বাজারে ডলারের দাম যেন কমছেই না। এর বিপরীতে কমছে টাকার মান। দেশের ইতিহাসে এর আগে কখনো ডলারের দর এতো বেড়ে ওঠেনি।
মঙ্গলবার (২৬ জুলাই) খোলাবাজারে ডলারের দাম ১১২ টাকা ওঠেছে। তবে, কোথাও কোথাও কিছু কম-বেশি দেখা গেছে। এসময় ব্যাংকগুলোতে ডলার ১০২ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। যা সোমবার (২৫ জুলাই) ছিল ৯৪.৭০ টাকা দরে এবং খোলাবাজারে ছিল ১০৭ টাকা।
রাজধানীর দিলকুশা, মতিঝিল, পল্টন এলাকায় মানি এক্সচেঞ্জগুলো থেকে এমন তথ্য জানা গেছে।
বাজারে দেখা গেছে, ডলারের সরবরাহ কম থাকায় তারা ক্রেতাদের চাহিদা অনুযায়ী বিক্রি করতে পারছে না। আর সংকটের কারণে কেউ কেউ ব্যাংক থেকে তুলনামূলক কম দামে নিতে ক্রেতাদের পরামর্শ দিচ্ছেন। ডলার সরবরাহ কম থাকায় দর বাড়ছে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
২০২০ সালের জুলাই থেকে গত বছরের আগস্ট পর্যন্ত আন্তঃব্যাংক মুদ্রাবাজারে ডলারের দাম ৮৪ টাকা ৮০ পয়সায় স্থিতিশীল ছিল। কিন্তু এরপর থেকে বড় ধরনের আমদানি ব্যয় পরিশোধ করতে গিয়ে ডলার সংকট শুরু হয়। যা এখন পর্যন্ত অব্যাহত আছে।
২০২১ সালের আগস্টের শুরুতেও আন্তঃব্যাংকে প্রতি ডলারের মূল্য একই ছিল। ৩ আগস্ট থেকে দু-এক পয়সা করে বাড়তে বাড়তে গত বছরের ২২ আগস্ট প্রথমবারের মতো ডলারের দাম ৮৫ টাকা ছাড়ায়।
অপরদিকে, গত ৬ জানুয়ারি পর্যন্ত আন্তঃব্যাংক মুদ্রাবাজারে প্রতি ডলার কেনাবেচা হয়েছিল ৮৫ টাকা ৮০ পয়সা। যা ৯ জানুয়ারি বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৮৬ টাকা। গত ২৩ মার্চ তা বেড়ে ৮৬ টাকা ২০ পয়সায় বেচাকেনা হয়। এরপর কয়েক দফা ডলারের দাম বাড়ে। পরে সংকট নিরসনে বাংলাদেশ ফরেন এক্সচেঞ্জ ডিলারস অ্যাসোসিয়েশন (বাফেদা) এবং ব্যাংকের শীর্ষ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের সংগঠন অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকার্স, বাংলাদেশের (এবিবি) দাবির পরিপ্রেক্ষিতে গত ২৯ মে বাংলাদেশ ব্যাংক আন্তঃব্যাংক মুদ্রাবাজারে ডলারের দাম ৮৯ টাকা বেঁধে দেয়। আর আমদানিকারকদের কাছে বিক্রির জন্য বিসি সেলিং রেট নির্ধারণ করা হয় ৮৯ টাকা ১৫ পয়সা।
যদিও ব্যাংকগুলো আন্তঃব্যাংক লেনদেনে প্রতি ডলারের বিনিময় মূল্য ৮৯ টাকা ৮০ পয়সার প্রস্তাব করেছিল। কিন্তু তাতেও বাজার স্থিতিশীল না হওয়ায় ডলারের এক রেট উঠিয়ে দিয়ে গত ২ জুন আরও ৯০ পয়সা বাড়িয়ে ৮৯ টাকা ৯০ পয়সা নির্ধারণ করা হয়।
এরপর আবারও কয়েক দফা দাম বাড়ে। গত ২১ জুলাই ডলারের দাম বেড়ে দাঁড়ায় ৯৪.৪৫ টাকা। সোমবার আন্তঃব্যাংকে ডলার লেনদেন হয়েছে ৯৪.৭০ টাকায়। যা ডলারের দামের সর্বোচ্চ রেকর্ড।