স্বাধীনতা এবং একুশে পদকপ্রাপ্ত বিশিষ্ট প্রত্নতত্ত্ববিদ, ইতিহাস ও শিল্পকলা বিশারদ এবং বাংলাদেশ জাতীয় জাদুঘরের সাবেক মহাপরিচালক প্রফেসর ড. এনামুল হক আর নেই (ইন্নালিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিন)।
রোববার (১০ জুলাই) দুপুরে তিনি রাজধানীতে নিজে বাসভবনে মারা যান বলে গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন ড. এনামুল হকের সহকর্মী (রিসার্চ ফেলো) সাইফুল ইসলাম।
সাইফুল ইসলাম বলেছেন, এনামুল হক সুস্থ ছিলেন। কোরবানির মাংস বণ্টনের জন্য বাড়িতে তদারকির কাজও করেছেন। দুপুরে খেয়ে ঘুমাচ্ছিলেন। এরপর বাড়ির তত্ত্বাবধায়ক আমিনুর তাঁকে ডাকতে গিয়ে সাড়া পাননি। পরে ইউনাইটেড হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন।
এনামুল হকের মরদেহ বারডেমের হিমঘরে রাখা হবে। তার মেয়ে আগামী মঙ্গলবার প্রবাস থেকে ফিরলে দাফনের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলে জানান সাইফুল।
এনামুল হক ১৯৩৭ সালের ১ মার্চ বগুড়া জেলায় জন্মগ্রহণ করেন। মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক বগুড়া থেকে শেষ করে তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইতিহাস বিভাগে স্নাতক ও ইতিহাস-প্রত্নতত্ত্বে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেন। পরবর্তীতে অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় থেকে দক্ষিণ এশিয়ার শিল্প নিয়ে গবেষণা করে পিএইচডি ডিগ্রি লাভ করেন।
কর্মজীবনে ১৯৬২ সালে এনামুল হক তৎকালীন ঢাকা জাদুঘরে যোগদান করে। পরবর্তীতে ১৯৬৫ সালে পদোন্নতি পেয়ে অধ্যক্ষ, ১৯৬৯ সালে পরিচালক হিসেবে কাজ করেন। বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পর ঢাকা জাদুঘরকে বাংলাদেশ জাতীয় জাদুঘরে রূপান্তর করা হয় এবং এর প্রতিষ্ঠাকালীন মহাপরিচালক হিসেবে এনামুল হক যোগদান করে। জাদুঘরের উন্নতি ও আধুনিকীকরণে তার অবদান অনস্বীকার্য। মহাপরিচালক হিসেবে তিনি ১৯৮৩ সাল থেকে ১৯৯১ সাল পর্যন্ত দায়িত্ব পালন করেন।
কাজের স্বীকৃতি হিসেবে প্রফেসর ড. এনামুল হক ২০১৭ সালে একুশে পদক ও ২০২০ সালে স্বাধীনতা পদক এবং ভারতের পদ্মশ্রী পদকে ভূষিত হন।