যেহেতু সবকিছু ধীরে ধীরে স্বাভাবিক হচ্ছে, আগামীতে আবারও প্রবাসী আয় বাড়বে।”