• ঢাকা
  • শনিবার, ২৩ নভেম্বর, ২০২৪, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

‘পাচার হওয়া অর্থ ফেরতের দিবাস্বপ্নের ভিত্তি নেই’


সংবাদ প্রকাশ প্রতিবেদক
প্রকাশিত: জুন ১০, ২০২২, ০৯:৫৮ পিএম
‘পাচার হওয়া অর্থ ফেরতের দিবাস্বপ্নের ভিত্তি নেই’

প্রণোদনায় উৎসাহিত হয়ে পাচার হওয়া অর্থ ফেরত নিয়ে আসবে, এরকম দিবাস্বপ্নের কোনো ভিত্তি নেই বলে মন্তব্য করেছে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)। দুর্নীতির বিরুদ্ধে লড়াই করা এ সংস্থার মতে, যারা বৈধ উপার্জন নির্ভর করদাতা তাদের জন্য এ প্রস্তাব প্রকটভাবে বৈষম্যমূলক। কারণ, তারা ৭ শতাংশের কমপক্ষে তিন গুণ হারে কর দিয়ে থাকেন।

শুক্রবার (১০ জুন) এক বিবৃতিতে টিআইবির পক্ষ থেকে এসব কথা জানানো হয়েছে।

বিনা প্রশ্নে অর্থপাচারের মতো অসাংবিধানিক, আইনের সঙ্গে সাংঘর্ষিক ও বৈষম্যমূলক প্রস্তাব বাতিলের আহ্বান জানিয়ে সংস্থাটির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, “অর্থমন্ত্রী যেভাবেই ব্যাখ্যা করেন না কেন, নামমাত্র কর দিয়ে প্রশ্নহীনভাবে পাচার করা অর্থ বিদেশ থেকে আনার সুযোগ স্পষ্টতই অর্থপাচারকারীদের অনৈতিক সুরক্ষা ও পুরস্কার প্রদান। অথচ অর্থপাচার রোধ আইন- ২০১২ এবং সংশ্লিষ্ট আন্তর্জাতিক আইন অনুযায়ী অর্থপাচার গুরুতর অপরাধ, দেশের আইন অনুযায়ী যার শাস্তি পাচারকৃত অর্থ বাজেয়াপ্ত করা এবং তার দ্বিগুণ জরিমানা এবং ১২ বছর পর্যন্ত কারাদণ্ড নির্ধারিত রয়েছে। এ সুযোগ অর্থপাচার তথা সার্বিকভাবে দুর্নীতিকে উৎসাহিত করবে, যা সংবিধান পরিপন্থি এবং প্রধানমন্ত্রীর ‘দুর্নীতির বিরুদ্ধে শূন্য সহনশীলতা’ ঘোষণার অবমাননাকর।”

টিআইবির নির্বাহী পরিচালক বলেন, “বিদেশে অর্জিত অর্থ ও সম্পদ দেশের অর্থনীতির মূলধারায় সংযুক্তির মাধ্যমে বৈদেশিক মুদ্রার প্রবাহ ও আয়কর রাজস্ব বৃদ্ধির প্রত্যাশা করা হচ্ছে। কিন্তু আমাদের অতীত অভিজ্ঞতা বলে, বারবার সুযোগ দিয়েও দেশের অর্থনীতিতে কালো টাকা সাদা করার সুযোগ প্রত্যাশিত ফল বয়ে আনেনি। সরকারও আকাঙ্ক্ষিত রাজস্ব পায়নি। তাই নতুন এ বিশেষ বিধানের উদ্দেশ্য ব্যর্থ হবে তা না বললেও চলে। কারণ, যারা অর্থপাচার করেছেন তারা এ ধরনের প্রণোদনায় উৎসাহিত হয়ে পাচারকৃত অর্থ ফেরত নিয়ে আসবে, এরকম দিবাস্বপ্নের কোনো ভিত্তি নেই।”

তিনি আরও বলেন, “এর মাধ্যমে দুর্নীতিবাজ ও অর্থপাচারকারীরাই শুধু স্বস্তি বোধ করবেন, পুলকিত হবেন। অর্থপাচারকে এভাবে লাইসেন্স দেওয়া হলে দেশে দুর্নীতি ও অর্থপাচার আরও বিস্তৃতি ও গভীরতা লাভ করবে। এ অন্যায়, অপরিণামদর্শী ও আত্মঘাতী পথ থেকে সরে আসার জন্য আমরা সরকারের প্রতি আহ্বান জানাই।”

প্রস্তাবিত বাজেটের মন্তব্য করে ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, “অর্থমন্ত্রী আমদানি মূল্যস্ফীতির চাপ, ডলারের বিপরীতে টাকার মান ধরে রাখা, আমদানি ব্যয় বেড়ে গিয়ে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ কমতে থাকার মতো বিদ্যমান অর্থনৈতিক সংকটগুলোকে স্বীকার করলেও এগুলোকে মোকাবিলায় কার্যকর কৌশল বা পথনির্দেশিকা দিতে পারেননি।”

Link copied!