সারা দেশে চলছে দুই সপ্তাহের কঠোর লকডাউন। ২৩ জুলাই (শুক্রবার) থেকে শুরু হওয়ার লকডাউন ৫ আগস্ট (বৃহস্পতিবার) চলবে।
চলমান বিধিনিষেধের ষষ্ঠ দিনে বুধবার (২৮ জুলাই) রাজধানীতে বাস ছাড়া সব ধরনের যানবাহন চলছে।
ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের যাত্রাবাড়ীতে গাড়ি চলাচল বেশি দেখা যায়। শনির আখড়া, রায়েরবাগসহ বিভিন্ন স্থানে থাকা চেকপোস্টগুলো ছিল ঢিলেঢালা। অধিক সংখ্যক প্রাইভেটকার, মাইক্রোবাস, রিকশা, যাত্রীবাহী ভ্যান চলাচল করতে দেখা গেছে।
রাজধানীর ফার্মগেট, মোহাম্মদপুর, আসাদগেট, সাতরাস্তা ও কারওয়ান বাজার এলাকায় প্রাইভেটকার, মাইক্রোবাস, রিকশা ও ভ্যান চলাচল করতে দেখা যায়। পুলিশের টহল আগের মতো দেখা যায়নি।
এদিকে, মঙ্গলবার (২৭ জুলাই) দুপুরে করোনা নিয়ন্ত্রণে করণীয় নিয়ে বৈঠক হয়। সরকারঘোষিত চলমান বিধিনিষেধ আগামী ৫ আগস্ট পর্যন্তই চলবে বলে সিদ্ধান্ত নেয় সরকার।
মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সভাকক্ষে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের সভাপতিত্বে এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকে স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক, বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও বিভাগের সচিব, পুলিশের মহাপরিদর্শক বেনজীর আহমেদসহ বিভিন্ন বাহিনী ও সংস্থার প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।
করোনার সংক্রমণ উদ্বেগজনক হারে বেড়ে যাওয়ায় এখন সবচেয়ে বিপর্যস্ত অবস্থায় রয়েছে দেশ। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে কঠোর বিধিনিষেধ আরোপ করা হলেও সংক্রমণ-মৃত্যু কোনোটিই কমছে না।
বৈঠক শেষে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, করোনাভাইরাসজনিত পরিস্থিতি নিয়ে পর্যালোচনা এবং প্রতিরোধক টিকা কার্যক্রম নিয়ে বৈঠকে আলোচনা হয়েছে। বৈঠকে সিদ্ধান্ত এমন এসেছে- আমাদের যে লকডাউন চলছে তা ৫ তারিখ পর্যন্ত চলতে থাকবে। যদিও আমাদের শিল্পপতিরা এবং অনেকেই রিকোয়েস্ট করেছিলেন, আমরা সেই রিকোয়েস্ট বোধহয় গ্রহণ করতে পারছি না।
আসাদুজ্জামান খান কামাল আরও বলেন, “লকডাউন ৫ তারিখ পর্যন্তই চলবে। আমরা আশা করছি অন্যান্য দেশের মতো সংক্রমণ ধীরে ধীরে কমবে আসবে।”
মঙ্গলবার (২৭ জুলাই) স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে পাঠানো সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, গত ২৪ ঘণ্টায় (সোমবার সকাল ৮টা থেকে মঙ্গলবার সকাল ৮টা পর্যন্ত) করোনায় আক্রান্ত হয়ে ২৫৮ জনের মৃত্যু হয়েছে। যা এখন পর্যন্ত সর্বোচ্চ।
মোট মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৯ হাজার ৭৭৯। একই সময় নতুন করে শনাক্ত হয়েছেন ১৪ হাজার ৯২৫ জন। মোট শনাক্তের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়াল ১১ লাখ ৯৪ হাজার ৭৫২।
গত ২৪ ঘণ্টায় ৫২ হাজার ৪৭৮ টি নমুনা পরীক্ষা করা হয়। নতুন রোগী শনাক্ত হয়েছে ১৯ হাজার ৭৭৯ জন। এনিয়ে মোট আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১১ লাখ ৯৪ হাজার ৭৫২। একই সময়ে নমুনা পরীক্ষায় শনাক্তের হার ২৮ দশমিক শূন্য ৪৪ শতাংশ।
এর আগে সোমবার ২৪৭, রোববার ২২৮, শনিবার ১৯৫, শুক্রবার ১৬৬, বৃহস্পতিবার ১৮৭, বুধবার ১৭৩ ও মঙ্গলবার ২০০ জনের মৃত্যু হয়। গত ৭ জুলাই প্রথমবারের মতো দেশে মৃতের সংখ্যা ২০০ ছাড়ায়। এদিন মৃত্যু হয় ২০১ জনের।