• ঢাকা
  • শনিবার, ২৩ নভেম্বর, ২০২৪, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২০ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

লেগুনার হেলপার সেজে আসামি ধরলেন এসআই বিলাল


সংবাদ প্রকাশ প্রতিবেদক
প্রকাশিত: জানুয়ারি ৩০, ২০২২, ০৩:০০ পিএম
লেগুনার হেলপার সেজে আসামি ধরলেন এসআই বিলাল
ছবি: সংগৃহীত

লেগুনাচালকের সহকারী সেজে ক্লু-লেস হত্যাকাণ্ডের আসামি ধরেছেন যাত্রাবাড়ী থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) বিলাল আল আজাদ।

গত ২২ জানুয়ারি রাজধানীর যাত্রবাড়ীর মেয়র হানিফ ফ্লাইওভারে অজ্ঞাত পরিচয় এক ব্যক্তির লাশ পড়ে ছিল। পরে জানা যায়, তার নাম মহির উদ্দিন। তিনি পেশায় মাছ ব্যবসায়ী ছিলেন। 

ওই ঘটনার সময় পাওয়া সিসি ক্যামেরার ফুটেজে দেখা যায়, চলন্ত লেগুনা থেকে কেউ তাকে ফেলে দিয়েছেন। কিন্তু ফুটেজে সেই লেগুনার রেজিস্ট্রেশন নম্বর প্লেট দেখা যাচ্ছিল না। লেগুনার খোঁজ করতে শেষপর্যন্ত হেলপারের (চালকের সহকারী) কাজ নেন যাত্রাবাড়ী থানার উপ-পরিদর্শক বিলাল আল আজাদ।

রোববার (৩০ জানুয়ারি) বিলাল আল আজাদ বলেন, টানা চার দিন যাত্রাবাড়ী ও এর আশপাশের এলাকার প্রায় ৩০০টি লেগুনার মধ্য থেকে সেই লাল পাদানিওয়ালা লেগুনার সন্ধান পাই। সেই সূত্র ধরে মহির উদ্দিনের হত্যাকাণ্ডে জড়িত চারজনকে গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তাররা হলেন : মঞ্জুর, আবদুর রহমান, রিপন ও রুবেল।

এসআই বিলাল বলেন, “এ ঘটনায় আমাদের কাছে মাত্র একটি ক্লু ছিল, তা হলো লাল পাদানিওয়ালা লেগুনা। পরে সেই ক্লু ধরে তদন্ত নামি। তদন্তের স্বার্থে পূর্ব পরিচিত লেগুনাস্ট্যান্ডের এক লাইনম্যানের মাধ্যমে সাইনবোর্ডে গিয়ে নিজের পরিচয় গোপন করে লেগুনার হেলপারের চাকরি নিই। গত ২৩ থেকে ২৮ জানুয়ারি পর্যন্ত হেলপারের চাকরি করি। দৈনিক ৩০০ টাকা মজুরিতে হেলপারের চাকরি করতাম। এভাবে প্রায় ৩০০ লেগুনা চেক করি। অনেক খোঁজাখুঁজির পর কদমতলীর একটি গ্যারেজে নষ্ট অবস্থায় সেই লাল পাদানিওয়ালা লেগুনার সন্ধান পাই। তবে সেখানেও ঘটে আরেক বিপত্তি। লেগুনার চালক অসুস্থতার কারণে গত ২১ জানুয়ারি মালিকের কাছে জমা দিয়ে নিজের গ্রামের বাড়ি মাদারীপুর চলে যান।”

বিলাল আল আজাদ বলেন, “পরে কদমতলীর সেই গ্যারেজের সূত্রে জানতে পারি গত ২২ জানুয়ারি রাতে ওই লেগুনার চালক ছিলেন মঞ্জুর নামে একজন ও তার হেলপার ছিলেন আবদুর রহমান। দুজনের নাম-পরিচয় জানা গেলেও তাদের ঠিকানা ও মোবাইল নম্বর পাওয়া যাচ্ছিল না। অনেক খোঁজাখুঁজির পর জানা গেল, আবদুর রহমান বাসের হেলপারি করছেন। পরে আবদুর রহমানকে যাত্রাবাড়ী এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। আবদুর রহমানের দেওয়া তথ্যে বুধবার (২৬ জানুয়ারি) সাইনবোর্ড থেকে মঞ্জুরকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরে রুবেল ও রিপনকে গ্রেপ্তার করা হয়।”

প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তারা আমাদের কাছে মহির উদ্দিনকে চলন্ত লেগুনা থেকে ফেলে দেওয়ার কথা স্বীকার করেন বলে জানান পুলিশের এই উপ-পরিদর্শক।

এ বিষয়ে যাত্রাবাড়ী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাজহারুল ইসলাম বলেন, “গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা মূলত সংঘবদ্ধ ছিনতাইকারী চক্রের সদস্য। ঘটনার রাতে তারা লেগুনা নিয়ে ছিনতাই করতে বের হয়েছিল। ওইদিন যাত্রাবাড়ীর সাদ্দাম মার্কেট এলাকা থেকে লেগুনায় উঠেছিলেন মহির উদ্দিন। তার কাছ থেকে ৫ হাজার ৯০০ টাকা ছিনিয়ে নিয়ে তাকে ফ্লাইওভারের ওপর থেকে ফেলে দেয় আসামিরা। এতে ঘটনাস্থলেই মহিরের মৃত্যু হয়।”

Link copied!