জ্বালানি তেলের মূল্য বৃদ্ধির প্রতিবাদে রোববার শাহবাগে প্রগতিশীল ছাত্র সংগঠন সমূহের বিক্ষোভ সমাবেশে ছাত্রদের ওপর হামলা করে পুলিশ। এতে ২০ জন আহত হন। এর মধ্যে একজনের অবস্থা গুরুতর বলে জানা গেছে।
সোমবার (৮ আগস্ট) পুলিশ ছাত্র ইউনিয়নের সহসভাপতি অনিক রায়, গণতান্ত্রিক ছাত্র কাউন্সিলের সভাপতি আরিফ মঈনুদ্দীন, ছাত্র ফেডারেশনের সভাপতি মশিউর রহমান খান রিচার্ড, বিপ্লবী ছাত্র মৈত্রীর সভাপতি সাদেকুল ইসলাম সোহেল, পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের সভাপতি সুনয়ন চাকমা, বিপ্লবী ছাত্র-যুব আন্দোলনের সভাপতি তৌফিকা প্রিয়া, সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্টের (মার্ক্সবাদী) ভারপ্রাপ্ত সভাপতি জয়দ্বীপ ভট্টাচার্য ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সাবেক সভাপতি সালমান সিদ্দিকীসহ প্রগতিশীল ছাত্রসংগঠনসমূহের ২১ নেতা-কর্মীর নাম উল্লেখ করে এবং অজ্ঞাত ২০-৩০ জনকে আসামি করে শাহবাগ থানায় মামলা করেছে।
গণতান্ত্রিক ছাত্র কাউন্সিলের কেন্দ্রীয় সভাপতি আরিফ মঈনুদ্দিন ও সাধারণ সম্পাদক উজ্জ্বল বিশ্বাস এক যুক্ত বিবৃতিতে পুলিশের এই ফ্যাসিস্ট আচরণের নিন্দা জানিয়ে বলেন, সরকার একদিকে জ্বালানি তেলসহ নিত্য প্রয়োজনীয় সামগ্রীর দাম বাড়াচ্ছে, অপরদিকে এই দুর্বিষহ পরিস্থিতিতে যখন দেশের সাধারণ মানুষ ও ছাত্ররা কথা বলছে, আন্দোলন করছে, তখন সেই আন্দোলন দমনে লেলিয়ে দিচ্ছে তার পেটোয়া বাহিনী।
বিবৃতিতে বলা হয়, এই বছরেই দুইবার জ্বালানি তেলের মূল্য বৃদ্ধি পেয়েছে। বিশ্ব বাজারে তেলের মূল্য যখন পড়তির দিকে তখন সরকার আমাদের দেশে রেকর্ড পরিমাণ তেলের মূল্য বাড়ালো। ভারতের তেল পাচার, আইএমএফের ঋণ, রাশিয়া ইউক্রেনের যুদ্ধের অজুহাত দেখিয়ে তেলের দাম বাড়ালেও আসল কথা হচ্ছে দেশের রিজার্ভ খালি। এমতাবস্থায় ভর্তুকি প্রত্যাহার ছাড়া সরকারের উপায় নাই। দেশের মেগা প্রকল্প থেকে যে মেগা লুটপাট হয়েছে তার ভার এখন বহন করতে হচ্ছে জনগণকে। সামনে বিদ্যুৎ, পানি, ভোজ্য তেলের দাম বাড়ার ইঙ্গিত দিচ্ছে ইতোমধ্যে। এরূপ সংকটে জনগণের যখন নাভিশ্বাস অবস্থা তখন সরকার জানে যে এই বিক্ষুব্ধ জনগণ তার জন্য কতটা ভয়াবহ পরিণতি নিয়ে আসতে পারে। তাই সকল আন্দোলনের টুঁটি চেপে ধরতে তৎপর হচ্ছে পুলিশ বাহিনী।
নেতৃবৃন্দ আরও বলেন, বিগত সময়েও ছাত্রদের গণতান্ত্রিক আন্দোলনে পুলিশ সরকারের পক্ষ হয়ে আন্দোলন দমন করেছে। কিন্তু ছাত্ররা দ্বিগুণ শক্তিতে রাজপথে পড়ে থেকে তাদের দাবি আদায় করেছে। তাই এবারেও এই ফ্যাসিবাদী সরকার ও তার পুলিশ বাহিনী হামলা,মামলার ভয় দেখিয়ে ছাত্রসমাজকে রাজপথ ছাড়া করা যাবে না।
বিবৃতিতে অবিলম্বে মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার করে জ্বালানি তেলের মূল্য বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত বাতিল না হওয়া পর্যন্ত ছাত্র জনতার সংগ্রাম চালিয়ে যাওয়ার আহবান জানানো হয়।