রাজধানীতে শনিবার (৬ আগস্ট) সকাল থেকে তীব্র পরিবহন সংকট। শুক্রবার (৫ আগস্ট) রাতে সরকার জ্বালানি তেলের দাম বৃদ্ধির ঘোষণা দেওয়ায় এ অবস্থার সৃষ্টি হয় বলে মনে করছেন যাত্রীরা। এর সঙ্গে সকালে বাড়তি ভোগান্তি যুক্ত হয় বৃষ্টির কারণে।
শনিবার সকাল থেকে রাজধানীর রায়েরবাগ, শনির আখড়া, কাজলা, যাত্রাবাড়ী, রামপুরা ব্রিজ, পল্টন, প্রেসক্লাব, শাহবাগ, কারওয়ান বাজার ও ফার্মগেট এলাকায় গণপরিবহন খুব অল্প পরিমাণে দেখা যায়।
সকালে রাজধানীর ফার্মগেটে শত শত মানুষ দাঁড়িয়ে ছিলেন বাসের অপেক্ষায়। দীর্ঘক্ষণ অপেক্ষার পর বাস এলেও সেটিতে ওঠার আশায় ছুটছিলেন অনেকেই।
বাসের অপেক্ষায় থাকা আশিক মিয়া বলেন, “একটি বেসরকারি কোম্পানিতে চাকরি করি। শনিবার আমাদের ছুটি থাকে না। অফিসে যাওয়ার জন্য ফার্মগেটে এসে দেখি বাস নেই।
রামপুরা ব্রিজে আধা ঘণ্টা দাঁড়িয়ে থেকে কোনো বাসে উঠতে পারেননি নাজমুন নাহার নামের এক বেসরকারি চাকরিজীবী।
তিনি বলেন, “আজকে ভিক্টর, তুরাগ বাস রাস্তায় একদম কম। দু-একটা আসছে। তাতে আর ওঠার উপায় নেই।”
রামপুরা জোনে দায়িত্বে থাকা সার্জেন্ট এনামুল হক শিপন বলেন, “জ্বালানির দাম বাড়ানোর সরকারি ঘোষণার পর শুক্রবার রাত থেকেই রাজধানীতে গণপরিবহন কমে গেছে। আজ সকাল থেকে অনেক যাত্রী অপেক্ষা করেও বাস পাচ্ছেন না। বেশ কয়েকটি কোম্পানির বাস দেখা যাচ্ছে না। আবার কিছু কোম্পানির বাস চলছে, তবে সংখ্যায় কম।”
জ্বালানি তেলের দাম বৃদ্ধির প্রসঙ্গে শনিবার বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতির মহাসচিব মোজাম্মেল হক চৌধুরী বলেন, “জ্বালানি তেলের দাম এক লাফে প্রায় ৫০ শতাংশের কাছাকাছির বাড়ানোর ফলে শিল্প উৎপাদন ব্যাহত হবে। ফলে আমদানির ওপর নির্ভরশীলতা বাড়বে।”
পরিবহন খাতে অস্থিরতা দেখা দেবে উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন, “পরিবহন ব্যয় দ্বিগুণ হওয়ার পাশাপাশি নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যমূল্য সাধারণ মানুষের সামর্থ্যের বাইরে চলে যাবে।”
প্রতিযোগিতায় টিকতে না পেরে অনেক ছোট ছোট শিল্প-কলকারখানা বন্ধ হয়ে যাবে বলে শঙ্কা প্রকাশ করেন তিনি।
অর্থনীতির বিষয়টি উল্লেখ করে যাত্রী কল্যাণ সমিতির মহাসচিব আরও বলেন, “আমদানি ব্যয় বৃদ্ধির মধ্য দিয়ে জাতীয় অর্থনীতি ওপর চাপ আরও বাড়বে। অন্যদিকে বেকারত্ব সমস্যা আরও প্রকট হবে।”
মোজাম্মেল হক চৌধুরী আরও বলেন, “আমাদের দেশে সাধারণত তেলের দাম যে পরিমাণ বাড়ে তার থেকে কয়েক গুণ বেশি বাড়ে বাস ও অন্যান্য গণপরিবহন ভাড়া। পণ্য পরিবহন ভাড়াও ইচ্ছেমতো বাড়িয়ে দেন ট্রাক-কভার্ড ভ্যান মালিকেরা।