‘করোনায় ক্ষতিগ্রস্ত বিশ্বের ১৭ কোটি শিক্ষার্থী’


সংবাদ প্রকাশ ডেস্ক
প্রকাশিত: আগস্ট ২৫, ২০২১, ১০:১১ পিএম
‘করোনায় ক্ষতিগ্রস্ত বিশ্বের ১৭ কোটি শিক্ষার্থী’

করোনাকালীন সময়ে দীর্ঘদিন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় বিশ্বের ১৬ কোটি ৮০ লাখ শিক্ষার্থী ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। প্রথমবার স্কুলে যাবে বিশ্বের এমন প্রায় ১৪ কোটি শিশুর পাঠচক্রে ঢোকার সুযোগ পিছিয়ে যাচ্ছে, যাদের প্রায় ৪০ লাখ শিশু বাংলাদেশের।

মঙ্গলবার (২৫ আগস্ট) জাতিসংঘের শিশু তহবিলের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত ওই প্রতিবেদনে এ তথ্য প্রকাশ করা হয়।

প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, “যত বেশি সময় শিশুরা স্কুলের বাইরে থাকবে- সহিংসতা, শিশুশ্রম ও বাল্যবিয়ের ঝুঁকির কারণে তাদের স্কুলে ফেরার সম্ভাবনা তত কমে যাবে। ইউনিসেফ দ্রুত স্কুলগুলো খুলে দিতে এবং শিক্ষার্থীদের পড়াশোনার ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে সহায়তার জন্য বিস্তৃত পরিসরে পদক্ষেপ নিতে সরকারগুলোর প্রতি আহ্বান জানিয়েছে। মহামারী শুরুর পর বিশ্বের ১৬ কোটি ৮০ লাখ শিক্ষার্থীর জন্য স্কুলগুলো প্রায় পুরো বছর বন্ধ ছিল। ফলে অনেক শিশুকে ঝরে পড়ার উচ্চ ঝুঁকি, শিশুশ্রম ও বাল্যবিয়ের মতো পরিণাম ভোগ করতে হবে।
বিশ্ব ব্যাংকের বরাদ দিয়ে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, সমাধানমূলক পদক্ষেপ বাস্তবায়ন করা না হলে এই পুরো প্রজন্মের শিক্ষার্থীদের ভবিষ্যৎ আয়ের ক্ষেত্রে যে পরিমাণ ক্ষতি হবে তা প্রায় ১০ ট্রিলিয়ন ডলারের সমপরিমাণ।”

বাংলাদেশে ইউনিসেফের প্রতিনিধি টোমো হোযুমি বলেছেন, “দীর্ঘ সময় সরাসরি পাঠদান বন্ধ থাকলে পড়াশোনার পাশাপাশি শিশুদের স্বাস্থ্য, সুরক্ষা ও মনস্তাত্ত্বিক সুস্থতার উপর ‘অত্যন্ত গুরুতর প্রভাব ফেলে’। প্রান্তিক শিশুরা সবচেয়ে বেশি ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছে, যা তাদেরকে অধিক দারিদ্র্য এবং অসমতার দিকে ঠেলে দিচ্ছে এবং ভবিষ্যতেও দেবে।”

নিরাপদে স্কুল পুনরায় খুলে দেওয়া এবং সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্তদের পড়াশোনার ক্ষতি পুষিয়ে নিতে বিনিয়োগ করাকে অগ্রাধিকার দেওয়া আমাদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করেন টোমো হোযুমি। 

সরাসরি পাঠদান বন্ধ থাকলেও সরকার অনলাইন ও টেলিভিশনে শিক্ষা কার্যক্রম সচল রাখার চেষ্টা চালাচ্ছে। তবে ইন্টারনেট ও ডিভাইস না থাকায় অনেক শিক্ষার্থী যে এর বাইরে থাকছে, সেটি বিভিন্ন জরিপে উঠে এসেছে।

প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, “বিশ্বব্যাপী দেশগুলো দূরশিক্ষণ পদ্ধতিতে শিক্ষা প্রদানের জন্য কিছু পদক্ষেপ নিলেও প্রাথমিক শিক্ষার্থীদের কমপক্ষে ২৯ শতাংশের কাছে এই শিক্ষা পৌঁছানো যাচ্ছে না। উপকরণের ঘাটতি, সর্বকনিষ্ঠ শিশুদের প্রযুক্তি ব্যবহারের সহায়তা এবং শিক্ষার জন্য মানসম্পন্ন পরিবেশের অভাব, গৃহস্থালির কাজ করার চাপ অথবা কাজ করতে বাধ্য হওয়া এর কারণ হতে পারে।”

বিশ্ব ব্যাংক ও ইউনেস্কোর সঙ্গে মিলে ইউনিসেফ স্কুলগুলো আগের অবস্থায় ফিরিয়ে আনার জন্য তিনটি অগ্রাধিকারের প্রতি মনোযোগ দিতে বলছে সরকারগুলোকে।

তা হলো- সব শিশু এবং তরুণদের স্কুলে ফিরিয়ে আনতে সুনির্দিষ্ট লক্ষ্যভিত্তিক কর্মসূচি প্রণয়ন করা, শিক্ষার্থীদের লেখাপড়ার ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে সহায়তা করতে কার্যকর প্রতিকারমূলক শিক্ষার ব্যবস্থা করা এবং শিক্ষার ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে ও শিক্ষাদান প্রক্রিয়ায় ডিজিটাল প্রযুক্তি অন্তর্ভুক্ত করার জন্য শিক্ষকদের সহায়তা দেওয়া।


 

Link copied!