একটানা ১২ মাসের বেশি বেতন-ভাতা বকেয়া রাখলে বাতিল হবে পৌরসভা। বাতিলের এই বিধান রেখে ‘স্থানীয় সরকার (পৌরসভা) (সংশোধন) আইন, ২০২১’ খসড়ার চূড়ান্ত অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা।
একই সঙ্গে মেয়রের পাঁচ বছরের মেয়াদ শেষে নির্বাচন না হলে পৌরসভায় প্রশাসক নিয়োগ দেওয়ার বিধান রাখা হচ্ছে সংশোধিত এই আইনে।
সোমবার (৪ অক্টোবর) প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত মন্ত্রিসভা বৈঠকে এই অনুমোদন দেওয়া হয়। এতে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে গণভবন থেকে প্রধানমন্ত্রী ও সচিবালয়ে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে মন্ত্রী ও প্রতিমন্ত্রীরা বৈঠকে যোগ দেন।
এদিকে বৈঠক শেষে সচিবালয়ে প্রেস ব্রিফিংয়ে এই অনুমোদনের কথা জানান মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম।
এ সময় বিদ্যমান আইনের কথা তুলে ধরে মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, “দেশে পৌরসভার নির্বাচিত মেয়র ও কাউন্সিলরদের মেয়াদ পাঁচ বছর। কিন্তু পরবর্তী নির্বাচন না হওয়া পর্যন্ত আগের নির্বাচিতরাই পৌরসভা চালান। এতে বিভিন্ন ইস্যুতে মামলা করে কেউ কেউ ৮, ১০ বছর, এমনকি ১৬ বছর পর্যন্ত থেকে যাচ্ছেন। এ জন্য আইনটি সংশোধন করে ছয় মাসের প্রশাসক নিয়োগের বিধান যুক্ত করা হয়েছে।”
মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, “বেশ কিছুদিন থেকে মন্ত্রিসভায় এটা নিয়ে আলোচনাও হচ্ছে। এর আগে প্রধানমন্ত্রী একাধিকবার নির্দেশনা দিয়েছিলেন। আজকে এই আইনের মধ্যে ওই বিধানটা সংশোধন করে দেওয়া হয়েছে। পাঁচ বছর যখন শেষ হয়ে যাবে, তখন মেয়র ও ওনার কাউন্সিল বাতিল হয়ে যাবে।”
খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, “বাতিলের পর প্রশাসনিক অভিজ্ঞতাসম্পন্ন কোনো কর্মকর্তা বা সরকার যদি কোনো ব্যক্তিকে যোগ্য মনে করেন, ছয় মাসের জন্য প্রশাসক নিয়োগ দিতে পারবেন। ছয় মাসের মধ্যে নির্বাচন সম্পন্ন করতে হবে। এই বিধানটা পৌরসভা আইনে ছিল না।”
আনোয়ারুল ইসলাম আরও বলেন, “এখন পরিষ্কার পৌরসভায় পাঁচ বছরের বেশি কেউ (মেয়র ও কাউন্সিলর) থাকতে পারবে না।”
মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, “আগে পৌরসভা করার জন্য প্রতি কিলোমিটারে দেড় হাজার লোক থাকার একটা শর্ত ছিল, সেটা দুই হাজার করা হয়েছে। এতে ট্যাক্স কালেকশনটা বাড়বে, কাজকর্ম বেশি হবে।”
সংশোধিত খসড়া আইন তুলে ধরে মন্ত্রিপরিষদ সচিব আরও বলেন, “যুক্তিসঙ্গত কারণ ছাড়া কোনো পৌরসভার কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতন-ভাতাদি একটানা ১২ মাস বকেয়া থাকলে ওই পৌরসভা বাতিল করা যাবে।”
এদিকে বর্তমানে ৮০ শতাংশ পৌরসভা বেতন-ভাতা দিতে পারছে। সমস্যাটা এখন অনেক কমে আসছে বলেও জানান খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম।